নরসিংদী জেলার সবচেয়ে বড় এবং পুরনো থানার একটি গ্রামে আমার জন্ম -দাদাবাড়ী নয়, বাবার কর্মস্থল; কিন্তু তারপরেও রায়পুরাকেই আমি আমার শেকড় বলে জানি। আর তাই কিছু দিন পর পরই ছুটে যাই প্রায় শহর হয়ে যাওয়া সেই মফস্বলে। রায়পুরার ইতিহাস তেমন কিছু জানা যায় না; নাম থেকে আর এলাকার মুরুব্বীদের কথা থেকে বোঝা যায়- একসময় রায় জমিদাররা শাসন করত এই এলাকা, সে সময়ে হিন্দু অধ্যুষিত এই এলাকার হিন্দু জমিদারবাড়ী আর ধ্বংসপ্রায় কিছু মন্দির ও মঠ তার স্বাক্ষ্য দেয়। যতদূর বোঝা যায় বেশীরভাগ প্রজাই ছিল গরীব, যাদের বাস ছিল কোনরকমে মাথা গোঁজার ঠাই কিছু বাসস্থানে যার কোন স্বাক্ষর এখন পাওয়া যায় না। ছোটবেলায় শুধু এই এলাকার ঐশ্বর্যদের নাম জানতাম বইয়ের পাতা থেকে - বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, কবি শামসুর রহমান, আলাউদ্দীন আল আজাদ, ড শফিউদ্দীন আহমেদ প্রমুখ।
ভাবছিলাম আমার এলাকার পুরনো স্থাপত্য যা কিছু অবশিষ্ট আছে, তারই ডকুমেন্টেশন থেকে যদি এলাকার ঐতিহ্য নিয়ে কিছু জানা যায়, যদি জানা যায় তখনকার স্থাপতিক বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে কিছু। স্থাপত্যই তো ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে থাকে। সেই সুবাদেই খোঁজ পেয়েছিলাম ব্রজলাল চৌধুরীর এই বাড়ীর। প্রায় শতবর্ষিয়সী এই বাড়ীর বাইরের কাঠামোটা ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই। মাথার উপর ছাদ নেই এখন আর, আছে বিশাল আকাশ। বাড়ীর সর্বশেষ উত্তরাধিকারী ব্রজলাল বাড়ী ও তার চারপাশের জমি বিক্রি করে চলে গেছেন কাছাকাছি আরেক শহরে। শুনতে পেলাম, বাড়ীর বর্তমান মালিকও ভাবছেন বিক্রি করার কথা, দীর্ঘদিনের অব্যবহৃত এই বাড়ী এখন বাসস্থান সাপ-খোপ আর গরু-ছাগলের!!
২
৩
৪
৫
৬
৭
৮
৯
১০
১১
১২
১৩
১৪
১৫ দেয়ালটা যেন একটা ভাস্কর্য!