
১৯৫৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী আরকানসাসে জন্ম নেওয়া জন গ্রিশামের শৈশবের স্বপ্ন ছিল বাস্কেটবল খেলোয়াড় হওয়ার।কিন্তু বাস্তবে এই লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন নি। পড়াশোনা করেছেন হিসাববিজ্ঞান এবং আইন নিয়ে।১৯৮১ সালে ল স্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর আইন পেশায় নিয়োজিত হন।একদিন এক ভিকটিমের কেস স্টাডি করতে গিয়ে হঠাৎ মাথায় উপন্যাস লেখার আইডিয়া আসে। তিন বছর সময় নেন ১ম উপন্যাসটি শেষ করতে। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয় নি।আজ তিনি বর্তমান বিশ্বের একজন নামকরা ল-নভেল রাইটার। পরিচালকদের কাছেও তার উপন্যাসের কদর ব্যাপক। বেশকিছু মুভি হয়েছে তার উপন্যাস থেকে। তার মধ্যে পছন্দের কয়েকটি আজকে শেয়ার করবো.....
১.The Pelican Brief

সুপ্রিম কোর্টের ২ জন জাস্টিস খুন হন। কৌতুহলী ল স্টুডেন্ট ডার্বি শ অনুসন্ধানে নামে।বেরিয়ে আসে লুইজিয়ানায় এক পেলিক্যানদের অভয়ারণ্য এলাকায় তেল উত্তোলনের পরিকল্পনার কথা।সমগ্র পর্যবেক্ষণ শ একটি রিপোর্ট আকারে লিপিবদ্ধ করেন যা পরিচিতি পায় পেলিক্যান ব্রিফ নামে।খবর পেয়ে ওই রিপোর্ট পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে শত্রুপক্ষ। চলতে থাকে খুনোখুনি।জান নিয়ে ছুটে বেড়ায় শ।সাহায্যে এগিয়ে আসে ওয়াশিংটন হেরাল্ডের রিপোর্টার গ্রে গ্যানথাম।
অভিনয়ে-জুলিয়া রবার্টস,ডেনজেল ওয়াশিংটন।
২.Runaway Jury

ধরুন একজন সাইকো কিলার একটা গান নিয়ে কোন পাবলিক প্লেসে ঢুকে চোখের পলকে ৮-১০ জন লোককে খুন করে নিজেও আত্নহত্যা করলো।নিহতদের মধ্যে আপনারও এক আপনজন ছিলেন। এখন বলুন আপনার এই আপনজন হারানোর জন্য দায়ী কে?
আগ্নেয়াস্ত্র জিনিসটাই বা এত সহজলভ্য কেন যে তা একজন সাইকো কিলারের হাতে অনায়াসে চলে আসবে??
আগ্নেয়াস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কি কোনো দায় নেই???
যদি বলি তারাই আপনার আপনজনের সত্যিকারের কিলার তাহলে কি ভুল বলা হবে????
গোটা ছবিতে প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা হয়েছে। আমার দেখা সেরা কোর্টরুম ড্রামাগুলোর একটি।
মুভির অভিনয়শিল্পীদের লিস্টটা বেশ লোভনীয়

৩.The Rainmaker

রুডি বায়লর(ম্যাট ডেমন) একটি ল ফার্মে কাজ করে।বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে ক্লায়েন্ট বাগানোই তার কাজ।একটি কেসে তার এক ক্লায়েন্ট ডনি রে লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুশয্যায়। অর্থের অভাবে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করাতে অক্ষম ডনির পরিবার তার হেলথ ইনসুরেন্স কোম্পানীর শরণাপন্ন হয়। কিন্তু ইনসুরেন্স কোম্পানী তার চিকিৎসা ব্যয় বহনে অস্বীকৃতি জানায়।শুরু হয় তার পরিবারের সাথে ইনসুরেন্স কোম্পানীর আইনি লড়াই।বেরিয়ে আসে ইনসুরেন্স কোম্পানীর নানান দুর্নীতির চিত্র।
কাহিনীতে একই সাথে রুডি বায়লরের সাথে কেলি রাইকারের পরিচয় দেখানো হয় যে স্বামীর নির্যাতনে গুরুতর আহত হলেও স্বামীকে ছাড়তে চায় না।রুডি কেলিকে তার স্বামীকে ডিভোর্স দিতে প্রলুব্ধ করে। কিন্তু এক্ষেত্রে কি রুডির আইনজীবি সত্তাটাই কাজ করে?আইনজীবি হলেও সে কি মানুষ নয়?
মুভিটিতে মিকি রুর্কি একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ডিরেক্টর ফ্রান্সিস ফোর্ড কাপোলা।
৪.A Time to Kill

একজন নিগ্রো লোকের ১০ বছরের বাচ্চা মেয়েকে রেপ করে ২ জন শ্বেতাঙ্গ।প্রতিশোধপরায়ণ বাবা আইন নিজের হাতে তুলে নেয়।খুন করে ২ অপরাধীকে।আহত হয় এক পুলিশ অফিসারও।খুনের দায়ে অভিযুক্ত বাবাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন এক শ্বেতাঙ্গ আইনজীবি।একের পর এক বাধা আসতে থাকে শত্রুপক্ষের কাছ থেকে। কিন্তু আইনজীবি টি লড়াই করে যান শেষ পর্যন্ত।
সাদা-কালোর দ্বন্দ্ব,গুপ্ত সংগঠন -এই বিতর্কিত বিষয়গুলো ছবিতে উঠে এসেছে।যদিও ভায়োলেন্স একটু বেশি মনে হয়েছে,তবুও বর্ণবাদ বিষয়ক আমার দেখা সেরা ছবিগুলোর একটা।কেসের শুনানিগুলো দারুণ উপভোগ্য।
অভিনয়ে-ম্যাথিউ ম্যাককনেগি,স্যামুয়েল এল জ্যাকসন,কেভিন স্পেসি,স্যান্ড্রা বুলক।
৫.The Client

১১ বছরের মার্ক আর তার ছোট ভাই ঘটনাচক্রে একটি আত্নহত্যার প্রতক্ষ্যদর্শী হয়।আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসে এক সিনেটরকে হত্যা করে লাশ গুম করার ষড়যন্ত্র।বিপদে পড়ে মার্ক।বিপদ থেকে উদ্ধার পাবার জন্য মাত্র ১ ডলারের বিনিময়ে আইনজীবি নিয়োগ দেয় সে।
সিরিয়াস কাহিনীর মুভি হলেও বেশ মজা লেগেছে।অভিনয়ে-সুসান সারেন্ডন,টমি লি জোনস।
ব্যক্তিগতভাবে কোর্টরুম ড্রামার প্রতি আমার একধরনের দুর্বলতা আছে। পোস্টে এধরনের ছবিও বেশি প্রাধান্য পেয়েছে সঙ্গতভাবেই কারণ গ্রিশামের বেশিরভাগ মুভির বিষয়বস্ত আইন।অনেকের এধরনের মুভি বোরিং লাগে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই এই মুভিগুলো এড়িয়ে যাবেন।
সবাই ভাল থাকুন,ভাল ভাল মুভি দেখুন। ইনশাল্লাহ দেখা হবে ২৩ তারিখ।