সিলেট সিটি নির্বাচনে সরকার-দলীয় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে অনেকেই চরম বিপাকে পড়েছেন। কেউ কেউ নিজেকে সরকারী দলের কেউ নয় বলেও প্রচার করছেন। সরকারী দলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে হেফাজত বিরোধী কর্মকান্ডে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আল্লামা বাবুনগরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি এ সংকট আরো ঘনীভূত করছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, তত প্রচারণাও বাড়ছে। তবে প্রচারণা চালাতে গিয়ে সব চেয়ে বেশি হোঁচট খাচ্ছেন সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সদ্য বিদায়ী মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। কাউন্সিলর প্রার্থীরাও নিজ নিজ এলাকায় ভোটারদের নানা প্রশ্নে সম্মুখীন হচ্ছেন।
নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা সম্পর্কে খোজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট নগরীর সবকটি কওমি মাদ্রাসাগুলোতে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান প্রচারণা চালাতে গিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের মোকাবেলা করতে হচ্ছে। হেফাজত ইস্যুতেই মূলত কামরানের এ অবস্থায়। সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের হেফাজত বিরোধী কর্মকান্ডে চরম ক্ষুব্ধ আল্লামা আহমদ সফির অনুসারীরা। শুধু কওমি মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক নয়, ধর্মপ্রাণ হেফাজত পন্থী মুসলমানও বর্তমান সরকার বিরোধী। ফলে কামরানকে আল্লামা সফি অনুসারীরা এবারের নির্বাচনে তেমন পাত্তা দিচ্ছেন না।
সূত্র জানিয়েছে, নগরীর একটি কওমি মাদ্রাসায় গিয়ে চরম প্রশ্নে সম্মুখীন হতে হয় বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে। কামরান মাদ্রাসার শিক্ষকদের সাথে হাত মেলাতে চাইলে শিক্ষকরা রাজি হননি। উল্টো কামরানকে প্রশ্ন করে বসেন কেন হাত মেলাবেন? জবাবে কামরান বলেন ‘আপনাদের হাত পবিত্র, তাই হাত মেলাতে চাই’। শিক্ষকরা বলেন ‘যে হাত কোরআন পুড়ায় সে হাত পবিত্র হতে পারে না’। ‘নাস্তিক ব্লগারদের হাতে, হাত মিলিয়ে হাত পবিত্র করুন’। শিক্ষকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিব্রত হয়ে পড়েন কামরান।
শুধু কামরান নয়, এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। জানা গেছে, নগরীর ১নং ওয়ার্ডের এক কাউন্সিলর প্রার্থী আওয়ামীলীগের নেতা ও সরকার-দলীয় এপিপি হওয়া সত্বেও নিজেকে আওয়ামীলীগের কেউ নয় বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এভাবে সবকটা ওয়ার্ডে আওয়ামীপন্থী কাউন্সিলর প্রার্থীরা রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।
হেফাজতের মহাসচিব কারাবন্দী আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরীকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের পর অসুস্থ সংকটাপন্ন অবস্থায় মুক্তির ঘটনায় আরো ক্ষুব্ধ হেফাজতপন্থীরা। ফলে নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে বলে আশংকা করছেন সরকার-দলীয় অনেক নেতা। যদি আশংকা ঠিক হয়, তবে ১৫ জুনের নির্বাচনে সরকার-দলীয় প্রার্থীদের ভরাডুবিও হতে পারে।
হেফাজত ইস্যুতে বেকায়দায় কামরান
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ দুপুর ২:০৭