
বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে, যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্রমোন্নতিতে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী। অনেক দূরের দেশ, মানুষ চলে আসছে কাছে। তারপরও অজানাকে জানার, অদেখাকে দেখার আগ্রহ কিন্তু দিন দিন বেড়েই চলছে। আবিষ্কৃত হচ্ছে নিত্যনতুন প্রযুক্তি।
সম্প্রতি স্পেনে বিজ্ঞানীরা হাতে পেয়েছেন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপ, আশা করা হচ্ছে এর ফলে মহাকাশ, গ্রহ-নক্ষত্র-- এসব সম্পর্কে গবেষণা আরো গতিময় হবে।
একটা টেলিস্কোপ তৈরির খরচ ১৩০ মিলিয়ন ইউরো বা ১৮৫ মিলিয়ন ডলার। এলাহি কান্ডই বলতে হবে। তা হবে না কেন? স্পেনের গ্রেট ক্যানারি টেলিস্কোপ, জিটিসি যে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপ বানিয়ে বসে আছে! ক'দিন আগে টেলিস্কোপটি কাজও শুরু করেছে, উদ্বোধন করেছেন স্বয়ং স্পেনের রাজা হুয়ান কার্লোস।

খরচ অনুযায়ী টেলিস্কোপ তৈরিতে ঝামেলাও হয়েছে অনেক। জিটিসির বিজ্ঞানীরা এটা তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন আজ থেকে ঠিক ২২ বছর আগে, ১৯৮৭ সালে। অবশেষে আকৃতি যা দাঁড়িয়েছে তাকে বিশাল বললে কমই বলা হয়। টেলিস্কোপে যে আয়নাটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটাই ৮২ বর্গ মিটার। পুরো কাঠামোর বাকি ৩৫টি অংশ যোগ করলে টেলিস্কোপটির আকার কী দাঁড়াতে পারে সেটা না হয় একটু কল্পনাই করে নিন।

বিজ্ঞানীদের দাবি, আকারে এটি যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান কেক বা ইউরোপের চারটি ভিএলটি টেলিস্কোপের চেয়ে অনেক বড়, সুতরাং একে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপের স্বীকৃতি দেয়া যেতেই পারে। তা মস্ত আকারের এই টেলিস্কোপ কাজে কেমন? বিজ্ঞানীরা যা আশা করছেন তা সত্যি সত্যিই হলে জিটিসি যে এখানেও আর সব্বাইকে ছাড়িয়ে যাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস, এই টেলিস্কোপ গবেষকদের জন্য মহাকাশের সবচেয়ে দূরবর্তী এবং অন্ধকারাচ্ছন্ন কোণকেও নিয়ে আসবে আলোয়। মহাকাশযাত্রীদের সামনেও এই টেলিস্কোপ খুলে দেবে নতুন দরজা। নতুন কোনো নক্ষত্র আবিস্কার, ব্ল্যাক হোল বা অন্ধকার বিবরের অণুপুঙ্খ বিশ্লেষণ এখন আর আগের মতো কষ্টসাধ্য মনে হবেনা। তা জিটিসির এই করিৎকর্মা টেলিস্কোপটি এখন স্পেনের কোন শহরে? শহরে খুঁজলে পাবেন না, লা পালমা দ্বীপের এক মানমন্দিরে বসে চুপচাপ কাজ করে যাচ্ছে টেলিস্কোপটি।
তথ্যসূত্র এখানে -