আগামীকাল নারায়নগঞ্জে নির্বাচন। গত মাস কয়েক আগে আমার এলাকায়ও নির্বাচন হয়েছিল। সুদূর ঢাকা থেকে সাত সমুদ্র পেরিয়ে ভোট দিতে গিয়েছিলাম বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়া ইউনিয়নে আমার নিজ জন্মভূমিতে।
নির্বাচন সম্পূর্ণ সুষ্ঠ। কিন্তু জয়ী হয়েছেন যিনি প্রার্থীদের মধ্যে ৫ নম্বরে থাকার কথা ছিল!!!
আসুন জেনে নেই তার বিজয়ী হওয়ার বীরত্বগাথা। উসমানিয় সাহাবীরা অবশ্য এটার এপ্লাই করতে পারেন নারায়নগঞ্জ নির্বাচনে।
আজ রাতে প্রতেক পুলিং অফিসারদের ফোন দেবেন unknown number থেকে। সরকারী দল যেহেতু সেহেতু আপনার কথা শুনতে তারা বাধ্য।
এরপর ফোন দিবেন এলাকার বিরোধীদলীয় প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রের বিরোধীদলিয় নেতা ও এজেন্টদের। শুধু তাদের খোঁজ খবর নিবেন। আপনি একজন প্রার্থী হিসেবে খোঁজ খবর নেওয়ার অধিকার অবশ্যই আপনার রয়েছে। দেখবেন আপনার এই মহানুভবতায়ই কাজ হয়ে গেছে। খবরদার কখনো তাদের হুমকিমূলক কথা উচ্চারণ করবেন না।
আপনি জনসংযগের নামে এলাকায় বিরোধী দলীয় নেতাদের বাড়ীতে যাবেন এবং সুন্দরভাবে আপনাকে ভোট দেওয়ার জন্য অনুরোধ করবেন। তারা যদি ভোট দিতে অপারগতা স্বীকার করে তবে অন্তত তাদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার বিনীত অনুরোধ করবেন।
ভোটের দিন সকালে ক্যাডার বাহিনীদ্বারা পুরো ভোট কেন্দ্র পরিবেষ্টিত করতে হবে। প্রয়োজনে পাশের এলাকা থেকে লোক ভাড়া করতে পারেন। নির্বাচন কমিশনের এত ঠেকা পরেনাই যে বহিরাগত খুঁজে বের করবেন। আর যথেষ্ঠ সংখ্যক ক্যাডার থাকলে কেউ অভিযোগ করার সাহস পাবেনা।
ভোট কেন্দ্রে স্ব উদ্যেগে বিরোধীদলীয় নেতাদের সেল্টার দিন। তাদের পাহাড়া দেয়ার জন্য ১০ - ১৫ জনের টিম নিয়োগ করুন এবং তাদের বিনীতভাবে বলুন কেউ যেন তাদের কোন ক্ষতি করতে না পারে এইজন্যই এই পাহাড়ার ব্যাবস্থা।
মহিলা বুথে ভয়ঙ্কর চেহারার পুরুষ এজেন্ট নিয়োগ করুন। তার বুকে ঝুলানো মার্কাটি অবশ্যই দৃশ্যমান হতে হবে। তার কাজ হবে প্রত্যেক মহিলার দিকে কড়া দৃষ্টিতে তাকানো। দেখবেন এতেই কাজ হবে।
এছাড়াও আরেকটি সুর উটিয়ে দিন আপনার প্রার্থী জিতে গেছে। ভোট দিলেও জিতে গেছে না দিলেও জিতে গেছে।
দুপুরের পরেই দেখবেন ভোট কেন্দ্র খালি। এবার আপনি আপনার কাজ করুন। জাল ভোটের ব্যবস্থা। জাল ভোট দিবে সব বহিরাগতরা। তখন অবশ্য জাল ভোট দিতে সমস্যা হবেনা কারন ততক্ষনে উপরোক্ত পদ্ধতির কারণে বিরোধীরা রণভঙ্গ দিবে। বিরোধী এজেন্টদের জানিয়ে দিন তাদের কোন নেতা কর্মী ভোটের মাঠে নেই। দেখবেন তারা চুপসে গেছে। তবে এটি পুরুষ কেন্দ্রের চেয়ে মহিলা বুথে বেশী এপ্লাই করুন।
তবে সাবধান! কোন ক্রমেই এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রের বাহিরে যেতে দিবেননা। নির্বচনী ফলাফলে সাইন করার পরেই তাদের যেতে দিবেন।
আমার এলাকার বর্তমান চেয়ারম্যান বিশিষ্ট চর খেকো, জলদস্যু, চাঁদাবাজ জনাব জামাল মোল্লা এভাবেই নির্বাচিত হয়েছিল।
আশা করছি এসব পদ্ধতি অবশ্যই ভালো কোন ফলাফল দিবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ৯:১৫