somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুবাই থেকে ফিরে...২

০৩ রা মার্চ, ২০১১ রাত ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবুধাবীতে

গত পর্বে ই বলেছিলাম- ২৩ তারিখে আমাদের যাওয়ার কথা আবুধাবী। আবুধাবীতে আমাদের ঘোরাঘুরিটা ছিল একটু ভিন্ন যেহেতু প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সেই সময় সেখানে কন্সট্রাকশন চলতে থাকা হাউজিং এরিয়া পরিদর্শন। যিনি আমাদের রিসিভ করতে এলেন আবুধাবী বাস টার্মিনালে, জুবায়েরের দেয়া আমার পরিচয়ে কনভিন্সড হন নি যে তাতে আমরা বিশেষ অবাক হই নি; সে যাক দিন শেষে তিনি আমার কদর বুঝলেও ড্রীম আইল্যান্ডের এঞ্জিনিয়ার রেজাউল ভাই যে বিশ্বাস করেন নি তাতে আমার কোন সন্দেহ নেই।

সে যাক, প্রথমে আমরা ভিসিট করতে গেলাম ড্রীম আইল্যান্ড- একটি সুবিশাল হাউজিং এরিয়া, সাইটের চীফ এঞ্জিনিয়ার একজন মিশরীয় পুরকৌশলী। ঘুরে এলাম কাছেই একদম সমুদ্রের তীরঘেঁষা এক সুউচ্চ ভবনের কন্সট্রাকশন সাইট থেকে। এঞ্জিনিয়ারদের সাথে কথা বলে যে ব্যাপারটা পরিষ্কার হলাম তা আপনাদের সাথে শেয়ার না করে পারছি না- আরব আমিরাত বা উন্নত বিশ্বের সাথে বাংলাদেশ, মিশর বা এরকম উন্নয়নশীল দেশের হাউজিং এরিয়া কন্সট্রাকশনে যে মূল পার্থক্য তা হলো তারা প্রথমে সেই এলাকার ইনফ্রা-স্ট্রাকচার ডেভেলপ করে মানে সকল প্রকার ইউটিলিটি সার্ভিস (পানি, বিদ্যুত, গ্যাস সরবরাহ ও বর্জ্য নিষ্কাশন) নিশ্চিত করে তারপর সেখানে ভবন নির্মাণ শুরু হয়। আর আমরা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপ না করে প্রথমেই ভবন নির্মাণ করতে শুরু করে ভবিষ্যতে সেখানে যারা থাকবে তাদেরকে যথাযথ সার্ভিস প্রোভাইড করতে পারব কী না সেই ফিজিবিলিটি চিন্তা না করেই যে কারনে জাপান গার্ডেন সিটির মতো বিশাল প্রোজেক্ট এর ফেইলিউয়ার এর ঘটনা ঘটে!

অনেক ভারী কথা হলো, এইবার আসল কথা বলি- রেজাউল ভাই তার নিজের হাতের রান্না করা উটের মাংস খাওয়ালেন আমাদেরকে :) (যদিও আমি মাংস খেতে বিশেষ পছন্দ করি না- এরকম বিশাল প্রাণীকে মেরে ফেলে তার মাংসে পেট ভরছি ভাবলেই গা গুলিয়ে আসে! ওদের জোরাজুরিতে আর কিঞ্চিত ভাব মারার জন্যে একটুখানি মুখে দিলাম!) সাইট পরিদর্শনের ফাঁকে ঘুরে আসলাম আবুধাবী মেরিনা বীচ আর মেরিনা মল। মেডিটেরানিয়ান সমুদ্রের নীল পানি আবারো মনকে মুগ্ধ করল, প্রশান্তি দিল!

সন্ধ্যায় গেলাম শেখ যায়েদ মসজিদে- অপার্থিব সৌন্দর্য আর অদ্ভুত স্পিরিচুয়াল আলোর খেলা, শান্ত পরিবেশ- এক কথায় অ-সাম! সারাদিনের ক্লান্তি, ম্লানিমা অদ্ভুতভাবে মুছে গিয়ে শান্ত হয়ে গেল মন!


