একটি গল্প। অসমাপ্ত গল্প। সরলরেখা - বক্ররেখা।
২০১১ সালের ১৯ আগস্ট ‘চতুর্মাত্রিক’ ব্লগের শ্রদ্ধাভাজন ব্লগার নাজমুল হুদা ভাইয়া একটি গল্প লিখলেন, তিন ঘনিষ্ঠ বন্ধু আর এক বন্ধুর ছোট বোনকে নিয়ে, সরল রখা - বক্ররেখা। গল্পটি তিনি শেষ করলেন না, আবার ধারাবাহিকভাবে লিখতেও চাইলেন না। গল্পের শেষে তাঁর ফুটনোটে লেখা ছিলো, ‘এটা কোন ধারাবাহিক নয়। সেলিনা, হাবিব, সিরাজ, মিলন যদি আবার কখনো আসে, তা’হলে পরের কাহিনী তাদের কাছ থেকে জেনে আপনাদের জানাবার ইচ্ছা থাকলো!’ কিন্তু তাঁর এই ফুটনোট অন্য ব্লগাররা মানতে চাইলেন না! এদের মধ্যে আকাশগঙ্গা নামে খ্যাত মিজানুর রহমান পলাশ তো এই লেখাকে বারোয়ারী রূপ দেবার জন্য নাজমুল হুদা ভাইয়ার কাছ হতে রীতিমতো অনুমতি আদায় করে নিলেন। শুরু হলো এমন একটি বারোয়ারী লেখা, যার সাথে জড়িয়ে গেলো এর লেখকদের ব্যক্তিগত আবেগ, আনন্দ, কষ্ট, সবকিছু।
ডাক্তারের রোজনামচা (ডাঃ এস এম নিয়াজ মাওলা) লিখিত তৃতীয় পর্ব শেষে আকাশগঙ্গা একটি মন্তব্য করেন, ‘এইটা নিয়ে একটা উপন্যাস লিখে বইমেলায় ছাপিয়ে দিতে পারলে বেশ হয়। এক বই কিনে অনেক লেখকের লেখা পড়া।’ এভাবেই শুরু হলো এক আকাশছোঁয়া স্বপ্নের, যে স্বপ্নের সারথী আমরা সবাই।
এই বারোয়ারী উপন্যাসের সবচেয়ে মজার দিকটি হচ্ছে, এটি পরিকল্পনা করে শুরু হয়নি, শুরু হয়েছে হঠাৎ করে। কোনো পর্ব লেখার জন্য কাউকে আগে থেকে বলা হয়নি, পর্ব রচয়িতারা নিজেদের আগ্রহে, নিজেদের আনন্দেই, স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন। প্রত্যেক রচয়িতাই তাদের পর্ব লেখার সময় সম্পূর্ণ স্বাধীন ছিলেন, তাদের কলমকে ইচ্ছেমতো চলতে দেয়া হয়েছে। আরেকটি মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই বারোয়ারী উপন্যাসটি বারো জনেরই লেখা- The Dazzling Twelve.
