somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আলোয় ঢাকা বন্ধুর পথ......

১৭ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অতঃপর মেয়েটি দিগ্বিদিক না তাকিয়ে তার গন্তব্যে এগিয়ে চললো। অদূরে থেমে থাকা ছোট্ট যানটিতে চেপে বসলো শেষমেশ। অনেকদিন পর তার চোখে শ্রাবণের জল নেমেছে। এ বড় কাঙ্খিত বিষয় তার। কুপকুপে এক আঁধার পেরিয়ে এসেছে সে। এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে- পৃথিবীর সেরা একটা কাজ সে করতে পেরেছে। পেছনের চোখগুলো তাকে ভাবিয়ে নিয়ে যায়। অনেকগুলো কচি হাত একসাথে নেড়ে ওঠে পড়ন্ত বৈকালিক বাতাসে। খোলা হাওয়ায় নির্জন পথ ধরে মেয়েটিকে নিয়ে চলছে তিনচাকা বিশিষ্ট যানটি। আচমকা পেছনে ফিরে যায় সে। ভাবনার দরজায় হাজারো বাতাস ছুঁয়ে যায় এক নিমিষেই।

একরাশ শরত ভোর তাকে নিয়ে যায় এক প্রশান্তির মায়ায়। সেখানে সে অপেক্ষায় মগ্ন ছিলো কারো জন্য। কেউ আসেনি সেই সময়ে। বিশিষ্ট মানুষটি তাকে এড়িয়ে গিয়েছিলো কোনো এক অজানা কারণে। তারপর সমস্ত অপেক্ষার পাঠ চুকিয়ে ফেলে সে। দূর থেকে শুনতে পায় অদ্ভুত মায়াবী ধ্বনি- 'তুমি ভুলপথে নেই ঋতু, তুমি তোমার সব ক্ষণকেই ভেবে নাও বসন্ত। চারপাশে বর্ণিল ফুলের মেলা। ফুল ফুটবে, ঝরবে। ঝরা ফুল দেখে কষ্ট পেওনা। ওগুলো তুমি সুতোয় গেঁথে জড়িয়ে নাও তোমার হাতে। দেখবে, কী ভালোবাসাই না তুমি অনুভব কর।' চমকে যায় ঋতু। কেউ নেই। শুধূ ধু- ধু মরুভূমি। সেই ছো্ট্ট সময়ে সে ভালোলাগা আর ভালোবাসার পার্থক্যটি পড়েছিলো কোনো এক লেখকের সৃষ্টিতে। শীতের ভোরে ব্যালকনিতে বসে চা খেতে খেতে রাস্তার মোড়ে হেঁটে যাওয়া শরত সকালের শিউলির মত এক শিশুকে দেখে ভেতর থেকেই উচ্চারিত হয়, আহা! কী সুন্দর! মেয়েটি মোড় ঘোরার সাথে সাথেই তার সেই ভালোলাগাও ছিটকে যায় আবার সেই ভালোলাগা অনুভূতি চোখের যাদুতে লেগেও থাকতে পারে। কিন্তু ভালোবাসা!! সেই নদীতে নাকি বিশাল ঝড় ওঠে। মানুষজন কূল খুঁজে পায়না। হায়রে কূলহীন ঠিকানা!

সত্যিই কি তার কোনো নদী ছিলো? ভালোবাসার নদী?! ডুব সাঁতার কি সেও দিতো? এখন তার ভালোবাসার ছায়ায় অনেকগুলো ভোরের মুখ ফুল ফোটায়। বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ফুল। তাদের আপাদমস্তক অন্যরকম আলোতে ছেয়ে থাকে। এ যেনো চাঁদের আলো নয়, সূর্য্যের আলো নয়। স্বপ্নের এক আদুরে আলো সর্বক্ষণ আটকে থাকে ফুলশিশুদের চোখেমুখে। এ আলোর ছোঁয়ায় নিজেকেও রাঙায় মেয়েটি। কোনো কষ্টকে আর কষ্ট ভাবেনা সে। জগতের সকল কষ্ট কাঁটাহীন ফুল হয়ে ফুটে ওঠে তার কাছে। কখনোবা বকুল, হাস্নাহেনা কখনোবা শিউলি, কামিনী। তার একটা অসাধারণ জগত আছে। এখানে অনেকগুলো কচিকোমল মুখ আছে, তারই অপেক্ষায় দিনগুজরান করে তারা। ওদের দেখলে মনে হয়- সুখের শুরু এখানেই।

এভাবে পথ চলতে চলতে তার পথ একসময় শেষ হয়। স্বপ্ন আর শেষ হয়না। প্রতিটি মুহূর্ত তার কাছে সেরা মুহূর্ত মনে হয়। সবকিছুকে সাদরে অভ্যর্থনা জানানোর কৌশল সে বেশ ভালোই রপ্ত করেছে। কুপকুপে আঁধার তাকে আর স্পর্শ করতে পারেনা। আঁধারেরা ভয় পায় তার আলোকিত পথকে। যে পথে তার অভিনব যাত্রা, সেই পথেই তার কত কি জানার বিষয় ডালপালা মেলে চেয়ে থাকে। সেই ডালে অসংখ্য ফুলকলিতে ভরা স্বপ্নরা হাতছানি দেয় মেয়েটিকে। মেয়েটি হাত বাড়ায়। কী অদ্ভুত!! এখনতো চৈত্রের শুরু, কিন্তু বসন্তের টুকটুকে রঙ তার হাত রাঙিয়ে দেয়। বর্ণিল ফুলেরা হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়ে তার পায়ের পাতায়। তার আর দুঃখ কি!! বিশ্বপতির কাছে তার আর কিছুই চাওয়ার নেই। থাকুক এমন বসন্ত ছোট্ট শরীরের আদিগন্ত মনের উঠোন জুড়ে। এ উঠোন, বন্ধুর হলেও ভয় নেই। আলোয় হাঁটা যাবে ঠিক পথ ধরে......
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×