একটা মানুষ দেখতে কেমন হবে, এই সব তথ্য রাখা থাকে তার ডি.এন.এ এর মধ্যে। প্রতিটা মানুষের ডি.এন.এ ২৩ টি টুকরাতে বিভক্ত। এই প্রতিটা টুকরোকে বলা হয় এক একটা "ক্রোমোসম"।
প্রতিটা ক্রোমোসম আবার ২ কপি করে থাকে, এক কপি সে পায় তার বাবার কাছ থেকে আর আরেক কপি পায় তার মায়ের কাছ থেকে। অর্থাৎ, মানুষের শরীরে ২৩ জোড়া ক্রোমোসম থাকে, প্রত্যেক জোড়ার ১টা আসে মায়ের কাছ থেকে, আর টা আসে বাবার কাছ থেকে। (ছবিতে বাবার শরীরে ২৩ জোড়ার মধ্যে শুধু ১জোড়া ক্রোমোসম দেখানো হয়েছে, যার মধ্যে একটি এসেছে দাদার কাছ থেকে, আরেকটি দাদীর কাছ থেকে)।
এখন পুরুষের শরীর হতে যখন শুক্রানু (sperm cell) বা নারীর শরীর হতে ডিম্বানু (egg cell) তৈরী হয়, তখন প্রতি জোড়া ক্রোমোসম নিজেদের মধ্যে কিছু অংশ বিনিময় করে নতুন কম্বিনেশনের এক জোড়া ক্রোমোসম তৈরী করে। এই ঘটনা কে বলা হয় Genetic Crossing Over (ছবিতে দেখুন)।
এখন এই নতুন চেহারার ক্রোমোসোম জোড় থেকে র্যান্ডমলি যে কোন একটি শুক্রানু/ডিম্বানু তে যায়। এই ঘটনা কে বলা হয় Independent Assortment (ছবিতে দেখুন). ছবিতে এক জোড়া ক্রোমোসম দেখানো হয়েছে, কিন্তু একইভাবে ২৩ জোড়া ক্রোমোসোমেই Genetic Crossing Over এর মাধ্যমে নতুন চেহারার ক্রোমোসোম তৈরী হয়, এবং প্রতি জোড়া থেকে র্যান্ডমলি যে কোন একটা শুক্রানু/ডিম্বানু তে যায়। এর ফলে পুরুষের শরীরে ৮ মিলিয়ন ধরণের শুক্রানু ও নারীর শরীরে ৮ মিলিয়ন ধরনের ডিম্বানু তৈরী হতে পারে। যৌন মিলনের ফলে, যে কোন একটি শুক্রানু যে কোন একটি ডিম্বানুর সাথে মিলিত হয়ে বাচ্চার জন্ম দেয়। ৮ মিলিয়ন ধরণের শুক্রানু আর ৮ মিলিয়ন ধরণের ডিম্বানুর মিলনের ফলে ৬৪ ট্রিলিয়ন ধরনের চেহারার বাচ্চার জন্ম হতে পারে। অর্থাত কারো ৬৪ ট্রিলিয়ন বাচ্চা হলেও কারো চেহারা হুবহু কারো মত হবেনা (যদিনা তারা জমজ হয়) এবং প্রত্যেকের চেহারাতেই তার মা, বাবা, নানা, নানী, দাদা ও দাদীর চেহারার কম-বেশি ছাপ থাকবে। সুতরাং "কাহো না পেয়ার হে" এর মত একই চেহারার দুইজন ঋত্বিক রোশান থাকা অসম্ভব ব্যাপার।
তথ্য: সংগৃহীত।