The Dazzling Twelve:
১. নাজমুল হুদা -তিনি এই উপন্যাসটির প্রথম পর্ব লেখেন।
২. আকাশগঙ্গা (মিজানুর রহমান পলাশ)-তিনি এই উপন্যাসটির দ্বিতীয়, অষ্টম এবং দ্বাবিংশ থেকে শেষ পর্ব পর্যন্ত লেখেন।
৩. ডাক্তারের রোজনামচা (এস এম নিয়াজ মাওলা)- তিনি এই উপন্যাসটির তৃতীয়, সপ্তম এবং সপ্তদশ পর্ব লেখেন।
৪. জুলিয়ান সিদ্দিকী-তিনি এই উপন্যাসটির চতুর্থ ও ষষ্ঠদশ পর্ব লেখেন।
৫. সাহাদাত উদরাজী- তিনি এই উপন্যাসটির পঞ্চম পর্ব লেখেন।
৬. শব্দপুঞ্জ ( ফয়সল কাদের চৌধুরী) -তিনি এই উপন্যাসটির ষষ্ঠ ও ত্রয়োদশ পর্ব লেখেন।
৭. পাপতাড়ুয়া (সোহেল মাহমুদ)-তিনি এই উপন্যাসটির নবম পর্ব লেখেন।
৮. নাঈফা চৌধুরী অনামিকা -তিনি এই উপন্যাসটির দ্বাদশ, অষ্টাদশ, বিংশ ও একাবিংশ পর্ব লেখেন।
৯. ময়ূখ রিশাদ (আরিশ)-তিনি এই উপন্যাসটির দশম পর্ব লেখেন।
১০. আমিন শিমুল - তিনি এই উপন্যাসটির একাদশ পর্ব লেখেন।
১১. অপাংক্তেয় (নাহিদ আফরোজ)- তিনি এই উপন্যাসটির চতুর্দশ পর্ব লেখেন।
১২. জ.ই মানিক - তিনি এই উপন্যাসটির পঞ্চদশ ও ঊনবিংশ পর্ব লেখেন।
এই উপন্যাসটির শুরু থেকেই চতুর্মাত্রিক ব্লগের শ্রদ্ধেয় ব্লগারগণ উৎসাহমূলক মন্তব্য দিয়ে সবসময় আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন, আমাদের পাশে থেকেছেন। প্রত্যকের কাছে আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ, একই সাথে আমরা কৃতজ্ঞ ‘চতুর্মাত্রিক’ ব্লগ এবং এর মডারেটরদের প্রতি। উপন্যাসটির খুব সুন্দর একটি প্রচ্ছদ করে দেবার জন্য মেঘ অদিতিকে আন্তরিক ধন্যবাদ। উপন্যাসে তাঁদের রচিত পংক্তিমালা ব্যবহার করতে দেওয়ায় গীতিকার ও লেখক শেখ রানা, গীতিকার রাসেল ও’নীল এবং হাসান মাহবুব এর প্রতি আমরা সবাই কৃতজ্ঞ। উপন্যাসটির খুব সুন্দর একটি রিভিউ শত ব্যস্ততার মধ্যেও লিখে দেওয়ার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারপ্রাপ্ত সুরকার ও গীতিকার কবির বকুল ভাইয়াকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই রকম একটি বারোয়ারী উপন্যাস প্রকাশে এগিয়ে আসায় অন্যপ্রকাশ এবং মাজহার ভাইকে আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন। পরিশেষে এই বারোয়ারী উপন্যাসটিকে সম্পাদনা করে মলাটবন্দী করার জন্য শব্দপুঞ্জ (ফয়সল কাদের চৌধুরী), অপাংক্তেয় (নাহিদ আফরোজ), নাঈফা অনামিকা চৌধুরী, আকাশগঙ্গা (মিজানুর রহমান পলাশ), নাজমুল হুদা এবং ডাক্তারের রোজনামচা (ডাঃ এস এম নিয়াজ মাওলা) এর প্রতি আমাদের অশেষ কৃতজ্ঞতা।
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
বইয়ের নামঃ সরলরেখা - বক্ররেখা
ধরনঃ বারোয়ারি উপন্যাস
প্রচ্ছদঃ মেঘ অদিতি
প্রকাশনীঃ অন্যপ্রকাশ (স্টল নং: ২৪৮,২৪৯,২৫০)
আমেরিকা পরিবেশক: মুক্তধারা, জ্যাকসন হাইট, নিউইয়র্ক।
যুক্তরাজ্য পরিবেশক:সঙ্গীতা লিমিটেড, ২২ ব্রিক লেন, লন্ডন, যুক্তরাজ্য।
পৃষ্ঠাঃ ১১২
মূল্যঃ ২০০ টাকা মাত্র
বইমেলার দ্বিতীয় দিন ০২/০২/২০১২ -এ বিকাল চারটার সময় বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গনে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান হবে।সবাইকেআমন্ত্রণ।