অন্যান্য মোবাইল অপারেটরগুলোর চেয়ে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সেবার মান কম। কল ড্রপ, সাকসেস রেট এবং সেবার গুণগত মান (কোয়ালিটি অব সার্ভিস) বিবেচনায় নিয়ে এ কথা বলেছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)।
বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আয় করা এ মোবাইল ফোন কোম্পানি গ্রাহক সেবার মান সেভাবে বাড়ায়নি। কোম্পনিটি নানা কৌশলে গ্রাহকদের ঠকাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সেবার মানের মাঠ পর্যায়ের চিত্র পেতে সম্প্রতি শাহবাগ, ফার্মগেট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট ও পান্থপথ এলাকায় ভয়েস ডাটা কালেক্টিং মেশিন বসিয়ে জরিপ পরিচালনা করে বিটিআরসি।
ওই জরিপে দেখা গেছে, গ্রামীণফোনের কল সাকসেসে রেট ৯১ দশমিক ৩ শতাংশ, যা বেসরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। এছাড়া কল ড্রপের ক্ষেত্রেও শীর্ষে অবস্থান করছে গ্রামীণফোন। এই প্রতিষ্ঠান নেটওয়ার্কে কল ড্রপের হার ৮ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপে আরো জানা যায়, বাংলালিংকের কল সাকসেস রেট ৯২ দশমিক ১১ এবং রবির ক্ষেত্রে এই হার ৯১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
তবে একমাত্র ব্যতিক্রম এয়ারটেলের ক্ষেত্রে। এই প্রতিষ্ঠানের কল সাকসেসের হার ৯৭ দশমিক ২২ শতাংশ। আর রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিটকের কল সাকসেসের হার ৮১ দশমিক ১৩ শতাংশ। জরিপ প্রতিবেদনে দেশের সবচেয়ে পুরনো মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত কোয়ালিটি অব সার্ভিসের নীতিমালা অনুসারে নূন্যতম কল সাকসেস রেট হতে হবে ৯৫ শতাংশ। পর্যায়ক্রমে সেটি ৯৭ শতাংশে উন্নীত করার কথা। কিন্তু এয়ারটেল ছাড়া অন্য কোনো অপারেটরের ক্ষেত্রে এ নূন্যতম মাত্রাও পাওয়া যায়নি।
গত ২১ জানুয়ারি এ ব্যাপারে সব অপারেটরকে একটি নির্দেশনাও দেয় বিটিআরসি। এতে বিটিআরসি বলেছে, 'সম্প্রতি দেখা গেছে, সব অপারেটর সেবার মান বাড়ানোর দিকে প্রয়োজনীয় মনোযোগ দিচ্ছে না। নেটওয়ার্কের মান ভাল হওয়ার বদলে ক্রমান্বয়ে খারাপ হওয়ার ধারায় রয়েছে। সেবাগ্রহীতা বাড়ার সাথে সাথে গ্রাহকদের অভিযোগও বেড়েছে। অহরহ কল ড্রপ, বাজে নেটওয়ার্ক কাভারেজ এবং অসন্তোষজনক গ্রাহক সেবা (কাস্টমার কেয়ার)সব অপারেটরেরই সমস্যা।’
উল্লেখ্য, বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী, মোবাইল সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথম দুই বছরে কল সেটআপ রেট ৯৫ শতাংশ এবং পরবর্তী সময়ে এই হার অবশ্যই ৯৭ শতাংশ হওয়া বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি কল ড্রপের হার কোন মতেই ৩ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টেলিটকসহ দেশে বর্তমানে ছয়টি মোবাইল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দেশজুড়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় ১১ কোটি ৪৮ লাখ ৮ হাজার গ্রাহক রয়েছে।
এইচকে/আরএ/রর
View this link