somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুঃস্বপ্নের দুঃসময়...............

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঝুলবারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। গভীর রাত, শুনশান নিরবতা। ঘুমিয়ে পড়া শহর দেখতে ভালোই লাগছে। কেমন যেনো মায়া ছড়ানো, যা দিনের আলোয় উবে যায়। রাত জাগা পাখি একটা উড়ে গেলো, অজানা কোনো ঠিকানায়। গভীর রাত নিকষ অন্ধকার হওয়ার কথা থাকলেও, সেটা হয়না। হালকা আলো থেকে যায়। রাত্রিতে বুঝা যায় রাতের সৌন্দর্য। আগে একসময় দেখতামনা এই মায়াময়তা, সৌন্দর্যের প্রকাশ। এখন দেখি কিংবা দেখতে হয়। অভ্যাসের নদীরা পথ খুঁজে নেয়, খুঁজে দিতে হয়না।

অভ্যাসটা শুরু হয়েছিলো কিশোর বয়স থেকে। দুঃস্বপ্নের প্রচন্ড তাড়া খেয়ে উঠে বসতাম গভীর রাতে। শীতের রাতেও ঘামতাম অবলীলায়। কখনো কোনো পশু আমাকে তাড়া করে ফিরতো। কখনোবা আমি পড়তে থাকতাম সুউচ্চ কোনো স্থান থেকে। যে পড়ার আদি কিংবা অন্ত নেই। থাকতো শুধু শূন্যতা। কখনোবা দেখতাম এলোমেলো ছবি যার কোনো মাথামুন্ডু নেই, মিলাতে গেলে আরো বিশৃঙ্খ্যল হয়ে যেতো ছবিগুলো। রুপ নিতো ভয়ঙ্কর কোনো বস্তুর। হয়তো নিজেই পরিবর্তিত হতাম অন্যকিছুতে কিংবা পরিবর্তিত বস্তুর তাড়নায় ঘুরে ফিরতাম। এক একটা রাত ছিলো দুঃসহ। যার দরুন রাত পরিনিত হয়েছিলো ঘুমের সমাধিক্ষেত্রে। অসহ্য যন্ত্রনায় কাটতো এক একটা রাত। নিঃসঙ্গ রাত। একাকীত্বের রাত।

রাত্রীর উপভোগ্যতা টের পেয়েছিলাম কিছুদিন পরেই। যান্ত্রিক যুগের কৃত্তিম বলয়ে নিজেকে সঁপে দিয়ে। খুঁজে পেয়েছিলাম আমার মত অসংখ্য যন্ত্রনায় দগ্ধ মানুষকে। যাদের সংস্পর্শে আমার রাতো আলোকিত হয়ে উঠছিলো, হয়ে উঠছিলো বর্ণিল। একসাথে আমরা ভাগাভাগি করে নিয়েছিলাম রাতের দুঃস্বপ্নকে যা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হয়ে উঠেছিলো নির্জীব। তার নির্জীবিতা আমাদের কাছে ছিলো উল্লাসের বিষয়, আমাদের উপভোগ্যের বিষয়, তামাশার বিষয়। তাকে কাঁটাছেড়া করতাম জীববিজ্ঞানের ল্যাবের ব্যঙ এর মত করেই, সে বেঁচে থাকুক কিংবা মরে যাক সে বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ ছিলো কমই। ভালো লাগতে শুরু করেছিলো রাতের চাঁদ, হিমেল হাওয়ার পরশ। অন্ধকারে জেগে থাকা স্ট্রীট ল্যাম্পের মায়া ছড়ানো আলো। তেমনি কোনো এক রাতে আমার সাক্ষাত হয়েছিলো পৃথিবীর সবচেয়ে মায়া ছড়ানো মানুষটির সাথে, কোনো এক য়ান্ত্রিক সভ্যতার ঘরে। তার হাসি, খুশি, ক্রোধ, কিংবা হেয়ালী সব কিছুই মায়াময় মনে হতো। কথা হতো আমাদের কবিতার ছন্দ মিলানোতে, কথা হতো জীবন যুদ্ধের কঠিন সময় নিয়ে, কথা হতো গল্পের উপসংহার নিয়ে। হয়তো মিলে যেতো আমাদের অধিকাংশই। কিংবা মিলিয়ে নিতাম জয় পরাজয়ের মাধ্যমে। যেখানে পরাজয়ের স্বাদই ছিলো বেশি আনন্দের। তার মন খারাপটুকু নিয়ে নিয়ে হাসি ফিরেয়ে দেওয়াই সচেষ্ট ছিলাম, ছিলাম স্বপ্ন দেখায়। স্বপ্ন গুলো আকাশ ছোঁয়া হলেও বাস্তবতায় নিয়ে আসায় সচেষ্ট ছিলাম। স্বপ্ন দেখতাম হাসিমুখের, স্বপ্ন দেখতাম হাটছি দুজনায় কোনো উত্তাল সাগরের পাশ দিয়ে একে অন্যের বাহুডোরে আবদ্ধ হয়ে। সূর্যটা উঠছে কিংবা ডুবছে সেদিকে আমাদের ভ্রুক্ষেপ নেই, আমরা হাটছি পানির সমান্তরালে সামনের দিকে পিছনে ফেলে দুঃস্বপ্ন, দুঃসময়কে।

ঝুলবারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। রাত্রি উপভোগ করছি। হিমেল পরশ শরীর জুড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে। স্বপ্ন পুরনে কয়েক ধাপ বাকি। তারপর একটি হাত আমার হাতের মুঠোর ভিতর থাকবে, যখন সুউচ্চ স্থান থেকে পড়বো সে আঁকড়ে ধরে রাখবে। কখনোবা ঘর্মাক্ত আমার ঘাম মুছিয়ে দিয়ে প্রশ্রয়ের হাসি দিবে। পরিবর্তিত যন্তুর সামনে সে দাত কেলিয়ে হাসবে কিংবা আমরা দুজনেই হাসি দিয়ে ভড়কে দেবো তাকে। আমরা হবো দুঃস্বপ্নের দুঃসময়।



উৎসর্গঃ প্রিয় দুইজন মানুষ, কবি, লেখককে। তাদের ভবিষ্যত শুভকামনায়।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১২ রাত ১১:৪১
৬৫টি মন্তব্য ৬৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×