গতকাল ২ অক্টোবর শুক্রবার ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে আড্ডা হবে তা কয়েকদিন আগে থেকেই কয়েকজন জানাচ্ছিল। আল মনসুর, রাতমজুররা আড্ডার আপডেট দিয়ে আসছিল। তা থেকে খুব ইচ্ছা ছিল আড্ডায় যাওয়ার। কতজনের সাথে দেখা হয়, পরিচয় হয় তাই আড্ডা ভালই লাগে। এবার পরবাসী ব্লগার আরিয়ানা আসবেন জেনেও আগ্রহ অনেকটা বেশী ছিল।
আড্ডায় যা হয়, পরিচিত ব্লগার না থাকলে কিছুক্ষন পর একলা হয়ে যাওয়ার একটা আশংকা থাকে। আমার একটাই ভরসা মেসবাহ য়াযাদ সচরাচর আড্ডা মিস করেন না। আর তিনি থাকলে আড্ডাটা আমার কাছে আপন আপন লাগে বেশী। তবুও আর কে কে যাবে তা চেক করে নিলাম। মিলটন ভাইকে পটালাম যাওয়ার জন্য। তিনিও ৮০% কনফার্ম করলেন যাবেন।
তারপর এল শুক্রবার। আগে থেকেই আমার বউ লীমা জানত আমি বাইরে যাব। তাই ও ওর জন্য অন্য কিছু কাজ রেডি রাখল করবে বলে। এই শুক্রবারে আমাদের আরও কিছু প্রোগ্রাম ছিল। সব ক্যানসেল করে বসে ছিলাম আড্ডার জন্য। মাড় দিয়ে কাপড় ধোয়ালাম, গভীড় আয়রন করলাম। লুকিয়ে লুকিয়ে একটু মেকআপও করে নিলাম। একটু পর পর আয়না দেখছি সব ঠিক আছে কিনা। এভাবে দুপুর গড়াল। আমি উত্তেজিত হচ্ছি আড্ডায় যাওয়ার জন্য। কাপড় ঠিকঠাক আছে কিনা আবারও দেখে নিলাম। তারপর একটু সময় লীমার সাথে বসলাম আলাপচারিতার জন্য। লীমা আর আমি দুজনেই চাকরী করার কারনে সপ্তাহে খুব কম সন্ধ্যায়ই আমরা একসাথে কাটাই।
লীমার সাথে আলাপ জমে উঠল। ১টি ২টি করে কথা আগাল। আমাদের বেশীরভাগ গল্পই শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ আলাপচারিতায় রুপ নেয়। এবারও তার ব্যাতিক্রম হল না। তুমুল বাকবিতন্ডা লেগে গেল। এই শেষ কথা, আর মুখ দেখাদেখি হবে না - এমন টাইপ কথা বলছি। বাইরে তখন তুমল আধার। আসমান ভেঙ্গে বৃষ্টি পড়ছে। আমাদের রুমে তখন কথার তুফান চলছে। এই করে করে সন্ধ্যায়ই হয়ে এল। আকাশও পরিষ্কার হল না। তাই আর যাওয়া হল না। তখন লীমাকে জিজ্ঞেস করলাম আমরা কি নিয়ে যেন কথা বলছিলাম?
খুব মিস করেছি কালকের আড্ডা। রাতমজুর এসএমএসও করেছিল। তাকেও বলেছিলাম আসব। অন্য অনেকের সাথেই তো দেখা হয়। কিন্তু আরিয়ানার সাথে আবার কবে দেখা হবে তার তো আর ঠিক নাই। তাই একটু আফসোস হচ্ছে। এমন কোন ব্লগার তো আর নেই যে আমার জন্য অপেক্ষা করবে বা যাই নাই বলে মিস করবে। তবুও আমি আপনাদের এবং আড্ডাকে মিস করেছি।
আবার দেখা হবে অন্য কোন আড্ডায় ইনশাল্লাহ।