জাতীয় দলের খেলোয়াড় ফুল মিয়া। সময়ের আলোচিত কিংবা সমালোচিত এক নাম। মহা প্রতিভাবান(!) কিন্তু খুব দরকারের সময় ঠিক মত জ্বলে না উঠার এক অপরূপ দক্ষতা আছে ফুল মিয়ার। বিভিন্ন মহলের কাছে ফুল মিয়া বিভিন্ন নামে পরিচিত। তবে বেশিরভাগ মহলের কাছে এই খেলোয়াড় এক হাস্যরসের আর এক নাম। আসুন তবে জেনে নেই, ফুল মিয়াকে নিয়ে কার কি মত / অভিব্যক্তি।
জাতীয় দলের অন্য খেলোয়াড়দের কাছেঃ
ফুল মিয়ার মত এরকম খেলোয়াড় ভবিষ্যতে আর আসবে কি না সন্দেহ। সে খুব প্রতিভাবান। তার নিজের দিনে সেই রাজা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তার ব্যাট হাসতে ভুলে গিয়েছে।
আসলে তাদের যা বলা উচিত ছিলঃ
ফুল মিয়া না খেললেই ভাল। তাহলে আমরা সম্মানজনকভাবে হারতে পারতাম।
নির্বাচকমন্ডলীর কাছেঃ
ফুল মিয়ার কমিটমেন্ট আমাদের জানা আছে। প্র্যাকটিসে সে খুব মনযোগী ছাত্র। তার অনেক ভাল ভাল রান আছে, আরো আছে জেতার রেকর্ড। তাকে আর একবার সুযোগ করে দিলাম। আশা করি সে এবার ভাল খেলবে। না খেললে বাদ দেয়া হবে।
আসলে তাদের যা বলা উচিত ছিলঃ
ছেলেটাকে খেলায় নিয়ে মান সম্মান যা ছিল সব গেল!
কোচের কাছেঃ
অসাধারণ প্রতিভাবান ফুল মিয়া। আমি তাকে অনেক কাছ থেকে দেখেছি। আমার কথা সে খুব মন দিয়ে শোনে আর মেনে চলে। প্র্যাকটিসে সবার আগে আসে এবং অনেক সময় ধরে ব্যাটিং করে।
আসলে কোচ যা বলতে চায়ঃ
সব ঠিক মতই করে কিন্তু ...............
অধিনায়কের কাছেঃ
ফুল ভাই আছে দেখে আমাদের টিম বেশ স্ট্রং। আমাদের দিনে আমরা যেকোন টিমকেই হাড়াতে বদ্ধপরিকর।
যা বলতে চায়ঃ
কেন যে ফুলটাকে নেয়া হল! আজ মাস্ট আমরা হেরে যাবো।
ফুল মিয়ার কাছেঃ
খেলায় নেয়ার আগে আমাকে বলে দেয়া হয় ভাল না খেললে পরের ম্যাচে বিদায়। এভাবে আমার সাথে করলে আমি ঠিক মত খেলতে পারি না। (মামু বাড়ির আবদার আর কি!) আমাকে আরো সুযোগ দেয়া হোক।
কিন্তু মন যা বলতে চায়ঃ
বাবা রে! তোরা এইবার আমারে ছাইড়া দে! অনেক তো হইলো।
মিডিয়ার কাছেঃ
শতাব্দীর সেরা আবিষ্কার ফুল মিয়া। তাকে নিয়ে বলতে গেলে প্রথমেই চলে আসে তার ক্রিকেট জ্ঞান। অসাধারণ প্রতিভাবান এই খেলোয়াড়ের আছে বড় বড় দলের সাথে গুড ইনিংস খেলার রেকর্ড। বার বার সে তার প্রতিভার সাক্ষর রেখে চলেছেন। ব্লা ব্লা ব্লা.........।।
অথচ যা বলা যেতঃ
আর কত নিউজ ওর পক্ষে করলে সে ভাল খেলবে?
সাধারণ জনগণের কাছেঃ
ওই হা**** রে যে কেন বার বার খেলায় নেয়! ওরে ধইরা থাপরানো উচিত। বেয়াদব একটা। বিপ বিপ বিপ ............। (চরম অশ্লীল ভাষা হওয়ায় সেন্সর ছাড়পত্র পায় নি!)
দিনমজুর কিংবা প্রত্যন্ত গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের কাছেঃ
ফুল মিয়া! এইটা আবার কে? ক্রিকেট কি খায় না মাথায় দেয়। আর ফুল এইটা আবার কোন কাননের ফুল? এইসব ভাই বড়লোকের কারবার। আমাদের কাছে এইসব জানতে চাওয়ার মানে কি?
সবশেষে আমি যা বলতে চাইঃ
আশরাফুলের ট্যালেন্ট আছে এ কথা অস্বীকার করছি না। তার ম্যাচ জেতানো অনেক খেলা আমি দেখেছি। নিজের দিনে ফুল মিয়া অনবদ্য এক খেলোয়াড়। বিশ্বের নামী দামী সব খেলোয়াড় ফুল মিয়ার ট্যালেন্ট সম্পর্কে অবগত। কিন্তু এত এত সুযোগ তার সামনে আসার পর ও সে সেটা কাজে লাগাতে পারে নি। আমি তার মধ্যে যে ব্যপারগুলোরে অভাব দেখেছি তার মধ্যে আছে কমিটমেন্ট, ভাল খেলার মানসিকতা, ধৈর্য্য এর অভাব, নিজের উপর বিশ্বাসের অভাব ইত্যাদি। এতকিছুর অভাবের কারণেই ফুল মিয়া একাধারে একই ভুল বার বার করে যাচ্ছে। যা টানা অব্যাহত আছে। তাই সময় থাকতেই সাবধান হওয়া জরুরি হয়ে পরেছে। তাকে যে পরিমাণ সুযোগ দেয়া হয়েছে এরকম হয়তো জাতীয় দলের সাবেক কোন খেলোয়াড়কেই দেয়া হয় নি।
ফুল মিয়ার এখন দরকার তার মাঝে যে অভাব গুলো আছে সেগুলো কাটিয়ে উঠা। কারণ সেটা না করতে পারলে ফুল মিয়ার বিকল্প ভাবার সময় চলে এলো বলে।