সুখে থাকতে ভুতে কিলায় বলে যে একটা কথা আছে সেটা এই মূহুর্তে তনুর কাজকর্ম দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। বেশ ভালোই ছিলো মেয়েটা। একা ছিলো, যদিও চারিপাশে দুধের মাছির অভাব ছিলো না। আজ একজনের সাথে কাল অন্যজনের সাথে কথা বলে ওর দিন কেটে যেত। কোথাও স্থিতু হতে পারতো না মেয়েটা। কারো সাথে বেশিদিন কথাও বলতে পারতো না। অনেকেই ওকে টাঙ্কিবাজ মেয়ে আখ্যা দেবার পরেও ও ওর স্বভাব পরিবর্তন করেনি। ওর এক্টাই কথা, যা করি জানিয়েই তো করি, কারো মন নিয়ে খেলা তো আর করি না। কাউকে আশা দেখিয়ে আশাহত করি না, কারো সামনে মুলা ঝুলাই না।
**মেয়েটা এমন ছিলো না। নিপাট লক্ষি, নিস্পাপ একটা মেয়ে ছিলো। অন্য ১০টা মেয়ের মতই স্বপ্ন দেখতো। স্বপ্নে বিভোর থাকতো। হঠাত করেই প্রেমে পড়লো। অন্ধ প্রেম।রায়হান ছেলেটা ভালো না। ওকে ভোগের বস্তু হিসেবেই দেখতো তবুও তনু ছেলেটাকে পাগলের মত ভালোবাসতো। ছেলেটার প্রতিটা কথা মানার চেষ্টা করতো। ওর অন্য বান্ধবীরা যেখানে সারাক্ষন তাদের বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করতো ও তখন রায়হান এর জন্য উদিগ্ন থাকতো।রায়হানের ফোন বন্ধ !! রায়হান ভালো আছে তো? দুর্ঘটনা ঘটেনি তো কোনো? অন্যদের বয়ফ্রেন্ডরা প্রতি মাসে ঢাকা থেকে দেখা করতে আসতো কিন্তু রায়হান আসতো না। এভাবে করেই ২ বছর পার করে দিলো। এর পর হঠাত করেই তনুর ঢাকা আসা ঠিক হলো। মেয়েটা খুশিতে আতঃহারা। যাক বাবা, এতদিনে ভালো করে রায়হানকে দেখবো, ঘুরবো ফিরবো। কিন্তু,,,,,,,,,,,,, না, রায়হান ওকে সময়ই দেয় না। এর মাঝে ও রায়হানদের ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখে রায়হান অন্য একটি মেয়ের কোমর জড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছে। তবুও তনু রায়হানকে কিছু বলেনি। পাগল ছিলো মেয়েটা।
একদিন রায়হান তনুকে বের হতে বল্লো। ওদের দেখা হলে রায়হান ওকে বল্লো যে ও তনুকে ওর খালার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে। তনু সরল বিশ্বাসে খালার বাসায় গেলো। গিয়ে দেখে সে বাসায় কেউ নেই। ওখানে যাবার পরেই রায়হানের আচরনের পরিবর্তন হয়ে গেলো, সে তনুর সাথে জোর করা শুরু করলো। মেয়েটা ভালোবাসায় অন্ধ হলেও নিজের বিবেক বিসর্জন দেয়নি। তাই মেয়েটা অনেক কষ্ট করে নিজেকে পবিত্র রাখতে পেরেছিলো। কিন্তু পবিত্রতার দাম দিতে হয়ে ছিলো ভালোবাসা দিয়ে। এই ঘটনার পর রায়হান তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
পাগল মেয়েটা যদিও এর পরে আরো ৩ বছর ধরে রায়হান পিছনে ঘুরেছে। প্রতিটা নির্ঘুম রাত চোখের জলকে সঙ্গী করে কাটিয়েছে ৩ টি বছর। অতঃপর তার ধারনা হলো আসলে ফিজিক টাই সব কিছু, এইসব ইমোশন, ফিলিং কিছুই না। নিজের পবিত্র দেহের প্রতিই তার ঘৃনা জন্মে গেলো। পালটে গেলো তার দৃষ্টিভঙ্গি। শুরু হলো অন্যভাবে পথ চলা।
( এইটা কি লিখছি নিজেই জানি না কিন্তু আর লিখবো না)
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২১