ইনসোমনিয়াক ক্লাব(আমাদের ফেসবুকে একটা শাখা আছে) এর এক বছর পুর্তির পরও আমাদের প্রেসিডেন সাব না খাওয়ানোর জন্য সুযোগ খুঁজছিলেন। এদিকে রাঝাসের খাওন মিস হওয়ার ভয়ে প্রবল হাউ কাউ এর ঠেলায় ইনসোমনিয়াক গন অনিচ্ছা সত্বেও ঘুম ও ঝিমুনি ভেঙ্গে আড়মোড়া ভেঙ্গে ঠেলে উঠে দাঁড়ায়। আইলসার দলের খাইতেও নারাজির অবস্থায় একের পর এক ডেট পিছাইতে থাকে। অবশেষে হামা ভাই এর প্রবল কন্সপিরেসীতে প্রেসিডেন সাব অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঘোষণা দেন আজ ৩০ তারিখ দিবা ১১ ঘটিকার সময় উনি চিড়িয়াখানার সামনে শুকনা মুখে হাওয়াই মিঠাই খাবেন। কেউ আইলে আইলো, না আইলে উনি একাই মিরপুরের সকল হাওয়াই মিঠাই সাবাড় করবেন!
বেগতিক দেখে ভ্যাব্লা পু , মুনাপ্পি , সাম্প্রতিক ব্লগের হার্টথ্রব কবি নাহোল, মিরাজ হয়, কবি আ.. থুক্কু ফাহাদ ভাই, বিশিষ্ট গাতক, কবি ও +++++++ খ্যাত অমিত, সমুদ্রকন্যা প্রভৃতি নায়ক নায়িকা গন আসিতে আজ্ঞা দেন।
ঘুম ভাইঙ্গা ইনসমনিয়াকদের ১১টায় আসার কথা থাকলেও হাজির হন ১টার দিকে। তাও চিড়িয়াখানায় নয়, বোটানিক্যালে! এখান থেকেই শুরু হয় ঘুরান্তিস পর্ব। আর কথা নয়, আসেন ছবিতে যাই।
ওরা এগারো জন (একজন নাই, নামাজ পড়তে গেছেন প্রেসিডেন সাব)
উপস্থিত অবিবাহিত পুরুষগন (দুইজন তখনো ঝিমায়া ক্লাবের মান সুলেমান রক্ষায় ব্যাস্তঃ ইয়ে, ব্লগের নারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনি কি বিবাহিত? )
উপস্থিত একজন ইনসোমনিয়াক ও আরেকজন হবু ইনসোমনিয়াক
ইনি বেশ সুরেলা গলায় গান করে সাহায্য চাইতেছিলেন। সামনের গামলাটা বাদ্যযন্ত্র, অদ্ভুত দক্ষতায় বাজাচ্ছিলেন সেটি!
সাড়ে তিন একর জমির উপর গোলাপ বাগান, আমরা এতো গোলাপ দেখে বিমোহিত। (কিন্চিৎ ক্ষুব্ধও বটে! ছিড়তে পারিনাই! )
বোটানিক্যাল থেকে বেরিয়ে ঢুকে পড়লাম চিড়িয়াখানা। ঢুকেই বস রে সালাম জানাইতে গেছি, দেখি বস ইনসোমনিয়াক দের সম্মানে ঝিমাইতেছেন
ব্যাঘ্র দেইখা মিরাজ খুশী, রানা ভাই তখন সিংহ খুজতেছেন। আমি ভাবতেছি খামু কখন! খিদা লাগছে!
বাঘ, সিংহ কি আমি ডরাই?
ভাংতে পারি প্যারানয়েড কড়াই!
অবশেষে সিংহী সাহেবানের দেখা মিলিলো। উনি ভেংচি ইমো দিয়ে ইনসোমনিয়াকদের স্বাগত জানাইলেন। পরে জানা গেলো ইনি ভারতীয় সিংহী। শুইনা নাহোলে কয়, যেই বেটা এইডা আনসে সে নিশ্চয়ই ভাদা!
