"নিজের মনের মধ্যে যদি তুলনামূলক চিন্তা আসে যে, অমুক ভাইকে আল্লাহ এতো টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি, বিত্তবৈভব, ধনদৌলত ইত্যাদি দিয়ে সামাজিক মর্যাদায় উন্নীত করেছেন, কিন্তু হায়! আমাকে আল্লাহ এসবের যোগ্য মনে করেন নি!"
- তাহলে আমাদের জীবন উর্ধ্বমুখী প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে প্ররোচিত করবে
এর বিপরীতে যদি আমার চিন্তা হতো:
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ আমাকে যতোটুকু নিয়ামত দিয়েছেন ততোটুকু নিয়ে যেনো আমি সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারি, আল্লাহ আমার জীবন-জীবিকায় যেনো বরকত দেন"
- তাহলে আমার মধ্যে পরিমিতিবোধ আসবে।
আজকের এই সমাজে এতো হানা-হানি অন্যায়, অপরাধ আর নেতিবাচক প্রভাব ও কর্মকাণ্ড বাড়ার প্রধানতম কারণ হিসেবে আমি মনে করি:
- আমাদের মধ্যে পরিমিতি বোধের অভাব, অল্পে তুষ্টির অভাব
- প্রাপ্তির উর্ধ্বগতি চাহিদা (আল্লাহ আমাকে যতটুকু রিযক দিয়েছেন ততটুকু নিয়ে সন্তুষ্ট না থেকে আরো অগাধ ও অঢেল সম্পদ-সম্পত্তি অর্জনের মানসিকতা যদিও আমরা কিছু ব্যতিক্রম ব্যতীত এটা অর্জনের যোগ্য নই, কারণ আল্লাহ সবাইকে সম্পদশালী করেননা।)
- শুধুমাত্র নিজেকে ভোক্তা ও সেবা ভোগ করার একচ্ছত্র অধিকারী চিন্তা করা অন্যকে সুযোগ ও অগ্রাধিকার না দেয়ার চিন্তা
- শুধু নিজের জীবনধারাকে গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা, অপরকে খাঁদের ভেতর থেকে টেনে না তুলে বরং পদাঘাতে আরো দাবিয়ে দেয়ার চেষ্টা
- বিত্তবৈভবে নিজেকে বড় করে তোলার সর্বাত্মক প্রতিযোগিতা ঝাপিয়ে পড়া
- দুনিয়ামুখী চিন্তা চেতনা
- জাগতিক সফলতার জন্যে অবিরত এবং প্রাণপন চেষ্টা
- মৃত্যুচিন্তা বিস্মৃত হয়ে যাওয়া
- ধৈর্য ও সহনশীলতার অভাব
- সামাজিক মর্যাদা হিসেবে অর্থকড়ি, শানশওকত, বাড়ি-গাড়ি, প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠার তুমুল প্রতিযোগিতায় নিজেকে প্রতিযোগি বানিয়ে ফেলা (এভাবে বৈধ পথে অবৈধ পথের দিকেও ধাবিত হতে হয়)।
- সর্বোপরি এটা মনে করা যে, বিত্তবৈভব, প্রভাব-প্রতিপত্তি, জাগতিক অর্জনে আমি পিছিয়ে পড়ছি। আমাকে উপড়ে উঠতেই হবে, উঠতেই হবে এতে করে অন্য কেউ ছিটকে পড়ে গেলেও।
- আমাদের মধ্যে যদি এই চেতনা আসে যে, আমি এতোটা ভোগ-বিলাস করবোনা যাতে করে অন্যের জীবন যাপনে এর প্রভাব পড়ে বা আমার অতি ভোগের কারণে অন্যে বঞ্চিত হয় হয়, তাহলেই কেবল স্থিতিশীলতা ফিরে আসা সম্ভব।
আল্লাহ আমাদের অল্পে তুষ্ট হবার তৌফিক দিন !
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:০৪