আমার এক ছাত্রী রোড় এক্সিডেন্টে কয়েকদিন আগে মারা গেছে। মেয়েটা সবে মাত্র ExxonMobil থেকে তার ইডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিংশেষ করল; এটা ছিল তার ব্যাচেলর ডিগ্রী পাওয়ার শেষ ধাপ; আমি আর আমার এক কলিগ গিয়েছিলাম তার কাজ ইভালুয়েশন করতে। মেয়েটা খুব স্মার্ট আর ইন্টেলিজেন্ট; আমাদের মেইন গেইট থেকে এগিয়ে নিয়ে গেল, প্রেজেন্টেশন দিল, আবার গেইট পর্যন্ত এগিয়ে দিল। এর মাঝে কথায় কথায় জানতে পারলাম এই কোম্পানিতেই তার জব হচ্ছে। জীবনের প্রথম জব এত বড় একটা কোম্পানিতে!! কথা বলার সময় মেয়েটার চোখমুখ চকচক করছিল। আমরা যখন বিদায় নিব, মেয়েটা লাজুক হেসে বল্ল, Dr. May I know my grade? আমি বললাম, sorry, it is confidential, I should not tell you this; don't worry, you will get good grade. মেয়েটার মৃত্যু সংবাদ শোনার পর থেকে শেষ সময়ের সেই লাজুক মুখটা চোখের সামনে ভাসছে।
কয়েকদিন ক্যাম্পাসে ছিলাম না; রুমে এসে দেখি, অন্য সবার সাথে মেয়েটি ও তার থিসিস জমা দিয়ে গেছে...... ডিগ্রী পাওয়ার সব কাজ শেষ, এখন শুধু ফাইনাল রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা......।
এরপর কাঙ্ক্ষিত চাকুরীতে জয়েন...সবচ্ছলতা... মা-বাবার স্বপ্ন পুরণ... সুন্দর একটা সংসার...... । শুনেছি মেয়েটা তার বয়ফ্রেন্ডের গাড়ীতে করে যাচ্ছিল। কি জানি, আমার কাছে থিসিসটা জমা দিয়েই ফিরছিল কি না... ... আমার টেবিলে থিসিস টা পড়ে আছে, কেমন যেন জীবন্ত মনে হচ্ছে...... নিয়ম মেনে এই থিসিসের মার্কও আমাকে দিতে হবে। কিন্তু এই থিসিসের মালিক এখন সব ইভালুয়েশন এর উরধে চলে গেছে!!!
ঘটনা শোনার পর থেকে আমার বার বার মনে হচ্ছে... এত এত পড়াশুনা, গাদা গাদা সার্টিফিকেট, পিএইচডি ডিগ্রী, ক্যারিয়ার, জার্নাল পেপার, ইম্প্যাক্ট ফাক্টর, এক্সপেরিয়েন্স সার্টিফিকেট... ... ... সব এক সেকেন্ডের মধ্যে মুল্যহীন কাগজ হয়ে যেতে পারে!
সৃষ্টিকর্তা! মানুষের জীবন যখন দিয়েছ... মানুষের জন্য কিছু করার স্বপ্ন পুরনের আগে এভাবে ডাক দিওনা! আমীন !!!