(প্রাককথনঃ এ বছরের ১৮ মার্চ, আমার লেখালেখির একদশক পূর্ণ হল। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এর অর্ধেকের বেশি সময় আমি এই ব্লগের সাথে যুক্ত ছিলাম ও আছি, গত মাসে ব্লগে লেখার ছয় বছর পূর্তি হল। সেই কারণেই আত্মজৈবনিক ও কবিতা বিষয়ক প্রবন্ধের শেষ অংশটি আজ দিচ্ছি। প্রথম অংশের লিংক এখানে - কবিতার সাথে দশটি প্রেম: কয়েকটি কথা (১ম পর্ব)। লেখাটি প্রকাশ হয়েছিল মহাপথ ডট কম এ। আশা করি সকলের ভাল লাগবে)
কবিতা ভাবনা ও প্রকরণে
কবিতা কি কিচ্ছুটি জানি না আগেই তো বললাম। তাই মনে যা আসে তাই শোনাতেই দেখি বন্ধুরা আরো আগ্রহ নিয়ে জেঁকে বসে আসে রাজ্যের সব প্রশ্ন নিয়ে। এসব প্রশ্ন যে একেকটা শেলের মত এসে বেধে, কী করে করি! কথা থামাতেই তরুণ এক বন্ধু বলে বসল, ভালো কবিতা কোনগুলো, খারাপই বা কোনটা? এ প্রশ্নটা ততটা খটোমটো নয় অন্তত আমার জন্যে। কেননা আমি বিশ্বাস করি জগতে যাই কবিতা বলে স্বীকৃত তাই ভাল কবিতা। খারাপ কবিতা বলে কিছু নেই, থাকতে পারে না। ওদের দিকে তাকিয়ে হেসে বলি, ভালো কবিতা কিংবা খারাপ কবিতা এই প্রশ্নটা খুব একটা যৌক্তিক নয়, এর চেয়ে বেশি যুক্তির- কবিতাটি কবিতা হয়েছে কিনা? কবিতা যদি সত্যি কবিতা হয়, তবে সে নিজের শক্তিতেই নিজেকে মেল ধরে অনাগত দিনের কাছে নতুন নতুন রূপে। ঠিক যেমন পেয়াজের প্রতিটি স্তর উন্মোচন করলে আরেকটি নতুন স্তর বেরোয়, ঠিক সে রকম করে। তাই ভালো কবিতা বলে আলাদা করে বিশেষায়িত করবার দরকার নেই। যে লেখা কবিতা, তা এমনিতেই ভালো।
কবিতার কবিতা হয়ে ওঠার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কবিতা রচয়িতার নিজে কবি হয়ে ওঠা। এ জন্যে প্রথমেই দরকার কবিতার ভাষা, ভাব ও ছন্দের বিবর্তন সম্বন্ধে কবিতা রচয়িতার স্পষ্ট ধারনা। আরো প্রয়োজন নিজের কাল, দেশ, সমাজ, রাজনীতি, জনরুচি, বিষয় ও আঙ্গিকগত ভাবনার পার্থক্যগুলোর প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা। অনেক সময় না থাকলেও কবিতা রচিত হতে পারে, তবে তা নিতান্তই ব্যতিক্রম। কবিতা রচনা করতে গিয়ে উপরের বিষয়গুলোতে সচেতন থেকেও কবি যদি সমকালীন সময়ের চর্চার চলমান জোয়ারেই শুধু ভাসেন তাহলেই যে কবিতা, কবিতা হয়ে উঠে ভাস্বর হয়ে উঠবে এমনটিও নয়। কবিতার নিজের বৈশিষ্ট্য, বক্তব্য, চিত্র ও দৃশ্য নির্মাণে কৌশলে যথাযথ ভাব বজায় রেখে কোন কবি যদি কবিতার দেশজ, বৈশ্বিক এবং সময়গত কাঠামো স্পর্শ করে যান, তবেই কবিতা প্রকৃত অর্থে কবিতা হয়ে উঠবে, এ কবিতা সব সময়ের, সব কালের। এ কাল হতে পারে সমসাময়িক, ভূতপূর্ব সময়ের বয়ান কিংবা আগামী দিনের কথকতা। সমাজ, রাষ্ট্র, দর্শন, ধর্ম এবং সর্বোপরি মানুষ- কবিতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ কাঠামো, এগুলোর যথাযথ মেলবন্ধনই কবিতার জন্ম দেয়, হতে পারে তা আকস্মিক কিংবা দীর্ঘদিনের সুচিন্তিত প্রচেষ্টায় নির্মিত।
