আমরা হয়তো অনেকেই গ্রীক পৌরাণিক কাহিনী শুনেছি। সেই সাথে গ্রীক পুরাণ এর উপর ভিত্তি করে নির্মিত অনেক মুভিও দেখেছি। সেই দেখা থেকেই আমার কৌতূহল তৈরি হয় গ্রীক পুরান এর উপর। মজাও লেগে যায়।
গ্রীক পৌরাণিক কাহিনীগুলো রচিত হয়েছে মূলত প্রাচীন গ্রীসে প্রচলিত কিছু গল্প থেকে। এই গল্প বা পুরাণকথা গুলো ছিল সেদেশের দেবদেবী ও বীর যোদ্ধাদের কাহিনীসম্বলিত। এই গ্রীক পুরাণ থেকে গ্রিকদের নিজেস্ব সংস্কৃতি, রীতিনীতি, প্রথা ইত্যাদি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। তাছাড়া গ্রীক পৌরাণিক কাহিনী গুলো গ্রিকদের ধর্মীয় সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশও বটে।
মূলত মৌখিক কাব্যপ্রথায় এই কাহিনী গুলো সূত্রপাত হয়েছিলো। গ্রীক পৌরাণিক কাহিনী গুলোর প্রাচীনতম সূত্র হচ্ছে দুটি মহাকাব্য, যেগুলো রচনা করে ছিলেন হোমার নামক এক গ্রীক কবি। এই মহা কাব্য দুটির নাম হলো ইলিয়াড ও ওডিসি । হোমার রচিত এই গ্রন্থদুটি আরেক গ্রীক কবি হেসিয়ডের থিওগনি ও ওয়ার্কস অ্যান্ড ডেজ গ্রন্থের সমসাময়িক; যেগুলির বিষয়বস্তু হল জগতের সৃষ্টিতত্ত্ব, দৈবী শাসকদের আবির্ভাব, মানবীয় যুগগুলির পারম্পার্য, মানুষের দুঃখের সূত্রপাত এবং বলিপ্রথাগুলির উদ্ভব। আর এগুলো রচিত হয়ে ছিল খ্রিষ্ট পূর্ব সপ্তম থেকে অষ্টম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে।
গ্রীক পুরাণের কাহিনী কে যদি ভাগ করা হয় তবে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারেঃ
১) (Theogonies) দেবগনের উদ্ভব বা সৃষ্টিতত্ত্বঃ এই অংশে বিশ্ব, দেবতা আর মানব জাতির সৃষ্টি সম্পর্কে বর্ণনা আছে।
২) দেব ও মানবের মেলামেশার যুগঃ দেবতা, উপদেবতা ও মানুষের আদি যোগসূত্রের কাহিনী।
৩) (Heroic age) যোদ্ধাদের যুগঃ এই অংশে দেবতাদের ক্রিয়াকলাপ কমে গিয়েছিলো। অনেক বীর যোদ্ধাদের আবির্ভাবের কথা আছে পৌরাণিক কাহিনীর এই অংশে।
গ্রীক পৌরাণিক কাহিনী বা গল্পের যে হলিউড মুভি গুলো আমরা দেখে থাকি তার মধ্যে হলিউডি মাল-মশলা ঢালাতে অনেক গুলোই জগাখিচুড়ী হয়ে গেছে। কিন্তু আসল গল্প গুলো একটু ভিন্ন এবং পড়ার মজাই আলাধা।
গ্রীক দেবতা ও উপদেবতাদের সংখ্যা অনেক। শুধু মাত্র দেবতাদের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজতে গেলে মাথা খ্রাপ হয়ে যাবার অবস্থা হয়। আর সেটা দেবতাদের ফ্যামিলি ট্রি দেখেই বুঝা যায়।
স্পষ্ট করে দেখতে চাইলে, এখানে ক্লিক করুণ
ইচ্ছে হলে এখানেও ঢু মারতে পারেন...
উপরের এই ট্রি দেখে নিশ্চয়ই ভাবছেন এত দেবতার নাম ও তাদের মধ্যকার সম্পর্ক তাঁরা মানে রাখে কি ভাবে? আসলে গ্রিকদের দেবতাদের তিনটি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা যেতে পারে, ১) আদ্যকালীন দেবতাগণ, ২) টাইটানস ও ৩) অলিম্পিয়ান্স। এই তিন শ্রেণীর দেবতাগন ছিলেন তিনটি ভিন্ন প্রজন্মের। মজার ব্যাপার হল তাঁরা প্রত্যেকেই কিন্তু একই পরিবারের। তাদের সবারই রাজত্ব ছিল এই বিশ্ব কেই ঘিরে।
আজ এ পর্যন্তই থাক। ইচ্ছা আছে কয়েকটি পর্ব নিয়ে লিখব। দেখা যাক আপ্নাদের কেমন লাগে।
যতটুকু পেরেছি সংক্ষিপ্ত আকারে তথ্য গুলো উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। ভুল হলে ক্ষমা সুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন এবং ভুলগুলো শুধরাতে সহায়তা করবেন। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:১৯