সুখ শব্দটা কি পজিটিভ? সুখের আবহে যারা বাস করেন তারা কি স্বার্থপর? এটা যদি নেগেটিভ শব্দ হয়, তবে এর বিপরীতে কোন্ শব্দটি বেশি মানায়?
সুখ মাপার কোন ম্যাকানিজম আছে কি? এমন কোন নির্দেশক কি পাওয়া যাবে যা দিয়ে কোন দুইজন মানুষের সুখের তারতম্য মাপা যায়? সুখের সর্বোচ্চ চূড়া কোথায়, সর্বনিম্ন স্তরই বা কেমন? মানুষ কি এটাকে পেয়ে খুশি হয়, নাকি এটাই তার দুখের জন্য যথেষ্ট। এসব প্রশ্নের উত্তর কি হবে তা নিয়ে ডিবেট হলেও মানুষ যে সুখ খুঁজতে থাকে তাতে বোধহয় কোন দ্বিমত নেই।
কল্যাণ (হাসানা) শব্দটাকে আমরা সুখের প্রতিশব্দ হিসাবে ধরতে পারি। সোজা কথায় বলতে গেলে, ভাল থাকতে চাই..... কোরআন তার অনুসারীদেরকে এভাবে দোয়া করতে বলছে, "হে আমাদের রব, এই দুনিয়ায়ও কল্যাণ দান করো এবং পরকালেও আমাদেরকে কল্যাণ দাও, আর আগুনের আযাব থেকে আমাদের রক্ষা করো।" (সুরা বাকারা)
সন্দেহ নেই, কল্যান বা সুখের সন্ধান কেবলমাত্র সুখের স্রষ্টার তরফ থেকে এবং তাঁর দেখানো পদ্ধতি অনুসারেই আসতে পারে। দ্বিতীয় কোন পথ নেই, থাকার কথাও নয়।
ইসলাম কিভাবে সুখের উৎস হত পারে? একদিকে ইসলামের তাকদীরে বিশ্বাস (যেটাকে ইসলাম বিশ্বাসের অন্যতম একটি ফান্ডামেন্টাল পয়েন্ট হিসাবে উল্লেখ করেছে), অন্যদিকে অনুসারীদের উপর অর্পিত অনিবার্য দায়িত্ব তাকে এনে দিয়েছে শান্তির সৌন্দর্য। অর্থাৎ, একজন মুসলিম কাজের সাফল্যে সন্তুষ্ট হয় (আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে) আর ব্যর্থতায় হতাশ হয়না। দায়িত্ব পালনের স্বার্থে ব্যর্থতার পর্যালোচনা করে আবার তাকে সামনের দিকে পথ চলতে হয়। অপরদিকে, ইসলাম কারও উপরেই তার সামর্থের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেয় না। (সুরা বাকারা)
ইসলাম সত্য-মিথ্যার সুস্পষ্ট সীমারেখা দিয়ে দেয়। মিথ্যার আবরণে সত্যকে সন্দেহযুক্ত করে তোলা অপরাধ। স্রষ্টা পষ্ট করেই জানিয়ে দেন যে, মিথ্যা টিকে থাকার বস্তু নয়, সত্য শীঘ্রই উদঘাটিত হবে। অনুসারীদের খুব ভাল করেই জানা হয়ে যায় মিথ্যা বলার মাধ্যমে সে আসলে লাভের কোন বস্তু অর্জন করে না, বরং এই মিথ্যা তার জীবনকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলে।
সন্দেহ নেই, সত্যপন্থীরা অনেক সাহসী হন। স্রষ্টার ক্ষমতার ধারে কাছে কারও অবস্থান হতে পারে এই বোধটিই তার মধ্যে তৈরি হয় না।
এইসব সুখী মানুষদের চাওয়ার একটি সুন্দর জায়গা থাকে, যেখান থেকে সে কখনও নিরাশ হয় না।
সুখের আরও একটা উপাদান হলো বিশ্বস্ত হওয়া। কেউ একজন যখন সকলের আস্থাভাজন হয়, তখন সে সুখের স্বাদ অনুভব করতে পারে।
বড়-ছোট সব ব্যাপারেই কল্যাণকর ব্যাপারগুলোকে সে সহজেই চিনে নিতে পারে।
সে যখন বিনম্র চিত্তে অসীম ক্ষমতাধর স্রষ্টার সান্নিধ্যে প্রার্থনায় রত হয়, শান্তির অমিয় সুধা উপলব্ধি করতে পারে ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৩৪