রক্ত
রক্ত (Blood) হল উচ্চশ্রেণীর প্রাণিদেহের এক প্রকার কোষবহুল, বহু জৈব ও অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত সামান্য লবণাক্ত, আঠালো, ক্ষারধর্মী ও লালবর্ণের ঘন তরল পদার্থ যা হৃৎপিন্ড, ধমনী, শিরা ও কৈশিক জালিকার মধ্য দিয়ে নিয়ত আবর্তনশীল। রক্ত একধরণের তরল যোজক কলা।
রক্তের অংশ
রক্তের মূল অংশ দুইটি। যথা:
* রক্তরস (Blood Plasma)
* রক্ত কণিকা (Blood corpuscle)
রক্তরস
রক্তের তরল অংশকে রক্তরস (plasma) বলে। রক্তকণিকা ব্যতীত রক্তের বাকি অংশই রক্ত রস। মেরুদন্ডী প্রাণিদের রক্তের প্রায় ৫৫% রক্তরস, এটি ঈষৎ হলুদাভ। এতে প্রায় ৯১-৯২% পানি এবং বাকি ৮-৯% জৈব ও অজৈব কঠিন পদার্থ থাকে।
কাজ:
1. এর মাধ্যমে পাচিত খাদ্যবস্তু, হর্মোন, উৎসেচক ইত্যাদি দেহের বিভিন্ন অংশে পরিবাহিত হয়।
2. রক্তরসের প্রোটিনের পরিমাণ রক্তের সান্দ্রতা (ঘনত্ব), তারল্য (fluidity), প্রবাহধর্ম (rheology) বজায় রাখে এবং পানির অভিস্রবণিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
3. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
4. অ্যান্টিবডি, কম্প্লিমেন্টস ইত্যাদি প্রাথমিক রোগ প্রতিরোধ উপকরণ ধারণ করে।
মানব রক্তরসের কিছু প্রোটিন উপাদান
1. রক্তের অ্যালবুমিন
2. নানান গ্লোব্যুলিন (অ্যান্টিবডি গামা/ইম্যুনো গ্লোব্যুলিন)
3. প্রতঞ্চক ও প্রতিতঞ্চক উপাদান সমূহ
4. ফাইব্রোনেক্টিন ও ভিট্রোনেক্টিন
5. কম্প্লিমেন্টস (২০টির বেশী)
6. সি আর পি
7. ট্রান্সফেরিন
8. ট্রান্সথাইরেটিন
9. সেরুলোপ্লাজমিন
10. হ্যাপ্টোগ্লোবিন
11. হিমোপেক্সিন
12. সাইটোকাইনস
13. লাইপোপ্রোটিন ও কাইলোমাইক্রন
14. এল বি পি
রক্তকণিকা
রক্তের প্লাজমার মধ্যে নির্দিষ্ট আকার ও গঠন বিশিষ্ট উপাদান বা রক্ত কোষসমূহকে রক্ত কণিকা বলে। রক্তে প্রায় তিন ধরণের কণিকা পাওয়া যায়। যথা:
ক. লোহিত কণিকা (Erythorcytes),
খ. শ্বেত কণিকা (Leucocytes),
গ. অণুচক্রিকা (Thrombocytes)।
রক্তচাপ
হৃদপিন্ডের সংকোচন-প্রসারণের কারণে মানুষের ধমনি ও শিরায় রক্তের চাপ সৃষ্টি হয়। মানুষের শরীরে ৮০/১২০ হলো আদর্শ রক্তচাপ, ৮০/১৩০ হলো সবচেয়ে অনুকুল রক্তচাপ এবং ৮৫/১৪০ হলো সর্বোচ্চ রক্তচাপ।
সূত্র