আজকের দুনিয়ায় ফেসবুকে সামাজিক যোগাযোগই সব। বাস্তবে আপনার কোন ফ্রেন্ডো থাক বা না থাক, সামাজিক যোগাযোগের দুনিয়ায় শখানেক ফ্রেন্ডো থাকা রীতিমত স্ট্যাটাসের পর্যায়ে পড়ে। যারা জিন্দেগীতে ইন্টারনেটের ছায়াও মাড়ান না তাদেরও এখন দেখা যায় কথায় কথায় স্ট্যাটাস আপডেট করতে। আর এই সামাজিক যোগাযোগ করতে গিয়ে সবচেয়ে ঝামেলায় পড়েন যাদের ভার্চুয়াল দুনিয়াতে ফ্রেন্ডোর সংখ্যা নিতান্ত কম। তাই তারা নানাভাবে আউটসোর্সিংয়ের চেষ্টা করেন। এই যেমন অপরিচিত ফ্রেন্ডো যোগাড় করার চেষ্টা (বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়ে ফ্রেন্ডো) করেন। তবে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় সেই চেষ্টা সফল হয় না বললেই চলে। তাদের জন্যই এই অধমের সামাজিক যোগাযোগ টিউটোইয়াল লেখার অপচেষ্টা। তবে এটা শুধু ছেলেদের জন্য প্রযোজ্য। আমার মনে হয় না আমাদের দেশের সামাজিক অবস্থা এখনো এত খারাপ যে মেয়েদের জন্য সামাজিক যোগাযোগের টিউটোরিয়াল লিখতে হবে।
ফেসবুকে সবাই প্রথম এবং সবচেয়ে বড় ভুল করেন অপরিচিত মেয়েদের ফ্রেন্ডো রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে। এটা কখনোই করা যাবে না। কারণ যারা রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করে সেগুলো মূলত নকল প্রোফাইল আর যাদের জেনুইন প্রোফাইল তারা সাধারণত কখনোই অপরিচিত কারো রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করে না।
কিন্তু তাই বলে আপনার ফেসবুক প্রোফাইলে মেয়ে ফ্রেন্ডো থাকবে না তা কি করে হয়? আরে ভাই সেজন্যই তো এই টিউটোরিয়াল!!! আসেন দেখি কিভাবে ফেসবুকে মেয়ে ফ্রেন্ডো বাড়ানো যায়।
প্রথমে যা করবেন, নিজের প্রোফাইলের ওয়েট বাড়ান। আপনি আবুজর গিফারী কলেজে পড়েন কিংবা বুয়েটে, নিজের প্রোফাইলের ওয়েট বাড়ানোর কোন বিকল্প নাই। গানের ক্ষেত্রে সফট থেকে হার্ড মেটাল, মুভির ক্ষেত্রে ফালতু থেকে হাই থট আর নেট ঘেটে কিছু উচ্চমার্গীয় উক্তি দিয়ে নিজের প্রোফাইল ভরিয়ে তুলুন। নিজের চেহারা-সুরত ভাল হলে নিজের ছবিই প্রোফাইল ছবি হিসেবে দিন আর তা না হলে অন্য কোন লিজেন্ডারী ড্যাশিং চরিত্র (যেমন-প্রিন্স অফ পার্সিয়া) প্রোফাইল ছবি হিসেবে দিয়ে দিন।
আন্ডা-বাচ্চাকাল থেকে এখন পরিচিত সকল ছেলে ফ্রেন্ডোকে খুঁজে বের করেন এবং তাদের এড করেন। আপনার ইমেজ অত্যাধিক খারাপ না হলে ছেলেদের অন্তত আপনাকে এড করা উচিত। তবে খারাপ হলেও সমস্যা নেই। আবেগীয় কারণে হলেও আপনাকে অনেকে এড করবে।
এখন আপনার কাজ যারা আপনাকে এড করল তাদের ফ্রেন্ডো লিস্ট এবং স্ট্যাটাস পর্যালোচনা শুরু করা। কথা হচ্ছে কি দেখবেন? দেখবেন কার লিস্টে মেয়ে ফ্রেন্ডোর সংখ্যা বেশি কিংবা কার স্ট্যাটাসে মেয়ে ফ্রেন্ডোদের কমেন্ট অথবা লাইক বেশি পড়ে। এগুলো দেখে একটি শর্টলিস্ট তৈরি করুন।
এখন নিয়মিত সেসব ফ্রেন্ডদের স্ট্যাটাসে কমেন্ট করতে থাকুন। দরকার হোক বা না হোক, বুঝুন আর না বুঝুন কমেন্ট করতে থাকুন। এবং অতি অবশ্যই মেয়েদের কমেন্টে লাইক দিতে ভুলবেন না। উৎসাহ বেশি হলে মেয়েদের কমেন্টের পরে তাদের “ওয়েল সেইড” বলে দিয়ে আসতে পারেন। খেয়াল রাখুন কারা ভদ্রতার খাতিরে আপনাকে “থ্যাংকস” জানাচ্ছে কিংবা আপনার কমেন্টে “ওয়েল সেইড” বলছে। তবে ভুলেও সাথে সাথে ফ্রেন্ডো রিকোয়েস্ট পাঠাবেন না। এতে করে আপনার ইমেজ খারাপ হয়ে যেতে পারে। আর হ্যা, নিজে অবশ্যই মাঝে মাঝে ভুল বানানে উচ্চমার্গীয় কবিতা অথবা গান স্ট্যাটাস দিতে ভুলবেন না, মানে বুঝুন আর না বুঝুন। এছাড়াও নিয়মিত বিরক্তিকর ছবি আপলোড এবং তাতে চোদ্দ গুষ্টি ধরে ট্যাগ করতে ভুলবেন না। এটা আপনার পরিচিতি বাড়াতে সাহায্য করবে। আরো যা করতে পারেন প্রতিদিন নানা পেজ খুলে তাতে সবাইকে ইনভাইট করতে পারেন। এসব পেজ যারা লাইক করবে তারা আপনার হিটলিস্ট লম্বা করতে সাহায্য করবে। এভাবে কিছুদিন চলার পরে যারা আপনাকে নিয়মিত “ওয়েল সেইড” কিংবা “থ্যাংকস” বলে, তাদের রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দিন। তবে খুব বেশি সফলতা আশা করবেন না। তবে সফলতার হার যে একেবারে অপরিচিত কাউকে পাঠানোর চেয়ে বেশি হবে সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। এভাবে নিজের জাল বিস্তার করতে থাকুন আর অন্যদের বিরক্তি উৎপাদন করতে থাকুন। নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে গেলে একদিন না একদিন সফলতা আসবেই।
উৎসর্গ: যারা ফেসবুকে ছবি আপলোড করে গুষ্টিসুদ্ধা ট্যাগ করে, কামে-আকামে অপ্রয়োজনীয় কমেন্ট করে আর বন্ধু-বান্ধবের ফ্রেন্ডলিস্ট ধরে ধরে মেয়েদের রিকোয়েস্ট পাঠায় সেইসব ছাগলদের (ছাগু না কিন্তু!!!)। এ টিউটোরিয়াল লেখায় তাদের অবদান স্বীকার না করলেই নয়।