
এভিয়ান ইনফ্লুয়েন্জার ইতিহাস এর দিকে যদি আমরা তাকাই তাহলে দেখা যায়, ১৮৭৮ সালে ইতালীতে এটা প্রখম দেখা যায়। ১৯১৮ সালে এটা স্পেনীস ফ্লু নামে মহামারী আকারে এটা দেখাদিয়েছিল যাতে প্রায় ৪ কোঠি লোক মারা গিয়েছিল । ১৮৫৭ সালে এশিয়ান ফ্লু নামে এককোঠি বিশলক্ষ লোক আর ১৯৬৮ সালে হংকং ফ্লু নামে মহামারীতে ৭০ রক্ষ লোক মারা যায়।



এভিয়ান ইনফ্লুন্জা কি?
এটা ইনফ্লুন্জা ভাইরাস এর একটা প্রজাতি। সাধারন ইনফ্লুন্জা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির একটু জ্বর, কাশি, মাথাধরা, সদ্দি বা শরীরে একটু ব্যথাবেদনা হতে পারে যা ৫-৭ দিনের মধ্যে আপনা আপনি ভালো হয়ে যায়। কিন্তু এভিয়ান ইনফ্লুন্জাতে আক্রান্ত রোগীর মারাত্বক নিউমোনিয়া হয় এবং যার ফলে প্রায় ৬০-৮০% লোক মারা যায়।
ইনফ্লুন্জা ভাইরাস

ভাইরাস এর বাইরের প্রোটিন আবরনের প্রকার ভেদে এটাকে এইচ এবং এন দিয়ে ভাগ করা হয়। বর্তমানে যে ভাইরাসটি বার্ড ফ্লু করছে এটা এইচ৫এন১ নামে পরিচিত। চারিত্রিক গত কারনে এটা অতীথি পাখি, হাস মুরগীর মাধ্যমে ছড়ায়।সবছেয়ে মজার ব্যপার হলো যদিও এটা অতিথি পাখি বা হাস এর মাধ্যমে ছড়ায় তবে অতিথি পাখি বা হাস নিজে এটাতে আক্রান্ত হয়না। শুধুমাত্র ভাইরাস শরীরে বহন করে। কিছুটা স্বস্তির বেপার একটাই এখন পর্যন্ত মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ানোর সম্ভাবনা তেমন নাই। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের ভয়ের কারন একটাই এই এইচ৫এন১ ভাইরাস হাস অথবা শুকরের শরীরে গিয়ে মিউটেশন বা বিভাজিত হয়ে যে কোন সময় একটা নুতন প্রজাতির ভাইরাস এর জন্ম হতে পারে যেটা মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ানোর ক্ষমতা রাখে, আর এটা যদি হয় তা মহামারী আকারে সারা পৃথিবীতে দাবানলের মতো ছড়িয়ে যাবে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাবে।
বাংলাদেশের চিত্র
এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৪৭টি জেলা এভিয়ান ইনফ্লুন্জায় আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে একজন এভিয়ান ইনফ্লুন্জায় আক্রন্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে।২২শে মে ২০০৮ সালে ১৫ মাসের এক শিশু জ্বর, কাশি এবং স্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে পরে পরীক্ষায় তার শরীরে এইচ৫এন১ ভাইরাস পাওয়া যায়।
কারা আক্রান্ত হতে পারে
১। হাসমুরগীর খামারে কর্মরত শ্রমিকরা
২। হাসমুরগী নিধনের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা
৩। বাজারে যারা হাসমুরগী বিক্রয় এর সাথে জড়িত
৪। ঘরবাড়ীতে যারা আক্রান্ত হাসমুরগীর সংস্পর্শে আসবে তারা।
৫। স্বাস্থ্যকর্মী যারা রোগীর সেবায় নিয়োজিত থাকবে তারা।
কি ধরনের লক্ষন হয়
হাসমুরগীর সংস্পর্শে এসেছে এধরনের কোন লোকের যদি জ্বর, সর্দ্দিকাশি, মাথাধরা, গায়েব্যথা এবং পরে স্বাসকষ্ট হয় এবং এক্সরে তে নিউমোনিয়া পাওয়া যায় তবে তাকে এভিযান ইনফ্লুন্জার পরীক্ষা করতে হবে।
কিভাবে প্রতিরোধ করা যাবে
১। হাসমুরগীর খামারে কর্মরত শ্রমিক পায়ে লম্বা গামবুট পরতে হবে, হাতে গ্লাভ্স এবং মুখে মাস্ক পরতে হবে।
২। হাসমুরগীর মাংশ ভালো করে সিদ্ধকরে খেতে হবে।
৩। হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী লম্বা গাউন, পায়ে গামবুট আর মুখে মাকস পরতে হবে।
৪। শিশুদের গৃহপালিত হাস মুরগী থেকে দুরে রাখতে হবে।
৫। ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে খেতে হবে।