একটি কবিতা সত্যিই কবিতা হয়ে উঠলে, তা অবশ্যই ভাল কবিতা; যেহেতু কবিতাকে ভালো দিয়ে বিশেষায়িত করা হচ্ছে। তবে সব শ্রেণীর মানুষের ভাল লাগবে বা সকলে একে গ্রহণ করবে এমন নয়। এ ক্ষেত্রে পাঠকের স্বাধীনতা ও অভিরুচি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে প্রকাশ-মাত্র পাঠক খুব গ্রহণ করলেও তা প্রকৃত অর্থে ভাল কবিতা হয়ে উঠবে এমন নয়। ভাল কবিতা যদি প্রকাশ-মাত্র গৃহীত নাও হয় একদিন না একদিন গৃহীত হবেই; এটাই কবিতার অন্তরের শক্তি।
কবিতা ও কবির জগত
ভালবাসার সাজমহলে যে রূপসীকে লুকিয়ে রাখি, তার নাম দিতে পারি ‘কবিতা’ । পায়ে তার আলতা নূপুরের শোভা দিতে কেটেছে কত বিনিদ্র রাত, হিসেব নেই। সে সময় একান্তই কবিতার, যার পরাবাস্তব পৃথিবীতে থাকি শুধু আমি আর কবিতা। কি আশ্চর্য সে জগৎ! আমি নির্মাণ করি এক অজানা পৃথিবী, স্বপ্ন যেন শিল্প এক, কাব্য এক চলমান ক্যানভাস। হঠাৎ যদি কোন ভাব মনতরঙ্গে দোলা দেয় তবে আঁচড় কাটি শক্ত সাদা অফসেটে। এরপর কেমন করে যেন চোখের সামনে অবয়ব নিয়ে হাজির হয়, কল্পমানবীর, যার শক্তি টেনে নিয়ে যেতে থাকে আমার কলমকে, অনেকটা যেন অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে ঝুলে থাকা বাদুর শব্দের আশ্বাস পেয়ে খাবারের সন্ধানে বের হয়। শব্দগুলো আসতে থাকে, সাইক্লোনের মত, একের পর এক, আশাবাদী মন নিয়ে চালাতে থাকি বল্গাহীন মনের আলোটাকে।
এরপর, সময়টা অদ্ভুত! দিন কয়েক ধরে নিজের মনে মেতে থাকি আনন্দে, কি প্রবল অহংকার জাগে ওই ফাল্গুনে যে এসেছিল পৃথিবীর হাওয়ায় হাওয়ায় আগুন ধরাতে, আজ সে নিজেই আগুন হয়ে রেখে যাচ্ছে ছাপচিত্র মাটির কঠিন বুকে। কিন্তু প্রারম্ভের অযাচিত উচ্ছ্বাস থিতিয়ে এলে একটা অন্তব্য বোধ জেগে উঠতে থাকে, কেমন যেন রাশ টেনে ধরে, ভাবনা কাঁপায় তোমার কূলবধুর সাজসজ্জা তেমন করে হয়নি বোধহয়। উদ্দেশ্য ও অযাচিত স্বপনের যে ভ্রমণ, তাকে কবিতায় রূপ দিতে চলতে থাকে পরশুরামের কঠোর কুঠার। ভাঙাগড়ার এই খেলায় একসময় কবিতার জন্ম হয়, গড়ে ওঠে আট রঙা রংধনুর এক নতুন জগত।
কবিতার আধুনিক নির্মাণ ও দশকিয়া চিন্তারীতি
