ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে খুশি হওয়ার কিছু নেই।
একটা যায়, আরেকটা আসে। এখন আছে, ছাত্রদল। তারা দল বেধে মহড়া দিতে শুরু করেছে। শিবির তাদের উপস্থিতি জানান দিয়ে ফেলেছে। ছাত্রলীগ যেমন ভয়ংকর, সেরকম ভয়ংকর ছাত্রদল আর শিবির। কাজেই বিনা দ্বিধায় বলা যায়, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল আর শিবির সব এক। ওদের কর্মকাণ্ড সব এক। ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী করবে। নেতাদের দালালি করবে। অল্প বয়সে গাড়ি বাড়ি করবে। বাংলাদেশে ছাত্র সংগঠন গুলো সব একই রকম। তাদের ইতিহাসও প্রায় একই রকম।
আগামীতে দেশে রাজত্ব করবে ছাত্রদল অথবা শিবির।
এরা দিনে দুপুরে মানুষ কুপিয়ে মারবে। চাদাবাজি করবে। ক্যাম্পাসে ত্রাস সৃষ্টি করবে। রাস্তায় বিশ্রী ভাবে বাইক চালাবে। সাধারণ মানুষের সাথে অন্যায় করবে। দূর্নীতি করবে। ফ্লাট কিনবে। সব জায়গায় দাপট দেখাবে। মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করবে। ধর্ষণ করবে। নেতাদের পা চাটবে। মিছিল করবে। সমাবেশে ফুটপাতের হকারদের ধরে আনবে। ফালতু উৎসব করবে। ক্যাম্পাসে তাদের নিজস্ব রুম থাকবে। সেই ঘরে বসে মদ খাবে। মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করবে। দীর্ঘদিন বিএনপি কোমর সোজা করে দাড়াতে পারেনি। আওয়ামী লীগ কঠিন টাইট দিয়ে রেখেছিল। এখন তারা মুক্ত। অলরেডি কারাগার থেকে সকলে ছাড়া পেয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের লোকজন কারাগারে বন্ধী হচ্ছে। শেখ হাসিনার কোনো আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না।
টানা পনের বছর ছাত্রলীগ রাজত্ব করেছে। গলাবাজি করেছে।
টেন্ডার বাজি করেছে। ছাত্রলীগের নেতারা সীমাহীন টাকা কামিয়েছে। মদ আর নারী নিয়ে ফুর্তি করেছে। সব কিছুর একটা শেষ আছে। ছাত্রলীগ এখন নাই। সব পলাতক। এখন সময় ছাত্রদল আর শিবিরের। টানা পনের বছর ছাত্রদল আর শিবির গর্তে ছিলো। এখন ছাত্রলীগ গর্তে। আবার ৫/১০ বছর পরে ছাত্রদল/ শিবির গর্তে যাবে। ছাত্রলীগ এখন বলিবে ভালোই আছি গর্তে। বের হবো কি মরতে? পাপ করলে, অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবেই। গত পনের বছরে ছাত্রলীগ কি করেছে? ১৫ বছরে তাদের একটাও ভালো কাজ খুজে পাওয়া যাবে না। শুধু ছাত্রলীগ না৷ যুবলীগ, তাতী লীগ, কৃষক লীগ। কারো কোনো ভালো কাজ খুজে পাওয়া যাবে না। তারা শুধু করেছে ধান্দা। সহজ সরল সত্য কথা হলো তারা ধান্দাবাজি করার জন্যই লীগের খাতায় নাম লিখিয়েছে। তাদের শাসন না করে শেখ হাসিনা শুধু আশকারা দিয়েছেন।
শেখ সাহেবের উচিৎ ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগকে অফ করে দেওয়া।
