একটা বছর হঠাত করেই অতীত হয়ে যাবে, নতুন একটা বছর আরো ৩৬৫ টা সুর্যোদয়ের আশ্বাস নিয়ে হাজির হবে। গত-আগতের এই খেলাকে ঘিরে কত আয়োজন! দেখতে ভালোই লাগে; চারপাশের উত্তেজনা, কিংবা নিরুত্তাপ থাকা নিয়ে দোটানা!
বছরকে নির্দিষ্ট একটা সময়ের দেয়ালে আটকে ফেলে কী হয়? কিছুই হয় না। আমার দিন তো ৩৬৫, ৩৬৬, ৩৬৭... এভাবে চলতেই থাকে। সবগুলো দিনই ভিন্ন কিংবা খুব বেশি রকম একই, একঘেয়ে। বছরকে ঘিরে তারা নতুনভাবে সাজে না। দিন তো আর বছরের হিসাব রাখে না! দিন দিনের মতোই চলে। আর এই একটা একটা দিনের চলে যাওয়া কিংবা একটু আধটু থমকে যাওয়া নিয়েই তো জীবন। তবে প্রতিটা দিনের এই একইভাবে চলে যাওয়া সবার ভালো লাগবে কেন? নতুন কোন উপায়, উদযাপনের মাধ্যমে দুই একটা দিন আলাদা করে নেয়া জরুরি হয়ে পড়ে। তখন সবাই স্মরণ করে বিশেষ বিশেষ দিনগুলোকে; খারাপ থেকে ভালো, ভালো থেকে আরো ভালো থাকার প্রত্যাশা নিয়ে। আর কিছু না।
তাছাড়া একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে পিছনের ফেলে আসা সময়টাকে একবারের জন্য দেখে নেয়ার ব্যাপারটা খারাপ না। কিছু স্মৃতি একসাথ করে নেড়েচেড়ে দেখার সময়টাই আমরা কখন পাই? এই ব্যাপারটাই কখনো করা হয় নাই। প্রয়োজন হয় নাই। এবারই প্রথম কিছু স্মৃতি স্পর্শ করে দেখতে ইচ্ছা হচ্ছে। অতি প্রিয় এবং কাছের একজন মানুষ, যাকে কখনো চোখের সামনে দেখা হয় নাই তাকে হারানোর স্মৃতি। যাকে কোন এক জগতে খুঁজে পেলে জিজ্ঞেস করতাম, এত সুন্দর করে কীভাবে লিখেন? মগজ দিয়ে লেখা যায় জানি, হৃদয় দিয়ে লিখতে শিখাবেন একটু? মগজ দিয়ে তো আর হৃদয় স্পর্শ করা যায় না। হৃদয়ের কথা হৃদয় দিয়েই শুনতে হয়। কীভাবে শুনতেন? বলবেন না!?
এরপর অনেকটা সামনে এগিয়ে এসে আরো কিছু স্মৃতি স্পর্শ করে দেখতাম সভয়-কৌতূহলে! এই স্মৃতি গোছানো জীবন এলোমেলো করা স্মৃতি, নাকি এলোমেলো জীবনকে গুছিয়ে আনা স্মৃতি, সেটা বুঝার জন্য থার্ড রেফারেন্স হিসেবে কারো মতামত পেলে ভালো হতো। তার আর দরকার নাই। আমিই ফার্স্ট থেকে থার্ড রেফারার হিসেবে সব দেখে যাই। আমি জীবন দেখি। জীবনের ভাঙা দেখি, গড়া দেখি। এক সময় ক্লান্ত হই, ঘুমিয়ে পড়ি। আজ আমি ঘুমাবো। বছরপারী দীর্ঘ সে নিদ্রা। ২০১২ সালে চোখ বন্ধ করবো, ২০১৩ সালে খুলবো। জহির রায়হানের হাজার বছরের পুরনো সেই রাতের মতোই একটা রাত বাড়ছে। হাজারো স্মৃতির ভারে নেমে আসছে পুরনো সেই ঘুম...!