পথ ভুল করে এই পথে বার বার আমি হেঁটে যাই। প্রতিটি সকালে কোন এক অবোধ্য তাড়নায় পচিঁশ বছরের আলস্য ভেঙ্গে বড় রাস্তার ভীড় মাড়িয়ে, ভর-পেট ডাস্টবিন পেরিয়ে এইখানটায় এসে দাঁড়ায়। পাকস্থলির অলিতে গলিতে তখন ঘোর বিদ্রোহ, আমি উপেক্ষা করে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রই প্রাগৈতিহাসিক কোন বৃক্ষের মতো- শুধু তোমাকে এক পলক দেখার জন্য। কখন তুমি ধূমায়িত এক মগ কফি নিয়ে এসে দাঁড়াবে বারান্দায় তার অপেক্ষায় শেকড় গজায়, না শরীরে নয়- কল্পনায়। এই বুঝি পর্দাটা নড়ে উঠলো, আমি ব্যস্ত হয়ে উঠি, মুখে হাসি ঝুলিয়ে ব্যস্ত পথিকের মতো পথ চলি যেন খুব দেরী হয়ে যাচ্ছে গন্তব্যে পৌছাঁনোর, যদিও আমার কোন গন্তব্য নেই। মনে মনে গাই, 'মনে পড়ে রুবী রায়, কবিতায় তোমাকে একদিন কতো করে ডেকেছি। আজ হায় রুবী রায় ডেকে বলো আমাকে তোমাকে কোথায় যেন দেখেছি।'
যেদিন তোমার দেখা মেলে না সে দিন সব কিছুতেই শূন্যতা ভর করে। চায়ে চুমুক দিলে মনে হয় গরলে পুড়ছি ভিতরটা, লোকাল বাসের ভিড়ে চিড়ে-চ্যাপ্টা হয়ে খিস্তি করি বিধাতার, সব কাজেই ভুল করি অজস্র বার। প্রতীক্ষায় থাকি কখন কাটবে দিন, আসবে আরেকটা ভোর। এভাবেই অপেক্ষায় থেকে থেকে আমি বিবর্ণ হবো, পথ ভুল করে কোনদিনও দাঁড়াতে পারবো না তোমার আঙিনায়। জানি একদিন কোন রাজার কুমার আসবে ক্যাম্বিসের জুতা পায়ে, আকাশে পঙ্খীরাজ উড়িয়ে, তার হাত ধরে তুমি চলে যাবে হাসিমুখে কোন এক অচিন দেশে। তখনও আমি ঠাঁই দাঁড়িয়ে রবো, সেই প্রাগৈতিহাসিক বৃক্ষের মতো। কিন্তু কার অপেক্ষায়?
তোমার আমার গন্তব্য চির বিপরীতমুখী জেনেও আমি প্রতিদিন ভুল করে হেঁটে যাই সেই একই পথে বার বার। আর গেয়ে যাই - মনে পড়ে রুবী রায়।
ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা :

