প্রথম-দৃশ্যঃ স্টিফেন হকিং এর সাম্প্রতিক টিভি ইন্টারভিউঃ
প্রশ্নঃ আগামীকাল যদি বিশ্বজগতের পক্ষ থেকে আপনাকে একটি বিরাট উপহার দেয়া হয়, উত্তর; তাহলে সর্বাগ্রে আপণি কোন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইবেন?
হকিং: আমি জানতে চাই, জগত অস্তিত্বশীল কেন? একেবারে না থেকে কেন কিছু না কিছু আছে?
হকিং বলেছেন, তিনি ব্যক্তিগত-ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন না। বিশ্বাস করেন বৈজ্ঞানিক নিয়মের মহান সৃষ্টিশীলতায়। তাঁর ভাষায়, ‘‘যখন তুমি বিশ্ব-জগতের বিশাল আকৃতির দিকে তাকাবে, দেখবে এর মধ্যে মানুষের জীবন কতইনা তুচ্ছ এবং আপতিক। কতই না অসম্ভব!’’
প্রশ্নঃ বিশ্ব-জগতে আমরা যে এতো তুচ্ছ এটি অবলোকন করে আপনার খারাপ লাগে না?
হকিং: ধর্ম, প্রাধিকার যার ভিত্তি আর বিজ্ঞান, যা পর্যবেক্ষণ এবং যুক্তি-বুদ্ধি নির্ভর – এতদুভয়ের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান। বিজ্ঞান জয়লাভ করবে। কারন এটি কাজ করে বা এর দ্বারা কাজ হয়।
সাক্ষাৎকারের পরের অংশে তিনি তাঁর সন্তানদের প্রতি তাঁর উপদেশের কথা বলেছেন, মানুষের ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক দায়িত্ব-কর্তব্যের কথা বলেছেন।
২য় দৃশ্যঃ প্রয়াত শহীদ বুদ্ধিজীব প্রফেসর ড. জি.সি. দেবের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনের সিনিয়র-মোস্ট প্রফেসর ড. আবদুল মতীন স্যারকে এক সেমিনারে বক্তব্য রাখার আগে নিজের হাতে তিনি সিনোপসিস লিখছেন, দেখেছি প্রায় পনের বছর আগে। ড. মতীনও ঠিক এই প্রশ্নই রেখেছিলেন আলোচনার শুরুতে, আমরা কেন? বিশ্ব কেন? এ রকম না হয়ে অন্যরকম হলো না কেন?
আসলে এই প্রশ্নগুলো বহু পুরনো। কেউ কারো কাছ হতে শিখে এ প্রশ্ন করে না। তবে অনেকেই অন্যদের কাছ হতে শুনে এগুলোর উত্তর ঠিক করে। এটি কূপমন্ডুকতা। ধার্মিক ও বিজ্ঞানবাদী – উভয় শিবিরে অধিকাংশ মানুষ এ ধরনের কূপমন্ডুকতার শিকার। (এ ধরনের শক্ত মন্তব্য করার জন্য দুঃখিত।)
এ ধরনের মৌলিক দার্শনিক প্রশ্ন সবার মনেই জাগে। চিন্তাশীল, বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবি, দার্শনিক তাঁরা যারা নিজে এর উত্তর বের করে; যদিও সে উত্তর অনেকের সাথে মিলে যায়। এই মৌলিক প্রশ্নে কোন ‘চূড়ান্ত বা শেষ উত্তর’ নাই। তবে আপাতঃ অর্থে বা অধিকতর গ্রহনযোগ্য কোন ‘সঠিক উত্তর’ আপনি পেতে পারেন। এটি পেতে হলে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে বিজ্ঞানকে। যদিও উত্তর পাবেন দর্শন-এর কাছ হতে।
১. ১৩ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ৮:৪৯ ০
এই কথা টা পুরাপুরি আমার মনের কথা। বিজ্ঞানকে ব্যাবহার করতে হবে, কিন্তু উত্তরটা দর্শনের হাতে।
তবে দর্শনের এখন দরিদ্র সময়, তাও আবার এই বিজ্ঞানকে ব্যাবহার করতে অপারগতার কারণেই। আজকে ইশরাকি দর্শন পড়তে পড়তে ভাবতাছিলাম সোহরাওয়ার্দীর সময়ে যদি মানুষ ডারউইন আর ডকিন্স পড়তো আর জিন আর মিমের বিষয় নিয়া চিন্তা করতে পারতো, তাইলে ইশরাকি দর্শনের চেহারাটা কেমন হইতো। পড়ে আবার ভাবলাম, এখন তো জানে, কিন্তু দর্শনের বিজ্ঞানহীনতা আর বিজ্ঞানের দর্শনহীনতা সেই যে শুরু হইল কয়েকশ বছর আগে, এর শেষ কবে?