শেখ মুজিব সেটা করেন নাই। তার কন্যা হাসিনাও সেটা করে নাই। আজকে আওয়ামীলীগের এই অবস্থার জন্য অনেকাংশে ছাত্রলীগ দায়ী। ওরা খুব বেশি উজায় ছিলো। আসলে প্রকৃতি কাউকে ক্ষমা করে না। পুরো আওয়ামিলীগ তাদের পাপের শাস্তি পাচ্ছে। গত পনের বছর বিএনপি তাদের পাপের শাস্তি পেলো। এখন যদি বিএনপি আওয়ামী লীগ থেকে শিক্ষা না নেয়, তাহলে ৫/১০ বছর আওয়ামিলীগের মতো অবস্থা হবে বিএনপির। আমাদের দেশের রাজনীতি বড় নোংরা। তাই ভালো মানুষেরা রাজনীতিতে আসে না। আজকে যারা উপদেষ্টা হয়েছে এবং সমস্ত সম্বয়করা ভবিষ্যতে জেলে যাবে। এটা বাংলাদেশের নিয়ম। ফালতু সব মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হবে। যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশে তাই হয়ে আসছে। রাজনীতি মানুষকে উচুতে নিয়ে যায়। আবার একদম পথে বসিয়ে দেয়। কাজেই রাজনীতি থেকে দূরে থাকাই উত্তম। সত্যিকার অর্থে দেশের জন্য ভালো কাজ করতে হলে রাজনীতিতে যোগ না দিয়েও ভালো কাজ করা যায়।
ছাত্রদের কাজ লেখাপড়া করা। রাজনীতি নয়।
যারা ছাত্র থাকা অবস্থায় রাজনীতি করে তারা মূলত টাকা আর ক্ষমতার জন্য রাজনীতির খাতায় নাম লেখায়। আমার নিজের দেখা দুটা ছেলের কথা বলি। রফিক ঢাকার এক কলেজে পড়ে। তারপর রাজনীতিতে প্রবেশ করে। ছাত্রলীগের রাজনীতি। কলেজের ভিপি হয়। তার জীবন বদলে যায়। কলেজে তার সুন্দর রুম আছে। রুমে এসি আছে। সুন্দর করে সাজানো রুম।প্রিন্সিপালের রুমও এত ঝাকঝমক নয়। দরিদ্র পরিবারের ছেলে রফিক। এক বছরের মধ্যে অনেক টাকার মালিক হয়ে যায়। পুরো কলেজ জুড়ে তার বড় বড় ছবি। মেট্রোরেলের পিলারে তার ছবি। সে যখন রাস্তা দিয়ে কোথাও যায়, তার পেছন পেছন ৪০/৫০ জন পোলাপান থাকে। রফিক গাড়ি করলো। জমি কিনলো। ব্যাংকে অনেক টাকা করলো। অথচ রফিক কোনো চাকরি করে না। চাকরি কি করবে তার লেখাপড়াই শেষ হয় নাই। যাইহোক, এক সময় তার লেখাপড়া শেষ হলো। কিন্তু সে কলেজ ছেড়ে গেলো না। একটা সংগঠন করলো। ছাত্রছাত্রী কল্যাণ পরিষদ। সেই কল্যাণ পরিষদের সে সভাপতি। সে তার দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে ইউরোপের সাতটা দেশ ভ্রমণ করলো।
মিজান। মিজান ছাত্রলীগে জয়েন করলো।
এক ওয়ার্ড কাউন্সিলের সাথে তার উঠাবসা শুরু করলো। কয়েক বছরের মধ্যে আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেলো। কয়েক বার বিদেশ ভ্রমণ করলো। এরপর ঢাকায় ফ্লাট কিনলো। একে একে নিজের মা ভাই আর বোনকে নিয়ে লন্ডন চলে গেলো। এখন বেশ আছে। উন্নত জীবন যাপন করছে। তার দল ডুবে গেছে, তাতে কোনো সমস্যা নেই। সে তো অনেক ভালো আছে। দেশে না ফিরলে তার কিছুই হবে না। আরেকটা ঘটনা বলি, ঘটনা চক্রে এক ছাত্রলীগের ঘটনা নিজের চোখ দেখলাম। সে একটা ফ্লাট কিনেছে। সেই ফ্লাটের জন্য নতুন ফার্নিচার কিনতে গিয়েছে। একসাথে সে ২২ লাখ টাকার ফার্নিচার কিনলো। একদম ক্যাশ টাকা দিয়ে। ছাত্রলীগ বলে কথা না। ছাত্রদলের পোলাপানও একই কাজ করে। করবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:০৬