অনেক দিন পর ব্লগে ঢুইকা দেখি সবাই বিরাট সিরিয়াস... তাই আসেন একটা বাংলা ছিঃনেমা দেইখা মনডা কুল করি পুরা সামাজিক একসন পরিবারের সবাইরে নিয়া একলগে দেখার মত ছিঃনেমা।
/*সিনেমার শুরুতেই সুন্দরি সাস্থবতি নায়িকার লাফাইতে লাফাইতে আগমন। পাশেই ছিল ভিলেন সাথে তার সাঙ্গ-পাঙ্গ।*/
ভিলেনঃ হু হা হা হা আইজ তরে পাইছ সুন্দরি। আই কাছে আই একটু মাস্তি করি। হু হা হা হা ।
নাইকাঃ আমাকে যেতেদে ভিলেন, নাইলে তর খবরি আছে, এমন চিৎকার দিম বুঝবি তখন গনপিটানি কারে কয়।
ভিলেনঃ হে হে, এই ইস্ক্রিপ্টে গনপিটানির কোন সিন নাই । সো… অই তোরা তাকাইয়া দেখস কি ? ধর সুন্দরিরে ।
নাইকাঃ গনপিটানি নাই তো কি হইসে হিরুপিটানি তো আছে? এইবার দেখবি সেইডা কারে কয়? কে আছো বাচাউ… বাচাউ... ওই তগো বাড়িতে কি মা বোন নাই? ওরা দেখলে কি কইব ক?
ভিলেনঃ কি আর কইব? কইব ভাল হইছে, গুড সরট, পারফেক্ট সরট । আই কাছে আই।
নাইকাঃ না...বাচাউ... বাচাউ... (কি ব্যপার নাইয়ক আসে না ক্যে? হালাই ট্যলেটে ঢুকছে নাকি?)
/*শেষ পর্যন্ত শুনতে পায় নায়ক... ছুটে আসে নাইয়িকাকে বাচাতে...*/
নাইয়কঃ অই ভিলেন অরে ছাইরা দে কইতাছি । নাইলে আমারে তো চিনসি আমি কেমন একশোন হিরু।
ভিলেনঃ তাইলে দেখা তোর একশোন...
ইইইইইয়াআআআ ভিশুমাক... ভিশুমাক... ভিশুমাক...
/*শুরু হয়ে যায় নায়ক ভিলেনের চরম সুপারহিট একশন ফাইট, ফাইটে যা হয় সব সময় নায়ক ই জয়ী হয়। এখানেও তার বেতিক্রম হয়নাই... নায়ক একাই ৫-৬ জন ভিলেন কে কুপকাত করে নায়িকাকে উদ্ধার করে।*/
নাইকাঃ আ...আপনি না থাকলে কি যে হত?
নাইয়কঃ আরে না এইডা তো নাইয়ক হিসাবে আমার প্রধান দিয়িত্ব এন্ড কর্তব্য।
/*এর পরেই শুরুহয় নায়ক নাইকার ক্যামিস্ট্রি মিশ্রত রোমান্টিক গান যাতে অতিরিক্ত বিশেষ আকর্শন হিসাবে দেখা যাবে বৃশটির মদ্ধে নাচের দৃশ্য... :!> :#> :#> */
/*এর পরের দৃশ্যে দেখা যায় নায়ক আসছে দৌরাতে দৌরাতে...*/
নাইয়কঃ মাআআআ... মাআআআ... আমি পরিক্ষায় ফার্স্ট হইছি।
নাইয়কের মাঃ কস কি? তুই ফার্স্ট হইছিস?! কেমনে? তুই তো সারাদিন মায়াগো ইজ্জত বাচাইতেই ব্যাস্ত, পড়িস কখন?
নাইয়কঃ কি যে কউ না? আমি হিরু না আমার আবার পড়া লাগে নাকি।
নাইয়কের মাঃ ও আচ্ছা। যাইহোক এখন তো তোর বিয়ে দেওন লাগবো। তা নাইকা কই?
নাইয়কঃ আহহা তুমি তো দেখি সিনেমার ক্লাইমেক্সই বুঝনা? তোমারে সিনেমায় নিসে কেডা?
নাইয়কের মাঃ অই চুপ থাক, আমি তোর জন্মের আগের থেইকা সিনেমা করি আর আমারে সিখাস ক্লাইমেক্স?
নাইয়কঃ অই বুড়ি তুই আমারে চুপ থাকতে কস? তোর সাহস তো কম না? জানিস আমি এই যুগের এক নাম্বার একসন হিরু।
নাইয়কের মাঃ কিইইইইই? তুই আমারে বুড়ি কইলি? খারা আইজ তোর একদিন কি আমার যে কয়দিন লাগে? ওই ডাইরেক্টর কই গেলা এই নাইয়ক সিনেমায় থাকলে আমি খেলুমা না।
নাইয়কঃ কি আমারে বাদ দিতে কয়? অই ডাইরেক্টর এরে অক্ষনি বাদ দিবি নাইলে আমিও খেলুম না।
(......অই তোর মায়রে... হাউয়ার... )
/*খুক খুক... ইয়ে মানে বুঝতেই তো পারছেন একটু ঝামেলা লাগছে আরকি। তার চেয়ে চলেন দেখে আসি নায়িকা কি করে।*/
নাইকাঃ আব্বু আব্বু আমি না পরীক্ষায় ফার্স্ট হইছি।
নাইকার বাবাঃ তাই নাকি? ভালই তো ! আচ্ছা নাইয়কও শুনলাম ফার্স্ট হইসে। ও আর তুই না একই ক্লাসে ? এক ক্লাসে দুইজন ফার্স্ট হয় কেমনে?