কবিতার প্রসঙ্গ ও আঙ্গিক কাঠামো নিয়ে আজকাল প্রায়ই ভাবি, বলা চলে কবিতা নিজেই ভাবতে বাধ্য করে। কবিতার রাজ্যে ’আধুনিকতা’ একটি চিরকালীন বিতর্কের বিষয়। আমার ঠিক জানা নেই আধুনিকতা বলতে আসলে কি বোঝায়। বিগত দেড়শত বছর ধরে ’আধুনিকতা’ বিষয়ক তর্ক চলে আসছে বাংলা সাহিত্যে। সেই তর্কে কার কি লাভ হয়েছে জানা মুশকিল, তবে তর্কগুলো একটা জিনিস আমাদের দেখিয়ে গেছে-প্রায় প্রতিটি তর্ক, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের পরেই কবিতাকে নতুন করে দেখার চেষ্টা করেছেন কবিরা। আধুনিকতার তর্ক নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে গিয়ে গলদঘর্ম হয়েই রবিঠাকুর বলেছেন, ’কাজটা সহজ নয়, পাঁজি মিলিয়ে মডারন এর সীমানা নির্ধারণ করবে কে?’
সান্ধ্য-ভাষায় লেখা চর্যাপদের কবিতার ভাষা বাংলা আর আজকের মুক্তগদ্য নামের প্রায় গদ্য ধারার কবিতার ভাষা বাংলা এ দুয়ের বিস্তর ফারাক। এই ফারাকটুকু এক দিনে হয়নি। হাজার বছর ধরে একটু একটু করে হয়েছে, নতুন কবি এসেছেন, লিখেছেন, কালের গর্ভে হারিয়ে গেছেন কেউ। কেউ আবার রয়ে গেছেন চিরকালের প্রাসঙ্গিক হয়ে। তবে এ কথা সত্য মাইকেলী ক্লাসিক্যাল যুগ থেকে শুরু করে বিগত দেড় শতাব্দীতে কবিতার বদল ঘটেছে বারবার। আমার বিবেচনায় এই বদলই আধুনিকতা। দেখার নতুন চোখ, জানার নতুন মন কিংবা বলার নতুন ভঙ্গিমার নামই কবিতা আর আধুনিকতা। এ নতুন মহাকালের প্রেক্ষাপটে নতুন নাও হতে পারে, তবে সমকালের প্রেক্ষাপটে স্বভাষায় অনেকাংশেই নতুন হয়। বৃষ্টি কবিতায় সব সময়ই ছিল আনন্দের মুক্তির প্রতীক, বোদলেয়ার যখন বৃষ্টিধারাকে জেলখানার গারদের সাথে তুলনা করেন; তখন দেখার, ভাবনার আরেকটা চোখ খুলে যায় আমাদের। আবার মধ্যযুগের প্রেমিকের নারীর সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট হবার কারণ হিসেবে শারীরিক সৌন্দর্য বর্ণনায় মনোযোগ দেখা যায়, তার বদলে যখন রবিঠাকুর লেখেন ’হৃদয়ে লাগিনু সুখের মত ব্যথা’ তখনই কবিতায় কবির দৃষ্টিভঙ্গিতে ঘটে বদল। এভাবেই বদলে যেতে থাকে কবিতা। পুরোনো দিনে পুরোনো ভাষায় রচিত হলেই কবিতা পুরোনো হয়ে যায় এমন দৃষ্টি সংকীর্ণতার পরিচায়ক। বরং কবির ভাবনা ও প্রকাশভঙ্গীই কবিতা ও কবিকে আধুনিক করে তোলে।
আধুনিকতা কবিতার ক্ষেত্রে একটি বিশাল দর্শন যা নিয়ে লেখা যায় হাজারো পাতা। ওদিকে আজ আর যাচ্ছি না তাই। ইদানীং আশে পাশে দশক চর্চা নিয়ে খুব কথা উঠেছে তাই ওই নিয়ে কিছু কথা বলি। অনেকে আছেন যারা মনে করেন আধুনিক কবিতা লেখার জন্যে দশকিয়া রীতি বুঝি খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে যে কোন একটি দশকের স্রোতে ঢুকানো কবি লেখকের অবশ্য কর্তব্য। এ ধারনাটি আমার কাছে কখনোই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি। কেননা বাংলা সাহিত্যে এই রীতির প্রবর্তন ত্রিশের দশক থেকে শুরু হলেও বিশ্ব সাহিত্যে দশকীয় রীতির এত ব্যাপক প্রচলন আছে কিনা জানা যায় না। বাংলা