somewhere in... blog

সার্কাস যুবতী কিংবা বীজ ফসিলের রাতে

২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুরোনো কবরস্থান থেকে উঠে আসে বটগাছটার বীজ। কিংবা বীজের ফসিল। ডালে যে কাক রেখে গেছে নির্জনতার চিহ্ন, তার কা কা সুর ভেসে ভেসে যাচ্ছে দূরের অন্ধকারে। পাতারা এসময় দোল খায়। পাতাদের ঘরে পাখিদের ঘ্রাণ জমে জমে কখন কুয়াশা হয়ে গেছে আর ন্যাতানো পাহাড়ের কোটরে সঙ্গমরত এক জোড়া সাপ সেই কুয়াশার তীব্র মদ পান করে লিখে ফেলে তপস্যারত পাগলের বীর্যপতনের কালযাপন, চা পান করতে করতে সেইসব আমাদের কানে আসে এবং হারিয়ে যায়।

এখানে শীতের রাতে মেলা বসে। গুহার ভেতর আশ্রয় করে বাক্যহীন জটাধারী। উপরে কাচা কাঠে অদ্ভুত খেয়ালে আগুন ধরিয়ে নাচে ন্যাংটা পাগল। তার লিঙ্গ বলে কিছু নেই। বীর্যপতনের হিসাবে সব যোগফল একাকার করে সে না পুরুষ, না নারী, না বৃহন্নলা। মাদকপাতা পুড়ে পুড়ে ঈশ্বরবৃন্দ ঘোলাটে হয়ে গেলে কানাইঘাটের চরকাঅলা বাড়ি ফিরে যায় আর পেছনে পড়ে থাকে মন্ডা-মিঠাই। শীতের রাত বাড়ে। চায়ের গেলাসে কুয়াশারা নামে। সাপেদের সঙ্গমশেষে ক্লান্ত পাগল ঘুমিয়ে গেলে মঞ্চে উঠে আসে নিশাচরী। সার্কাস যুবতী। তার স্তনের ভাজে আমাদের নি:শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। তলপেটে আমন্ত্রণপত্র ঝুলিয়ে সে সোজা উঠে যায় আসমানে। আমরা উর্ধবগামী তার নিতম্বে বিভ্রান্ত হই।
সংগীত থেমে যায়। যুবতী হঠাৎ সবেগে নেমে আসে ভূতলে। চিৎকার দিয়ে নগ্নবুক আর যোনী মেলে ধরে সহস্র বুভুক্ষু চোখের পর্দায়। যেন মনসা সে! আয়! গিলে খাই!

আমরা গর্বিত পৌরুষত্ব নিয়ে বিপাকে পড়ে যাই। বিব্রত ও বিপন্ন হই।

রাত ফুরিয়ে এলে দূরের শহর থেকে ঝুম ঝুম ট্রেন থামে স্টেশানে। নাগরিক সংবাদের ভীড়ে সারাদিন ঘোলাটে ছবির মতন রেটিনায় ঝুলে থাকে সার্কাসের নগ্নবক্ষা যুবতী। সেই রাতের পর যাকে আর কোথাও দেখা যায় নি। কেবল সার্কাসের শূন্য উঠোনে পড়েছিলো তার পরিত্যক্ত সালোয়ার। রক্তাক্ত।

কবর থেকে উঠে আসে বটবীজের ফসিল। রাশি রাশি বটের ডালে ঘিরে আসে চারপাশ। পাতাদের চাপে দমবন্ধ হয়ে মারা যেতে যেতে চায়ের গেলাসে শেষ চুমুকের কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে ন্যাংটা পাগলের আগুননৃত্য। গুহাবাসের রহস্য। আর সঙ্গমে রত সাপদের ক্রমাগত হিস হিস!

বটবীজের ফসিল কবরে ফিরে গেলে আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাই আর সার্কাস যুবতী সারাটা আকাশ কাঁপিয়ে হাসতে থাকে অবিরাম। মধ্যরাতের ট্রেনের মতন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:৫২
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জুলাইয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে শ্লোগান কোলাজঃ

লিখেছেন জুল ভার্ন, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৩৬

জুলাইয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে শ্লোগান কোলাজঃ

* ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার’
* ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর।’
* ‘নাটক কম করো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসসালামু আলাইকুম। ইদ মোবারক।

লিখেছেন রাজীব নুর, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:১৯



ঈদ এখন এক নিরানন্দময় উপলক্ষ্য।
কিতাবে আছে ধনী-গরীব অবিভাজনের কথা বরং এদিন আরো প্রকটতা নিয়ে প্রস্ফুটিত হয় বিভেদরেখা কেননা আমরা আমাদের রাষ্ট্র- সমাজব্যবস্থা ও জনগণকে সেভাবে দিয়েছি ঘিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঈদের শুভেচ্ছা: দূর থেকে হৃদয়ের কাছ

লিখেছেন আমিই সাইফুল, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:০৩

আসসালামু আলাইকুম,
আজ ঈদের দিন। চারদিকে উৎসবের আমেজ, হাসি-খুশি, নতুন জামা আর মিষ্টি মুখের আদান-প্রদান। আমি ইউরোপে আমার পরিবারের সাথে এই আনন্দের মুহূর্ত কাটাচ্ছি। কিন্তু আমার হৃদয়ের একটা কোণে একটা ফাঁকা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ও মোর রমজানেরও রোজার শেষে......

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪০


বাংলা গানের ভাণ্ডারে কাজী নজরুল ইসলাম এক অনন্য নাম। তিনি বাংলা সাহিত্যে ইসলামী সংগীতের এক শক্তিশালী ধারা তৈরি করেছেন। তারই লেখা কালজয়ী গজল "ও মোর রমজানেরও রোজার শেষে এলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেই যে আমার নানা রঙের ঈদগুলি ......

লিখেছেন অপ্‌সরা, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪২


পেছনে ফিরে তাকালে আমি সবার প্রথমে যে ঈদটার কথা স্মরন করতে পারি সেই ঈদটায় আমি পরেছিলাম আমব্রেলা কাট নীলচে বলবল রং একটা জামা এবং জামাটা বানিয়ে দিয়েছিলেন আমার মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×