আমরা এতো অসহিষ্ণু কেন.....
গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর জন্য বিশ্বব্যাপী পরিবেশ যেমন উত্তপ্ত হয়ে গিয়েছে তেমনই মানুষের স্বভাবও উত্তপ্ত হয়ে গিয়েছে। যতই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, ততই অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাচ্ছি পারিপার্শ্বিকতার জন্য। আমার মতো অন্যসব মানুষও অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে! যে বা যারা সামান্যতম পাওয়ার- হোক সেটা চ্যারিটি কিম্বা ফিনানশিয়াল, নেইম এন্ড ফেইম যেকোনো ভাবে একটু ক্ষমতা পেলেই নিজেকে সর্বেসর্বা ভাবতে শুরু করে। এভাবেই ক্ষুদ্র থেকে বৃহত্তর পরিসরে সামাজিক জীবনের ঘটমান বাস্তবতায় সামগ্রিক ভাবে অসহিষ্ণুতার প্রসঙ্গ ক্রমশই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সহিষ্ণুতা ও অসহিষ্ণুতার ভারসাম্য যথাযথভাবে রক্ষিত হচ্ছে না মানুষের কর্মে, দায়িত্বে তথা জীবনচারিতায়। ব্যক্তি জীবন থেকে বৃহত্তর সমাজের সর্বত্রই চাপা উত্তেজনা ও অসহিষ্ণুতার কারণে প্রায়শই মানুষের স্বাভাবিক আচরণ ও কার্যক্রমসমূহ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
সামাজিক মূল্যবোধ কোন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে- তা ভাবতেই শিউরে উঠতে হচ্ছে। এই প্রবণতা কতটা বিপজ্জনক, তা ধারণার বাইরে। ক্রমক্ষয়িষ্ণু ভঙ্গুর অবক্ষয়গ্রস্ত, অসভ্য, নিষ্ঠুর ও অমানবিকতার ঘেরাটোপে বন্দি আমাদের সমাজব্যবস্থা। মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের একপাক্ষিক দাবি পরাজিত এই অসভ্যতায়। অবক্ষয়ের তলানির দিকে ক্রমধাবমান সমাজ, সমাজব্যবস্থা। এই হিংসা, সহিংসতার স্থায়ী সমাধান জরুরি। তা না হলে আমাদের রক্ষা নেই। এজন্য পরিবারকে দায়িত্ব নিতে হবে, সমাজকে দায়িত্ব নিতে হবে; দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্রকেও।
আমাদের মনে রাখা জরুরি যে, সহনশীলতা বিশেষ একটি গুণ। একটি সামাজিক মূল্যবোধ। এই সহনশীলতার ওপর নির্ভর করে সমাজের স্থিতিশীলতা। স্থিতিশীলতা না থাকলে সহনশীলতাও আর থাকতে পারে না। মানুষ যতই এগিয়ে যাচ্ছে, ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে তার জ্ঞান। আবার ততই তার মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে অস্থিরতাও। মানুষের ভেতরে সবকিছু পাওয়ার চাহিদা বেড়ে গেছে। সারাক্ষণই কেবল পাওয়ার আশা। ফলে তার মধ্যে চাওয়া-পাওয়ার তীব্রতা বাড়ছে। বাড়ছে মনের মধ্যে প্রচণ্ড চাপ। আর এই ক্রমবর্ধমান চাপ মানুষের জীবনকে ধৈর্যহীন করে তুলছে। ধৈর্যের অভাব একদিকে মানুষের আত্মবিশ্বাস থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে তার সাহসও কমিয়ে দিচ্ছে। এজন্য প্রয়োজন সহনশীল মনোভাব। ধৈর্য ও সহ্যগুণ মানুষকে অনেক দূর অগ্রসর করে। অস্থিরতা থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। তাই সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্র থেকেই অসহিষ্ণুতার বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলতে হবে।
ধন্যবাদ সবাইকে।