চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতেই সিদ্ধান্ত নিলাম আমি লিখব। অফিসে বসেই। অনেক দিন পর রোদ উঠেছে আজকে। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে, যেমন ইচ্ছে করছিলো সকালে -যখন ঝুম বৃষ্টি হচ্ছিলো, তখন। তখনও আমি এক কাপ চা নিয়েই বসে ছিলাম। আমার জীবনে বিলাসিতার বস্তু ওই একটাই- চা!
আজকাল নিজেকে বড্ড একা মনে হয়। বড্ড ক্লান্ত, বিষণ্ণ। বন্দী বন্দী একটা অনুভুতি কাজ করে। আকাশ কালো করে যখন ঝুম বৃষ্টি নামে, খুব ইচ্ছে করে ভালোবাসার মানুষটার সাথে গল্প করতে করতে বারান্দায় বসে এক কাপ কফি খাই, অথবা দৌড়ে ছাদে চলে যাই, একসাথে ভিজি। এই জীবনে একবারই তার সাথে ভিজেছিলাম, যেদিন প্রথম তার হাত ধরেছিলাম। শেষ বিকেলের কনে দেখা আলো যখন জানালা গলে টুপ করে আমার ডেস্কে রাখা গাছটার উপর এসে পড়ে, খুব ইচ্ছে করে ভৈরবের পাড়ে গিয়ে বসে থাকতে। আর আমি আমার উড়ু উড়ু মনটাকে শক্ত করে বেঁধে নাকের ডগায় চশমা এঁটে কাজে ডুবে যাই আবার।
অফিস শেষে অকারণে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াই। বাসায় ফেরার কোনও তাড়া নেই আমার- আমার জন্য কেউ অপেক্ষা করে বসেও নেই। উদ্বিগ্ন মুখে কেউ জিজ্ঞেস করার নেই কেন দেরি হল। রাঁধতে ইচ্ছে না করলে, না খেয়ে ঘুমিয়ে গেলে কেউ বকতে বকতে ঘুম থেকে তুলে খাইয়ে দেবার নেই। নোংরা কাপড়ে অফিস গেলেও কেউ খেয়াল করার নেই।
এই বেশ ভালো আছি নিজের মতন করে। তবু কিসের জন্য মনটা মাঝে মাঝেই হাহাকার করে ওঠে... কী যেন নেই! এক চিলতে রোদের জন্য, একফালি আকাশের জন্য, একটুকরো সবুজের জন্য বুকটা খাঁ খাঁ করতে থাকে। যখন তখন গ্রাম্য এই আমার ইচ্ছে করে ওঠে ফিরে যাই... এই মেকি শহুরে জীবন আমার জন্য নাহ!
মানুষ যা চায়, তার সব কিছু কি এক জীবনে পায় রে পাগলা!!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২১