সাহিত্যে সমকালীন কবি লেখকেরা অনেকেই একে যে ভাবে দেখেন তাতে মনে হয় কবি বা লেখক হবার এটাই প্রধান শর্ত। একটা নির্দিষ্ট দশক ধরে চলতে হবে আপনাকে, সে দশকের সব কটি সংকলনে অংশগ্রহণ করা চাই। যদিও আমি বিশ্বাস করি যারা সৃষ্টিশীল কবি এতে খুব বেশি আশা যাওয়ার কিছু নাই তাদের। দশকিয়া ধারা আমার মতে মোটামুটি ব্যর্থ একটা জিনিস যা সাহিত্যে নতুন ধারা তৈরি বা বাকবদলের বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরতে পারেনি। কেননা দশ বছরের মত স্বল্প সময়ে কোন ভাষাতেই কবিতার আঙ্গিক বা কাঠামো বদলের নজির নেই। মগজের উপনিবেশ গত কারণে যাদের আমরা আমাদের সাহিত্যের পুরোধা মনে করি তাদের সাহিত্যের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে ভিক্টোরিয়ান এজ, ক্লাসিক্যাল এজ এভাবে প্রবণতা অনুযায়ী দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে ভাগ করে সাহিত্যের সুরবিচারে। বাংলা সাহিত্যে ত্রিশের দশক বলে যে আমরা রবিবলয়ের বাইরের প্রথম কণ্ঠস্বরকে চিহ্নিত করি, সেই ত্রিশের দশকের কবিদের কবি হিসেবে চিনতে সমর্থ হয়েছি মধ্য চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ দশকের সময়ে। অতএব আমার বিবেচনায় কবিদের জন্যে এটা তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।
এটা খুবই সত্যি-কবিতা কোন এক দর্শীয় চিন্তার বিষয় না, আর এখানেই এত বিভক্তি। দশকিয়া চর্চা কবির কাছে মূল্যহীন লাগলেও সমালোচক হিসেবে রবীন্দ্রনাথের পরবর্তী সময়ের সত্যিকারের কবির ফর্দ করতে গেলে কিন্তু দশকের কাছে আশ্রয় নিতে হয়। এর কারণ যারা দশকরীতি প্রচলন করেছিলেন তারাই কোন না কোন ভাবে একে গুরুত্বপূর্ণ করে গেছেন। রবীন্দ্রনাথের আমল পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে যুগ সন্ধিক্ষণ, ক্লাসিক কিংবা রোম্যান্টিক ধারা প্রবল আকারেই ছিল। ওর থেকে নিজেদের পৃথক করতেই বুদ্ধবাবু ও তার সমমনা পাণ্ডবেরা করলেন ত্রিশের দশকের প্রচলন। তারা ভাল কি খারাপ করেছেন তার বিবেচনায় যাবার ইচ্ছে আমার নেই, আমার বিবেচনা নতুন একটা ধারা এলো. ওটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই দশকের চর্চাও প্রায় আশি বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। একাডেমিক কিংবা সমালোচকরা এ চর্চা করুন সমস্যা নেই কিন্তু কবিদের এ চর্চা থেকে বেড়িয়ে আসা উচিত। কেন এ চর্চা বিগত দশক গুলো সর্বজন স্বীকৃত আলাদা কণ্ঠস্বরের জন্ম দিতে ব্যর্থ হয়েছে তথাকথিত কিছু কবি লেখকের দলবাজির চর্চা ছাড়া। আমরা অনেক সময় ভেবে দেখিনা দশকচ্যুত বলে যাকে অগ্রাহ্য করা হয় সে প্রকৃতার্থে তার দশকের সেরা কবি কিনা?