আবুধাবী মেরিনা


মেরিনা মলের ভিতরে


মেরিনা বীচে প্যারা-গ্লাইডিং


শেখ যায়েদ মসজিদে ১


শেখ যায়েদ মসজিদে ২

..................
সে রাত ছিল আমার মন খারাপের রাত, হয় তো হোটেলের খুপরির ভেতরেই গুমরে গুমরে মরতাম যদি না রফিক ভাই আমাকে বলা যায় জোর করেই বাইরে না নিয়ে যেতেন। চায়ের গ্লাস হাতে পাম দেইরার বীচের পাশ ধরে হাঁটতে হাঁটতে সমুদ্রের শীতল বাতাসে অবসাদ মুছে গেল; শান্ত মনে আর ঠান্ডা মাথায় ঠিক করে নিচ্ছিলাম এর পরদিনের প্ল্যান- কোথায় কোথায় যাব। এখনো মন খারাপের রাতে চা খেতে খেতে বীচের পাশ ধরে হাঁটা খুব মিস করি, খু-উ-ব!!
.....................


পরদিনের প্রথম প্রহরটা ছিল একদম আমার নিজের, মেট্রোতে করে চলে গেলাম দুবাই মলে- সেখান থেকে ট্যাক্সীতে বুর্জ আল আরব- সবাই দেখি নানান ভংগীমায় সমুদ্রের বুকে সগর্বে দাঁড়িয়ে থাকা অনন্য স্থাপত্যকীর্তির সামনে ছবি তুলছে; এক সাদা চামড়ার হাতে ক্যামেরা দিয়ে আমিও দাঁড়িয়ে গেলাম পোজ দিয়ে!B-) (বরাবরের মতোই ফটোখান ভালো হয় নি- কেবল আমিই লোকের ভালো ভালো ছবি তুলে দেই, আমার ছবি কেউ তুলতে পারে না!:(() গেলাম এমিরেটস মল এ- ঘুরে বেড়ালাম এ মাথা থেকে ও মাথা, মুগ্ধ হয়ে অনুভব করতে চাইলাম প্রতিটা জায়গাকে! আর তারপর গেলাম জুমেইরাহ বীচে- অদ্ভুত ভালোলাগার জায়গা, যেখান থেকে যেদিকে তাকাই দুবাই এর পরিচয় বহনকারী ইমারতগুলো দেখা যায়। কোন প্রিপারেশন ছাড়া যাওয়াতে ভিজতে পারলাম না ঠিকমত- সেই দুঃখেই আমি শেষ!


বুর্জ আল আরব


এমিরেটস মল


জুমেইরাহ বিচ

আর সেই আধভেজা অবস্থায় আবার যোগ দিলাম জুবায়েরের গ্যাং এর সঙ্গে- গন্তব্য ডেজার্ট সাফারি- দুবাই এর অন্যতম অভুলনীয় স্মৃতি; যাদের সাথে গিয়েছিলাম প্রত্যেকেই ছিলেন চমৎকার মনের মানুষ- অত্যন্ত উপভোগ্য ছিল প্রতিটা মুহূর্ত- মরুভূমির বুকে সাফারি, উটের পিঠে চড়া, আরবীয় ব্যালি ডান্স, সীসা পান আর সেইরকম আরবী খানা, বাজপাখি কাঁধে ছবি তোলা আরো কত কী! ভুলেই গেলাম পরদিন সকালেই আমার কনফারেন্সে প্রেজেন্টেশন আর সেটা বানানোই হয় নি!.........


মরুভূমির বুকে ১


মরুভূমির বুকে ২


আরবী নাচ ১


আরবী নাচ ২

আরবী নাচের ভিডিও দেখুন (আমার হ্যান্ডিক্যামে ধারণ করা B-))......



আগুন নিয়া নাচ


ব্যালি ডান্স ১


ব্যালি ডান্স ২

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১৮
৬২টি মন্তব্য ৬২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×