দুপুরে সিলেটের আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামলো। নাহ, বৃষ্টিতে ভিজার ইচ্ছা আমাকে আর টানে না, উল্টা বৃষ্টি দেখে মেজাজ খারাপ হয়। কেন হয়, আজকের আগে বুঝি নাই, অথবা কেন এমন হয় কখনো ভাবিও নাই।
শেষ বৃষ্টিতে ভিজেছি গতবছরের মে মাসের কোন এক দুপুরে। ঢাকার রাস্তায় কারো জন্য অপেক্ষা করে। সেইবারই শেষ। তার সাথে আর ওইদিনের মত কথাও হয়নাই আর। বৃষ্টিতে ভেজা মাটির গন্ধটাও নাকে লাগেনাই এরপর থেকে, রাস্তায় নেমে পাগলামীও করা হয়নাই।
কি কি কারণে আমাদের গল্পটার শুভ সমাপ্তি তো দুরের কথা, কখনো কাগজে-কলমে লেখাও শুরু হবে না, সেটা আমার থেকে ভাল আর কেউ জানে না। আমি হোপলেস রোমান্টিক টাইপের না যে একজনের উপর দোষ চাপায় দিয়ে স্বান্তনা খুঁজবো, ভাল থাকার চেষ্টা করবো। আর কোনদিকে না হলেও এই একটা সাইডে আমি রিয়েলিস্টিক থাকতে চাই। কিন্তু সেটা যে থাকতে পারিনা সেটা পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে যায় যখন দেখা যায় আমি আর আগের মত নাই, বিন্দুমাত্র না বদলানোর প্রাণপণ চেষ্টা করেও একবছর পর আস্তে আস্তে নিজের পরিবর্তনগুলো নিজের কাছে ক্লিয়ার হওয়া শুরু করে। অবচেতনভাবে নিজেকে অল্প-অল্প করে ভেঙ্গে ফেলে পিছনে ফিরে যখন সেই ভাঙ্গা টুকরোগুলো দেখি তখন নিজেকে পরাজিত মনে হয়, যেখানে জয়-পরাজয়ের কোন প্রশ্নই উঠেনি কখনো!। নিজের সবচেয়ে প্রিয় জায়গাটায় সবচেয়ে কাংক্ষিত মানুষটাকে দেখার অসাধারণ সুন্দর অনুভুতিটা একবছরের মধ্যেই সবচেয়ে কঠিন শাস্তি মনে হওয়া শুরু করেছে। যে মানুষটা এখন পর্যন্ত জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন হতে পারতো, তার মুখটাই এখন “face of refusal” হয়ে তাড়া করে বেড়ায়। তাকে হাসতে দেখলে মাথায় এখন আর কোনকিছুই কাজ করেনা। দুই-তিনঘন্টা নিজের ভিতরে পুড়তে থাকি এটা ভেবে যে সে কেন ভাল থাকবে? তার মনে কি একবারের জন্যও প্রশ্নটা আসে না যে আমি কেন নিজেকে শুধু তার কাছ থেকে না, বরং আস্তে আস্তে সবকিছু থেকে সরিয়ে নিচ্ছি? নিজের হাতের ধমনীটা কেটে ফেলতে ইচ্ছা করে সে সময়।
না, আমি এত বোকা না যে যে মানুষটা আমার কথা ভেবে এক মুহুর্তও নষ্ট করেনা, তার জন্য নিজেকে মেরে ফেলবো বা ধংস করে দিবো। একচুয়ালি, যারা এরকমটা করে তাদের মানসিক বিকাশের স্বল্পতা আমাকে অবাক করে। আবার এটাও ঠিক যে আমার নিজের মানসিক বিকাশও কীটপতঙ্গের চেয়ে খুব বেশি উপরের স্তরের না। একটা গুবরে পোকার চেয়ে সামান্যতম বেশি বুদ্ধিমান হলে বারবার জেনেশুনে আগুনে লাফ দিতে এগিয়ে যেতাম না, বা আগুনের কথা ভেবে এতদিন ধরে নিজেকে ভিতরে ভিতরে জ্বালাতাম না।