জন্ম নিয়ে ডেকে ছিলাম ছোট্ট নামটি ‘মা’
দ্বিগুণ স্বরে ডেকেছি তাহা যখন হাটি-হাটি পা।
শিশু থেকে একটু একুট করলেন প্রভূ বড়,
হৃদয় নিংড়ানো মায়ের আদর সবই ছিল জড়।
উঠানেতে মনের সুখে খেলতাম সারাক্ষণ,
কাজের ফাঁকেও বলতেন মা কইরে বাছাধন।
বাল্য বেলা পেরিয়ে যখন কৈশরতে পা,
দুষ্টামিতে ঘুরছি শুধু আমার ছোট্ট গাঁ।
সন্ধ্যে বেলায় পড়তে বসে আসতো যখন নিঁদ,
বকুনি দিতেন ‘মা’ জননী আমার হত জিদ।
পড়ার ফাঁকেও ঘুমিয়ে পড়েছি বহি খাতার পরে,
‘মা’ জননী ঘুম ভাঙ্গাতো কত আদর করে।
উঠ বাবা খাবার খেয়ে ঘুমাও বাছাধন,
ছেলের তরে মায়ের হৃদয় কত বিচক্ষণ।
কৈশর পেরিয়ে যৌবনেতে করলাম পর্দাপণ,
অমীয় বাণী ও সাবধানতায় রাখছে সারাক্ষণ।
ঐ বয়সে আমার জীবনে আসলো প্রবল ঝড়,
সে ঝড়েতে ‘মা’ আমার কেঁদেছে অনর্গল।
ডাক্তার বলেন জীবন আয়ু নাইকো তাহার আর,
এমন কথায় মায়ের হৃদয়ে পড়লো হাহাকার।
রাত্রি জেগে প্রভূর নিকট দোয়া করতেন মায়ে,
সে কথাটি পড়লে মনে হৃদয় ফেটে যায়!
কেঁদে কেঁদে প্রভূর নিকট হতেন আত্মহারা,
সন্তান তরে সকল ‘মা’ এমন পাগল পারা।
মায়ের দোয়া প্রভূর সাথে কোন পর্দা নাই,
সরাসরি কবুল করেন আল্লাহ মালিক সাঁই।
সে দোয়াতে প্রভূ আমার করলেন জীবন দান,
সাথে সাথে সাজিয়ে দিলেন একটি ফুল বাগান।
সে বাগানে ফুটলো আজ চারটি তাজা ফুল,
“হে প্রভূ” ফুলগুলোকে তোমার রাহে কর কবুল।
‘মা’ আমার চলে গেলেন এ দুনিয়া ছেড়ে,
জীবন বাঁকে দুঃখ আমার গিছেয়ে দ্বিগুণ বেড়ে।
বছরের পর বছর গেল, মায়ের কবর খানি,
দেখিনি আজো চোখে,
হৃদয় জ্বালা দাবিয়ে রেখেছি পাথর চেপে বুকে।
দিবা নিশি কেঁদেছি আমি আজো কাঁদি হায়,
শান্তিতে রেখো মাকে প্রভূ যেমন কোলে রেখেছে মায়।
সকল গুনাহ মাফ করে দাও তুমি গফুর ও গাফ্ফার,
কবর খানিরে আলোকিত কর সকল ক্ষমতা তোমার।
বিচার দিবসে তুমিই রহমান, রহীম সকল মানুষ জানে,
জান্নাতেরই আটটি দ্বার খুলে দিও প্রভূ আমার মায়ের শানে।