তাই আমার বিশ্বাস বিদ্যমান দশকচর্চা পদ্ধতিতে লাভের চেয়ে লোকসান বেশি। দশকের হরিদাস পালে একদল ভেড়া ঢুকে যায়, যাবেই- কেননা আগেও গিয়েছিল; এটা ঠেকাবার নয়। দলবদ্ধ হয়ে চলার চর্চা লেখকের নিজের শক্তি কমাতে যথেষ্ট যদিও এটাই এ অঞ্চলের কবি লেখকের একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে দশকচর্চা এরপরও চলবে কেননা সমালোচনা সাহিত্যে অনেক আরামের জন্ম দিয়ে গেছে দশকীয় প্রবণতা। সমালোচনার নতুন কোন পদ্ধতি বা দৃষ্টিভঙ্গি না আসা পর্যন্ত একে ধারণ করে যাবেই আমাদের সাহিত্য। তবে কবির তা মান্য করার কিছু নেই বলেই মনে করি। ধরা যাক আজকে বাংলা কবিতার প্রধান চর্চা কেন্দ্র গুলো- কলকাতা, ঢাকা, আগরতলা, আসাম, রাজশাহীতে যে চর্চা, যে ভাষা, যে প্রকাশভঙ্গী মেনে লেখা হয় ওটাকে মানদণ্ড ধরে তালই মিলিয়ে গেলেই মহাকাল একজন কবিকে রাখবে তার সোনার তরীতে? আমার কখনোই তা মনে হয় না, তাই আমি বিশ্বাস করি কবিকে কবিতা লিখতে হলে, আধুনিক হতে হলে তার নিজের সুর নিজেই তৈরি করতে হবে। যা হবে একেবারেই আনকোরা, নতুন কোন আনন্দের মত, একদম জীবন্ত ।
কবিতার সাথে দশটি প্রেম
কবিতার সাথে নিত্য বসবাস আমার, যেমন ছায়ার সঙ্গে কায়ার। পালকের মতন আমার পাখিপ্রাণে মিশে থাকে অনুভব নাম নিয়ে শব্দ ও কবিতারা। আমি ওদের নিয়ে খেলি সারাটা দিন। সে কোন এক মৌনমুখর বেলায় শাদা পরচুল হাতে নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে কোন এক ফাগুনের সন্তান একদিন আবিষ্কার করেছিল অন্ধকার আসলে আপেক্ষিক! তার সেই ভ্রমণে কি সব ভাবনাচিত্র মাঝে মাঝে উড়ে আসে অদ্ভুত আবেগের শব্দ হয়। ওগুলোকেই সাজাতে থাকে সে যুবকরে মন, চলে শব্দবিন্যাস, আর মনে আসে যুবকরে সবচেয়ে বড় সত্য- কবিতা লিখব বলেই আমি হয়েছি আমার স্বপ্নের লিপিকার। কবিতাময় আমার জীবনে দীর্ঘ রাতগুলোতে, অসহ্য সুন্দর সকালে কিংবা রোদদুপুরের আবেশ ক্ষণে যেন পাশে থাকে কবিতারা, এই ভেবেই আমি লিখতে থাকি, আমার খেরোখাতায়। সময় জানে কোথায় গিয়ে থামবে এই চির অন্বেষণ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৩৫