এই দেশে বেঁচে থাকাটাই আজ অপরাধ হয়ে উঠেছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও তাঁর স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনির খুন হয়ে যাওয়াও আমাদের কাছে মুখরোচক খবর হয়ে গেছে। কেউ পরকীয়ার রসময় গল্প ছড়াচ্ছে। আবার কেউ বিভিন্নজনকে জড়িয়ে খবর ছড়াচ্ছে। আর সুশীল সমাজ হায় হায় করে যাচ্ছে। কাকে দোষ দেবেন? নির্মম হত্যাকান্ড নিয়ে রসিকতা শুরু হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখ থেকে। তিনি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধী সনাক্ত করে দেবার আলটিমেটাম দিয়ে, পরে এটাকে কৌশল হিসেবে চালিয়ে দিয়েছেন। মুর্খ আমরা বুঝতে পারিনি, কোনটা ব্যার্থতা আর কোনটা কৌশল! একজন সাংবাদিক মানে, আমাদের জনগণের প্রতিনিধি। আমাদের কথাগুলো সবাইকে জানিয়ে দেবার মাধ্যম। আজ সাংবাদিকতাও বিক্রি হয়ে গেছে, টাকার কাছে। আসল খবর, আমরা পাইনা। আমাদের পেতে দেওয়া হয়না। একটা ঘটনা আমাদের সুকৌশলে ভুলিয়ে দেয়া হয়। আমরা ভুলে যাই।
ছোট্ট মেঘ একদিন বড় হবে। তার বাবা-মায়ের খুনিদের বিচার না পাওয়ার যন্ত্রণা তাকে কুরে খাবে। আমাদের দিকে আঙ্গুল তুলবে, সে। আমরা লজ্জায় মুখ ঢাকবো। আমাদের কিছু করার নেই।
পুলিশের কর্মকর্তারা আমাদের বিভ্রান্ত করছেন। তাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা চুপ থাকুন। তদন্ত শেষ করুন। আমাদের ফলাফল জানান। আপনাদের ইঙ্গিতমূলক কথা আমাদের বিভ্রান্ত করছে। খুন হয়ে যাওয়া মানুষগুলোকে আমরা বারবার খুন করছি। মেঘ অনেকবছর পর, তার বাবা-মার মৃত্যুতে ছাপা হওয়া খবরগুলো জড়ো করে স্মৃতি হিসেবে রাখতে চাইবে। সেদিন, পত্রিকার পাতায় ছাপা হওয়া পরকীয়ার মুখরোচক গল্প, তাকে অনেক কষ্ট দেবে।
ব্লগার ভাইদের প্রতি অনুরোধ, অপেক্ষা করুন। আসল সত্য জানার। মুখরোচক গল্প দিয়ে, হিট কামাতে যাবেন না। সাগর-রুনি আমাদের পরিবারের কেউ। মেঘ, আমাদের সন্তান।