দেরীতে আসা ভ্যাব্লাপ্পি তখন ভাষণ দিতেছেন, "জাতির জীবনে ক্যানো চিড়িয়াখানা ভ্রমন গুরুত্বপূর্ণ!"
ভ্যাব্লাপ্পি: এইটা হইলো নিশিবক।
নাহোল: ইয়াল্লা! কি কিউট!
তিথীপুঃ নিশিবক কি এ বি সি ডি পড়তে পারে? এই দেখি সবাই পড়ো.।
হামা ভাই: ধুর! এই টা কোন নিশি হৈলো? ঐ যে কত নিশি হাইটা যায়!
টীম ইন এডভান্স!
হীরামন দম্পতি। পুরুষটি যথারিতী ইনসোমনিয়াক!
এই পাখিটার নাম জানিনা।
খিদার চোটে তখন আমি আর রাঝাস বুট চিবাই!
নীলগাই (মাগার বডি ইজনট নীল!)
জিরাফের কালার দেইখা রানা ভাই কইলো, বডি কালারটা ঠিক ফুটেনাই! আমি কৈলাম, বাংলাদেশের আবহাওয়া স্যুট করতেছে না!
সোহানরে আগেই কৈছিলাম, বাইরে ঘুরাঘুরি না কৈরা বান্দরের খাঁচায় ঢুইকা পড়তে!
উনারাও পুর্বপুরুষদের কথা স্মরণ করিলেন গাছে উঠে!
উঠলাম তো! এখন নামি ক্যামতে?
ভদ্রলোক পশ্চাৎপ্রদর্শনই করিয়া গেলেন!
ঘোরা শেষ! চল খাইতে যাই! চিড়িয়াখানা থেকে বের হয়ে বাসে করে সোজা মিরপুর ১! খিদায় সবাই আহত/নিহত!
রানা ভাই হিসাব কষতেছে, খরচ কতো পড়বো! আল ছালা দিয়া ঢাকা হোটেলে যামু না ফ্রেন্ডসে!
দুই পাপী বান্দা
তখনো খাওন আসেনাই! খিদায় আমি ঘুমায়া যাইতাছি! এদিকে খাওন আসতেছে শুইনা হামা ভাই উত্তেজিত হয়া ভাষণ শুরু করছে!
খাওনের গন্ধে গন্ধে শেষ সময়ে হাজির ফাহাদ ভাই! আইসাই তিন নারীর কোপানলে!
বিল দেওনের পর রানা ভাই এর করুণ মুখ!
আসল মজাটুকু হয়েছে ঠিক এর পরেই। ওখান থেকে রানা ভাই এর বাড়ীর ছাদে। গিটার নিয়ে অমিত। আমি হামা ভাই, সোহান, রানা ভাই অমিত গলা মিলিয়ে গান গাইলাম রাত ৮টা পর্যন্ত! উৎসমুখে থেকে শুরু করে জেমস, আর্টসেল, সন্জীবদা, বাপ্পা দা সহ অনেক গান কভার করা হৈলো।(ইয়ে, বুরকা পরা মেয়েও গাওয়া হৈছে!)
এর মাঝে পাশের ছাদ থেকে এক যুবকের প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া, আপনারা কি ব্যান্ড করেন? আমরা একটু থমকে গিয়ে বললাম, না। পরের প্রশ্ন, আপনারা গান করেন? আমরা বললাম, হ্যা! উনি তখন উনার লেখা গান গছায়া দেওয়ার চেষ্টা শুরু করলেন! পরে সোহানের গলার গান শুনে ছাদ থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। ছাদ থেকে লাফ দিয়েছিলেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হয়নি!
সময় শেষ হয়ে যায়, চলে আসি আমরা যার নীড়ে। কিছু রেশ রয়ে যায়। গুন গুন করে তখন সবার মনে গান-
উৎসমুখে আসতে হলে
ভিজতে হবে চোখের জলে...