নাইকাঃ আরে বাবা এত কিছু ধরতে গেলে চলে নাকি? এইডা সিনেমা না? তাও আবার বাংলা সিনেমা।
নাইকার বাবাঃ হ তা অবস্য ঠিক। আইচ্ছা তোর তো এখন বিয়ে দেওয়া লাগবো ভিলেনের সাথে।
নাইকাঃ না আব্বু না। তুমি এ কাজ করতে পার না। আমি নায়ককে ভালোবাসি আমি ওকেই বিয়ে করব।
নাইকার বাবাঃ চোপ বজ্জাত মেয়ে বাপের মুখের উপর কথা ! আমি জার সাথে তর বিয়ে দিব তার সাথেই তর বিয়ে করা লাগবে।
নাইকাঃ না বাবা আমি ওই বদমাইস টারে বিয়ে করতে পারব না। নাইয়ক কত ভাল। আমি ওরেই বিয়ে করব।
নাইকার বাবাঃ না সিনেমায় নাইকার বাবা সবসময় ভিলেনের সাথেই নায়কার বিয়ে দেয়, সে যত খারাপই হোক। আর নাইয়ক যত ভালই হক তাকে করে অপছন্দ। সো নো কথা। তোর বাড়ির বাইরে যাওয়া আইজ থেকে বন্দ।
নাইকাঃ তুমি আমার শরীর আটকাইয়া রাখতে পার কিন্তু মন কে আটকাইতে পারবা না।
/*ঠাস ঠাস ঠাস... নায়কার এত বেয়াদবি সহ্য না করতে পেরে চর মারে তার বাবা।*/
নাইকাঃ তুমি আমারে তিনডা চর দিলা ক্যে? একটা দেওয়ার কথা ছিল তো।
নাইকার বাবাঃ আরে একটাই দিছি বাকি দুইডা তো একসন রিপ্লে। চ তোরে এখন ঘরের মদ্দে আটকাইয়া রাখি।
নাইকাঃ না... এত নিষ্ঠুর তুমি হইও না বাবা, আমারে ঘরের মদ্দে আটকাইয়া রাইখ না। আমার আবার দশ মিনিট পর পর বাথরুম লাগে।
নাইকার বাবাঃ আইচ্ছা যা দশ মিনিট পরপর ব্রেক।
/*এরপর শুরু হয় নাইয়ক নাইকার বিরহ সঙ্গিত। যে সঙ্গিত শুনে দর্শকদের চোখের পানিতে হলের মদ্ধে ছোট খাট বন্যা হওয়ারও আসঙ্কা আছে।*/
/*গানের শেষে নাইক কে দেখা যায় নাইকার বাড়ি তে ঢুকতে। ঢুকেই চিৎকার...*/
নাইকঃ নাইকার আব্বাআআআআ...
নাইকার বাবাঃ কিহইছে ক?
নাইয়কঃ তুমি নাইকারে আটকাইয়া রাখছ ক্যে?
নাইকার বাবাঃ আমার মাইয়ারে আমি আটকাইয়া রাখি আর যাই করি তোর কি?
নাইয়কঃ এইডা ঠিক না... মানবাধিকার লংঘন। মানবাধিকার আইনের চৌসট্টি নাম্বার অধ্যায়ের, উনচল্লিশ নাম্বার অনুচ্ছেদের, একশত চৌদ্দ প্যারায়...
নাইকার বাবাঃ চো...প। রাখ তোর মানবাধিকার। নাইকারে যদি পাইতে চাস তাইলে আগে আগে ফাইট দে ভিলেনের লগে। তার পর কথা ক।
নাইয়কঃ কই ভিলেন কই? অই ভিলেন সামনে আই আইজ তরে বুজাইয়া দিম কত গমে কত আটা।
ভিলেনঃ দেখ শুভ কাজে আইছি মানে বিয়া করনের লাইগা। অহন ডিস্টাব লইস না।
নাইয়কঃ বিয়া করবি মানে? তুই হলি ভিলেন জীবনে কোন দিন দেখছস ভিলেনের লগে নাইকার বিয়া হয়? বিয়া হইলে আমার লগেই হইব। আই কথা না কইয়া লাস্ট একটা হেব্বি ফাইট দেই। দর্শক মজা পাইব।
ভিলেনঃ ধুর... বিয়াই যদি না করতে পারি তাইলে খালি খালি ফাইট দিয়া লাভ ডা কি? আর ওই মুটকি নাইকার লাইগা ফাইট দেওয়ার কোন ইচ্ছাও আমার নাই। :-<
নাইয়কঃ ফাইট দিবিনা মানে? তাইলে সিনেমা জমব?
ভিলেনঃ পারুম না। তুই থাক তর নাইকারে লইয়া আমি গেলাম...
/*ইয়ে... মানে... শুধি দর্শক এই... মানে... ভিলেন লাস্ট সিনে মারামারি না করে চলে যাওয়াতে সিনেমা আর আগাইনাই। তাই সিনেমা এখানেই একানেই শেষ। */
খোদাহাফেজ