৭১' এর মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর অসামান্য অবদান!!!
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সেসময়কার প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর রয়েছে অসামান্য অবদান। তিনি শুধু এক কোটি বাংলাদেশীকে আশ্রয় ও খাওয়া-পরার ব্যবস্থাই করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করেন। আর বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্বের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালিয়েছেন। এমনকি মার্কিন রক্তচক্ষুর বিপরীতে এক অনন্য অবস্থানও নেন তিনি।
বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য ভারতের বিরুদ্ধেও পাকিস্তান যুদ্ধ ঘোষণা করলে সেখানেও এক হয়ে পকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনি যুদ্ধের নির্দেশ দেন। বাংলাদেশের লাখ লাখ শরণার্থীকে সেবাযত্ন করায় ইন্দিরা গান্ধীর এ কাজকে যীশু খৃষ্টের কাজের সঙ্গে তুলনা করেছেন নোবেলজয়ী মাদার তেরেসা। ‘তারা সবাই ঈশ্বরের সন্তান’ শীর্ষক একটি বইয়ে তেরেসা এ বিষয়টি উল্লেখ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখা ইন্দিরা গান্ধীকে বাংলাদেশ সম্মাননা জানাচ্ছে স্বাধীনতার ৪০ বছর পর। সোমবার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মনানা ‘স্বাধীনতার সম্মাননা’ জানানো হবে তাকে। রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে ইন্দিরা গান্ধীর পক্ষে সম্মাননা নেবেন তার পুত্রবধু সোনিয়া গান্ধী। সোমবার বিকেল পাঁচটায় বঙ্গভবনে এক অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা দেয়া হবে।
২৫ মার্চ ১৯৭১। ঢাকাসহ পুরো বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। রাতের অন্ধকারে নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ে পাক হানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং হাজার হাজার নারী, পুরুষ, ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের নির্বিচারে হত্যা করে। বিভীষিকাময় এ অবস্থায় থেকে বাঁচতে লাখ লাখ নারী-পুরুষ বাধ্য হয়ে পাশের দেশ ভারতে আশ্রয় নেয়।
ভারতের সেসময়কার প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ৯৮ লাখ ৯৯ হাজার ৩০৫ জন উদ্বাস্ত্তকে আশ্রয় দেন। তাদের থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসাসহ অন্যান্য সাহায্য করেন। পরম মমতায় সেদিন ইন্দিরা গান্ধী শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ান ও আশ্রিতদের সহায়তার জন্য ভারতবাসীকে অনুরোধ করেন।
শুধু উদ্বাস্ত্ত বা শরণার্থীদের আশ্রয়ই নয়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী হিসেবে প্রতিবাদী অথচ নিরস্ত্র বাঙালিকে সাহস জোগান তিনি। ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, যুবকদের গেরিলা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় ভারতে। এর ফলেই অনেকটা ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হয় বাংলাদেশীদের। মুক্তিযোদ্ধারা ভারত থেকে প্রশিক্ষণ পেয়ে সশস্ত্র অবস্থায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে একের পর এক গেরিলা যুদ্ধে পরাস্ত করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে।
মুক্তিযুদ্ধ চলার সময়েই, ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে ইন্দিরা গান্ধী বলেন, “পূর্ব বাংলায় যা ঘটেছে, তাতে ভারত সরকার নীরব থাকবে না।” পরে ১৭ মে তিনি পশ্চিমবঙ্গ আসেন। কারণ সেখানেই সবচেয়ে বেশি শরণার্থী আশ্রয় নেয়। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে এই বলে আশ্বস্ত করেন যে, শরণার্থী বিষয়ে কেন্দ্র তাদের পাশে আছে ও থাকবে।
এর আগেই ৩০ এপ্রিল ’৭১ ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করতে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেন। ৯ মে তাদের হাতে দেয়া হয় হয় মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করতে আগ্রহী বাংলাদেশের তরুণদের সশস্ত্র ট্রেনিং দেয়ার দায়িত্ব।
এছাড়াও, শাসক পাকিস্তানিদের বাংলাদেশে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন আদায়ে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী সেসময় বিভিন্ন দেশ সফরও করেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সহানুভূতি ও সমর্থন আদায়েও সক্ষম হয়।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জন্য একটি ট্রান্সমিটার বরাদ্দ করেন ইন্দিরা গান্ধী।
১৯৭১ সালের মাঝামাঝি সময়ে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে বিশ্বশান্তি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে ভারতীয় প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
সেখানে এক বিশেষ বার্তা পাঠিয়ে ইন্দিরা গান্ধী বলেন, “পূর্ববঙ্গের ঘটনায় ভারতের পক্ষে উদাসীন থাকা কঠিন এবং ইতিমধ্যে ২০ লাখ শারণার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। এসব উদ্বাস্তু যাতে সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরতে পারে সেজন্য পাকিস্তানকে বাধ্য করতে হবে।”
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বঙ্গবন্ধুর মুক্তি এবং সামরিক সাহায্য বন্ধের বিষয়ে অক্ষমতা জানালে ইন্দিরা গান্ধী তাকে বলেন, “ভারতের পক্ষে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সাহয়তা বাড়ানো ছাড়া গত্যন্তর নেই।”
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর কলকাতায় এক জনসভায় ইন্দিরা গান্ধী ভাষণ দেয়ার সময় পাকিস্তানি বাহিনী ভারতের বিভিন্ন বিমান ঘাঁটিতেও আক্রমণ করে। তিনি সেদনিই তার মন্ত্রিসভার ভাষণে বলেন, “আমি এ মুহূর্তে আমাদের দেশের এবং জনগণের গুরুতর বিপদের কথা উল্লেখ করে আপনাদের উদ্দেশে বলছি, কয়েক ঘণ্টা আগে পাকিস্তান আমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছে। পাকিস্তানি বাহিনী হঠাৎ করে আমাদের এয়ার ফিল্ড, অমৃতসার, পাঠান কোর্ট, শ্রীনগর, অবন্তীপুর, উতরলেট এবং আগ্রায় আঘাত হেনেছে। এতদিন ধরে বাংলাদেশে যে যুদ্ধ চলে আসছিল, তা ভারতের বিরুদ্ধে পরিণত হয়েছে।’’
এর পরপরই ভারত ও বাংলাদেশ বাহিনী মিলিতভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং পাকবাহিনী বিভিন্ন রনাঙ্গণে পরাজিত হতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে ত্বরান্বিত করতে ৬ ডিসেম্বর ইন্দিরা সরকার বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় অনেক সৈন্যও শহীদ হয়।
দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও অগণিত মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর ’৭১ আমরা বিজয় অর্জন করি।
সূত্রঃ- Click This Link
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন