সে থাকে এক নিরালা ঘরের ভেতরে
গাছ-লতাপাতাওয়ালা জানালা আর গোলাপী চাদরে মোড়া বিছানা
শুধু কি গোলাপী? শুধু আনন্দ বুঝি?
না, গোলাপী কখনো হয়ে যায় নীল,
তবু কেন যেন নীলটাও এনে দেয়
ক্লান্তির পরে শান্তি!
(অন্তত শান্তির ভ্রান্তি)
ঘরটা এক ছোট্ট বাসায়-
ঠিক হুমায়ুন স্যারের নবনী কিংবা মীরাদের বাসার মত
যেখানে আছে মায়া, অভিমান, রহস্য, হাজারো রকম স্বপ্ন-
আর রোজ রোজ স্বপ্ন পূরন-ভাঙ্গনের কয়েন টসের পর্ব
বুদবুদের মত উড়ে উড়ে মাঝে মাঝে ফুটফাট ফোটে
নানা অব্যক্ত অনুভূতি
সেই বাসাটা "আলোকিত বাড়ি"র এক... দুই... তিন... চার... আটতলায়
আর একটা সিঁড়ি পেরুলেই ছাদ
হয়ত রেলিং দেওয়া, নোনাধরা মেঝে- এল প্যাটার্ণ, অথবা ইউ,
এখানে ওখানে নির্ভয়ে জন্মেছে পেপেরোমিয়াস, সবুজ শ্যাওলা, পুঁইয়ের লতা কিংবা
ঝিরি ঝিরি পাতাওয়ালা অচেনা উদ্ভিদ
চিনে নিত সে ঠিকঠাক
কিন্তু হলনা
হলনা দেখা তার ছাদের সাথে
ছাদের ওপর টাঙ্গানো আকাশের সাথে
বারন ছিল সকলের, কারো কারো ভয় ছিল "মরীচিকা"র।
তবু জোছনা রাতে মেয়েটা মনে মনে ছাদের কার্নিশেই পা ঝুলিয়ে বসে থাকত
বিকেলে এক বাটি আচার-মুড়ি নিয়ে আড্ডা দিত ছাদে; কল্পনাতেই
নিরালা ঘরে একলা হলে ঘুমিয়ে পড়ত
ছাদের কোনায় কাঁঠাল গাছের ঝুম ছায়ার কথা ভাবতে ভাবতে
হিহি শীতে ছাদ ভরা নরম রোদের কথা ভেবে জড়াতো না শাল গায়
পাগলীটা!
অবশেষে একদিন নিরিবিলি ছাদটা তাকে ডেকে নিল খুব রাতে
রেলিঙের ধাঁর ঘেঁষে
অবাক হয়ে দেখল সে মুক্ত ছাদে ধূ ধূ মরুভূমি
নেই সবুজ, বটের ঝুড়ির ঘন ছায়া, উড়ন্ত চিলের পালক,
সব উধাও, সব
কেবলই ধোঁয়াটে আলো, অথবা আলেয়া
মরিচীকাও ছিল সামনে
ধরা দেবে, কি দেবে না?
দেবে কি?
দিল কি?
দিল কি ধরা রেলিঙের ওই পাড়ে?
চোখটা বুজে, দুটি ডানা মেলে
উড়ে গেল একদিন বন্দীনীড় ফেলে
আলোকিত বাড়ির অছাদস্পর্শ্যা মেয়েটা