নির্বাচন প্রার্থীদের প্রচারণা ও ভোটারদের উৎসাহ,উদ্দীপনায় জমে উঠেছে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাটের ১২ টি ইউনিয়ন ও ধোবাউড়ার ৭ টি ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।বিএনপি-আওয়ামীলীগের পুরাতন নেতাদের পাশাপাশি,আগামীতে নতুন যারা হালুয়াঘাটে রাজনীতি করতে আগ্রহী তারাও নিজ নিজ প্রার্থীদের নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে।ফলে এবারের নির্বাচনে দলীয় নেতা-কর্মীদের তৎপরতায় অন্যরকম আমেজ,উত্তেজনা ও আতংক তৈরী করেছে।
এ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামীলীগ সরকারের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বাবু এ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন ও ফারুক খান মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।তরুন নেতা এ্যাডভোকেট সাইম প্রমোদ মানকিনের পক্ষাঅবলম্বন করায় ফারুক খান কিছুটা বেকায়দায় রয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপির সাবেক এমপি আফজাল এইচ খান ও উপজেলার চেয়ারম্যান আলী আজগর মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।পাশাপাশি হালুয়াঘাটের নেতৃত্ব দখলে নিতে মরিয়া ইন্জিনিয়ার ইউনুস খান জোড়েশোরে মাঠে নেমেছে।বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক এমরান সালেহ্ প্রিন্সের মৌন সমর্থন ও আওয়ামীলীগের প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিনের কিছুটা সহযোগিতায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে আছে নতুন প্রজন্মের এ বিএনপি নেতা।
ঘটনাবহুল এ ইউপি নির্বাচনে সবার দৃষ্টি এখন হালুয়াঘাটের শাকুয়াই ইউনিয়নে।মূলত এ ইউনিয়ন নিয়েই নেতারা দ্বন্ধে জড়িয়ে পরে।সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শাকুয়াই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও হালুয়াঘাট আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি নাজিমউদ্দীন মনোনয়োন প্রক্রিয়ায় প্রমোদ মানকিনের বিরোধিতা করে ফারুক খানের পক্ষাঅবলম্বন করে।পরবর্তীতে প্রমোদ মানকিন মনোনয়োন পেয়ে নির্বাচন করলেও নাজিমউদ্দীন চেয়ারম্যান প্রমোদ মানকিনের বিরোধিতা করে।অন্যদিকে বিএনপির তরুন নেতা ইমন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আফজাল এইচ খানের পক্ষাঅবলম্বন করলেও উপজেলা নির্বাচনে আলী আযগরের পক্ষে নির্বাচন করায় আফজাল এইচ খানের বিরাগভাজন হোন।ফলে এবারের নির্বাচনে আফজান এইচ খান সরাসরি ইমনের বিরোধিতা করছে।
তরুন নেতা ইন্জিনিয়ার ইউনুস খানের নিজের ইউনিয়ন শাকুয়াই হওয়ায় তিনি মামা আফজাল এইচ খানকে এই ইউনিয়ন নিয়ে মাথা ঘামাতে নিষেধ করে।সেই সাথে ইমনকে সমর্থন করে।কিন্তু আফজাল এইচ খান ইমনের বিরোধিতা করে বিএনপি থেকে সাবেক চেয়ারম্যান আরব আলী সিদ্দিকীকে সমর্থন করে।আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক খান সমর্থন করেন নাজিমউদ্দীন চেয়ারম্যানকে।অন্যদিকে নাজিমউদ্দীন চেয়ারম্যানকে ঠেকাতে কৌশলগত কারনে প্রমোদ মানকিন ইন্জিনিয়ার ইউনুস খানের পরামর্শে হিন্দু প্রার্থী সমীর সরকার সুদনকে সমর্থন করে।ফলে নাজিমউদ্দীন চেয়ারম্যানের ভোট ব্যাংক হিন্দুভোট সরে আসে সুদনের দিকে এবং ইমন এককভাবে মাঠ দখল করে।ইন্জিনিয়ার ইউনুস খানের এ কৌশলে অন্যপ্রার্থীরা হতভম্ব হয়ে যায়।আফজাল এইচ খান ইমনকে ঠেকানোর কৌশল হিসাবে আরব আলী সিদ্দীকির মাধ্যমে হালুয়াঘাট নির্বাচন কমিশনারে অভিযোগ করেন।হালুয়াঘাটের রিটার্নিং কর্মকর্তা আফজাল এইচ খানের অভিযোগ গ্রহণ না করে ইমনের প্রার্থীতাকে বৈধ ঘোষণা করে।পরবর্তিতে আফজাল এইচ খান ময়মনসিংহ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করলে ইমনের প্রার্থীতা অবৈধ ঘোষণা করা হয়।এ ঘটনার ফলে মামা-ভাগ্নে আফজাল এইচ খান ও ইন্জিনিয়ার ইউনুস খানের সম্পর্ক আরো খারাপ হয়।
ইন্জিনিয়ার ইউনুস খান ঘটনার পরপরই সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিনের পরামর্শে ঢাকায় মূল নির্বাচন অফিসে আপিল করে।আজকে এ আপিলের রায় হওয়ার কথা।হালুয়াঘাটের সবার দৃষ্টি এখন এ রায়ের দিকে।সবার প্রশ্ন এ লড়াইয়ে কে জিতবে?