এতো বছর পর আজকের দিনেই তার সাথে দেখা হওয়া লাগল? ভাবিনি সম্ভব হবে কোনদিন ।
দেখো না কতো ভদ্র ছেলের মতো বসে আছেন জনাব। আহারে, যেনো ভাজা মাছটি উলটে খেতে পারেন না। ঐ দিকে তাকিয়ে একমনে কি যেন ভেবেই চলেছে।
আচ্ছা, সে কি আসলেই আমাকে দেখতে পায়নি? নিশ্চয়ই ভুলে গিয়েছে, তার তো আবার বন্ধুর অভাব নেই।
আগের চেয়ে একটু মোটা হয়েছে মনে হচ্ছে। খোঁচাখোঁচা দাঁড়ি রাখার অভ্যাসটা আর গেলো না।
বাহ, জনাব দেখি চশমার ফ্রেমটাও পালটে ফেলেছে। হাতের ঘড়িটাও চেঞ্জ হয়েছে। ভালো তো , আমি আর আমার সবকিছু ভুলে ফেলা হয়েছে খুব সযত্নে তাই না?
একেতো কাঠফাটা রোদ তার উপর আবার রাইফেলস স্কয়ারের সেই বিখ্যাত ট্র্যাফিক জ্যাম, উফ আর ভালো লাগছে না। ইচ্ছে করছে হেঁটেই জিগাতলা চলে যাই।
যাক বাবা, এতক্ষণে সামনের গাড়িগুলো চলতে শুরু করেছে।
রিকশাটা ক্রস করে যাওয়ার সময় আচমকাই বলে উঠলো, এই তোমার ওড়নাটা টেনে ঠিক করে বসো। একটা এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে তো।
এমনতো হওয়ার কথা না। আজ এতোটা বছর পর কেউ বললো ওড়না ঠিক করে বসতে। এখনো সে মনে রেখেছে আমার ছোট্ট ছোট্ট ভুলগুলোর কথা ! অথচ পাশে বসা লোকটির সাথে এতোদিন এক ছাদের নিচে থাকার পরও তার একাংশও সে মনে রাখে না।
কেমন যেনো একটা খুচরো ব্যথা বুকে নিয়ে সামনে তাকালাম। কিছু বুঝে উঠার আগেই সে চলে গেলো। আরো একবার হারিয়ে গেলো এই ব্যস্ত শহরে।
'আমাদের গেছে যে দিন
একেবারেই কি গেছে -কিছুই কি নেই বাকি?'
একটুকু রইলেম চুপ করে ; তার পর বললেম ,
'রাতের সব তারাই আছে
দিনের আলোর গভীরে' । - হঠাৎ দেখাঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২