পূর্বতন পোস্ট গুলো -
১) জীবনের নানা রঙ- পর্ব ১
২) জীবনের নানা রঙ- পর্ব ২
এই পর্বে আমার গ্রাম এর উপরে বেশি জোর দেব । সেই সাথে আলো ছায়ার খেলা তো আছেই ।
বাংলাদেশের বড় বড় শহর গুলো যত উদ্ভট ভাবে আর দূরন্ত গতিতে ক্যান্সার কোষের মত বিস্তার লাভ করেছে, তেমন করে কিন্তু মফস্বল শহর গুলো হয়নি । আর ছায়া সুনিবিড় গ্রাম গুলো এখনো রয়েছে অনেকটাই আগের মতন । হয়ত এখন ক্রিকেট, ফুটবল নিজেদের কব্জায় নিয়েছে কিশোরের মন, কিন্তু গ্রামের রমনীরা শত সহস্র বর্ষের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন মাটির চুলোয় রান্নার সে অনাদিকালের প্রক্রিয়া ।
সেই মাটির চুলোয় কাঠ ভরে রান্না করা হচ্ছে এই ছবিটাতে । ফ্লাশ বন্ধ করে রাতে তুলেছিলাম । তাই ছবি দেখে বোঝার উপায় নেই কিসের ছবি ।
আমরা এবারে গিয়েছিলাম আমার আদি নানাবাড়ী চিংড়িখালী গ্রামে । এত ভিতরে গ্রমাটি কি বলব । এখান থেকে শরণখোলা খুব বেশি ভিতরে নয় । তো এই গ্রমের খালের কাছেই তোলা একটা ছবি ।
কেমন লাগল ছবিটা ? বাঁকটা আমাকে সুন্দরবনের কথা মনে করিয়ে দেয়
গ্রাম কেন এখনো আমাদের টানে ? এই প্রশ্নের উত্তর বোধহয় এই, কত গুলো যন্ত্র হয়ে ওঠা মানব যখন বিরাম পায় তার কর্মজগত থেকে তখন তার ইচ্ছে করে দু সারি তাল গাছ কিংবা সুপারির মাঝ দিয়ে হেটে যেতে । শান বাধানো পুকুর ঘাটে বসে পূর্নিমা দেখতে । পুকুরে নেমে জলে ঝাপাঝাপি, তাজা মাছ ধরে খাওয়া - এইত অন্যরকম এক জীবন, তার স্বাদ নেয়া । অদ্ভুত এক জীবন, যেখানে টিভি নেই, মোবাইল নেই তাই নেট নেই, ফেসবুক নেই নেই ব্লগও । সব কিছু থেকে ছুটি । আমাকে গ্রাম এ জন্যেই টানে ।
আমার বৃক্ষসংক্রান্ত জ্ঞান খুব কম বলে বলতে পারব না এই গাছটি কি ছিল । কম্প্যাক্ট ক্যামেরায় মাইক্রো ফটোগ্রাফি না হলেও চেষ্টা করে যাই । কিম্ভুত কিমাকার যা হয় তাই বা খারাপ কি ?
এই ছবিটি বোধহয় বট বা পাকুরের হবে । এই গাছটির নিচে বাধাই করা ছিল এবং বসার ব্যবস্থা ছিল । ছবিটি যখন তুলি তখন চলছিল লালনের গান "সময় গেলে সাধন হবে না" । আজকাল এ সব গান আমাকে কোন যে ভাবের জগতে নিয়ে যায় বুঝতে পারি না ।
মুর্শিদ কোথায় তোমার বাস ?
শূণ্যের উপর চিন্তা আমার
শূণ্যে বসবাস, মুর্শিদ
কোথায় তোমার বাস ?
গ্রাম ছেড়ে ফেরবার জন্য আমরা চড়লাম ট্রলারে । নদীতে রুপোলি জল চিক চিক করছে । অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য । এখনো মনে পড়ছে সে রুপোর মত জলে রৌদ্রের স্নেহ পরশ ।
এই পর্যন্তই গায়ের ভ্রমন । তবে ছবি ব্লগ এখনো শেষ হয়নি । আরো কিছু ছবি দেখবো আমরা ।
এই ছবিটা তুলেছিলাম রোজার ঈদের সময় । এত মানুষ গিয়েছে ভাবাই মুশকিল । আমি সেদিন অবশ্য কিছু কিনতে নয় ছবি তুলতেই গিয়েছিলাম ।
আবার একটু প্রকৃতিতে আসি । মাধব কুন্ডের চা বাগান টা কিন্তু একেবারে ফেলনা নয় । সবাই জলপ্রপাত দেখে চা বাগানটাকে আর সে ভাবে উপভোগ করে না । এখানে সেই চা বাগান আর জলের ধারার একটা ছবি দিলাম ।
মাঝে মাঝে কিছু ছবি খুব অদ্ভতু হয়ে ধরা দেয় । এই ছবিটা দেখুন -
ছবিটা দেখে মনে হচ্ছে না অনেকটা গাছের আগায় বাড়ি ? আসলে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ্ই ভিন্ন । এই বাড়ি গুলো হচ্ছে খুব সংকীর্ণ সমতল জায়গায় তৈরি । স্থান রুমাবাজার
বান্দরবানে গেলে এই শঙ্খ নদ জুড়ে বাশের ভাসা ব্যাপারটা খুব কমন । এই ছবিতে যেমন দেখা যাচ্ছে ।
আমার প্রতিটি ছবি ব্লগেই চেষ্টা করি একটি করে মোবাইলে তোলা ছবি দিতে । এই মোবাইল বলাবাহুল্য আট মেগাপিক্সেল, জুম, সাইবার শট নয় বরং মাত্র দুই মেগাপিক্সেলের চাইনিজ একটা সেট । এই সেট টা আমি এখনো মিস করি ।
ছবির ফুলটা অত্যন্ত ছোট কিন্তু । খুব কাছ থেকে নেয়া ।
আমার এই ব্লগ গুলোর নাম যেহেতু জীবনের নানা রঙ, তাই আলোর খেলা থাকবে এটাই স্বাভাবিক । এই ছবিটি দেখুনতো কেমন লাগে ?
এই ছবিটা তুলেছি ঈদের রাতে । ঈদ উপলক্ষে বুড়িগঙ্গা নদী তীরবর্তী একটি বাড়ি খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল । তারই আলো পড়েছে বুড়িটার কালো জলে । কি অদ্ভুত সুন্দর জলের কোলে আলোর নাচন, তাই না ?
আশা করি আপনাদের ছবি ব্লগ ঘুরে আসতে ভাল লাগল । দেখতে দেখতে শেষ ছবি ব্লগ । যাবার আগে একটা খোলা ফসিল মাঠের ছবি দিয়ে গেলাম । সাথে ফ্রি একটি গান
উৎসর্গ : আমার যৎসামান্য ফটোশপ জ্ঞান যা কিছু আছ, তার সবই আরিফ ভাইয়ের কাছ থেকে শেখা (ব্লগের কেউ না) । আমার অফিসের বিরস সময়টা আরিফ ভাইয়ের সাথে ফটোগ্রাফি এবং এডিটিং বিষয়ে আলাপ করতে করতে খুব ভাল কাটত । শেষ দিকেতো খুব মজাই হত । কিন্তু উনি চলে গেলেন অন্য একটা জবে । মিস ইউ আরিফ ভাই । আপনাকেই উৎসর্গ । ভাল থাকুন আর ফটোগ্রাফির সাথেই থাকুন ।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:১৪