আমাদের সম্পর্কের শুরু হয় মোহ থেকে। মানুষ যখন প্রেমে পড়ে সে সময়টাকে বলা হয় ‘ক্লাউড নাইন’
পুরো জগতটা এক ধরনের সুখের ঘোর। যে কোন ভাবেই হোক তাকে পেতেই হবে। এক ধরনের জয় করার ব্যাপার চলে আসে। অথচ ভালবাসা কোন জয় করার বিষয় না। যেটা আসার সেটা এমনিতেই আসে।
রবীন্দ্রনাথের '
ঘরে বাইরে' যারা পড়েছেন তাদের এই বিষয়টি জানার কথা।
রাজ্য জয় করতে হয় সৈন্য দিয়ে; ভালবাসা জয় করতে হয় মুগ্ধতা দিয়ে। সারাক্ষণ তাকে মুগ্ধ করার ব্যাপারটা এখান থেকেই আসে।
সুখের ‘ঘোর’ থেকে মানুষ বানাতে চায় সুখের ‘ঘর’
একটা দো’ তলা বাড়ি হবে। তিন তলা না। বাড়ির সামনে ফুলের বাগান হবে। শাকসবজির না।
ছাদে সুইমিংপুল থাকবে। বাস্তবে সেরকম কিছুই ঘটে না। ছাদে হলদে পেটিকোট ঝুলে।
প্রেমে পড়ার বিভিন্ন স্তর আছে। এক পর্যায় এসে সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়। বাতি বন্ধ করে একি গান বার বার শোনা। একা একা তার সাথে কথা বলা। একটা এসএমএস দশ বার পড়ার পরেও মনে হবে কী যেন বাদ গেছে... আবার পড়ি।
পুরো ব্যাপারটি ঘটে ডোপামাইন নামে এক ধরনের স্নায়ুকোষের কারণে। কিছু কিছু মনোবিজ্ঞানী বলে আসছে -
প্রেমে পড়াটা এক ধরনের নেশায় আসক্ত হওয়ার মতো। বিভিন্ন ড্রাগ নিলে এই স্নায়ুকোষ যেমন সাড়া দেয়, প্রেমের অনুভতিতেও ঠিক একইভাবে সাড়া দেয়।
নেশাখোরের ঘোর এক সময় কেটে যায়। পুনরায় নেশা করার জন্য তাকে আবার নেশা করতে হয়।
কিন্তু প্রেমিকের ঘোর কেটে যাবার পর সে পুনরায় নেশা করার সুযোগ পায়না। কেননা সে ইতিমধ্যে রাজ্য জয় করে ফেলেছে। নতুন করে তার আর পাবার কিছু নেই!
হমম! এই খানেই ঝামেলাটা লাগে। যে মুহূর্ত থেকে তার পাবার কিছু থাকে না সেই মুহূর্ত থেকেই আসলে সে সব কিছু হারাতে শুরু করে। মোহ কেটে যায়।
মোহ থেকে জন্ম নেয়া প্রেম স্থায়ী হয় না। আমি শয়তানকে বিশ্বাস করতে বলব তবে মোহ কে না।
মোহ একসময় নিজেকেও চিনে না।
মোহের সব থেকে বড় পরিচয় হল - এর কোন পরিচয় নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১৪ সকাল ৯:১৭