চলচ্চিত্রে জেনার হিসেবে মূলতঃ আমার দু’টো জেনারের প্রতি বেশি আগ্রহ--- একটা হলো ওয়ার (যুদ্ধ) এবং অপরটা হলো রোম্যান্টিক। খুব সম্প্রতি ওয়ার মুভি একটাও দেখা হয়েছে বলে মনে পড়ে না, যা দেখা হয়েছে বেশিরভাগই মহা পুতুপুতু রোমান্টিক ঘরানার। সমস্যা হলো, দেখে এমন বিরক্তি লাগে তবু এই জেনারের প্রতি আগ্রহ কমে না। কি যে জ্বালা!
The Illusionist
সবাই এই মুভিটা কত ভালো বলে, কত বিমুগ্ধ হয়... কিন্তু আমার অতটা ভালো লাগলো না কেন? মেকিং খারাপ না, শ্যুটিং হয়েছে চেক রিপাবলিকের মত নয়নাভিরাম দেশে, নাম ভূমিকায় যিনি অভিনয় করেছেন (এডওয়ার্ড নর্টন) তার অভিনয় যথেষ্ট সুন্দর, দু’একটা দৃশ্য আছে বেশ টাচি... সবই ঠিক আছে কিন্তু তারপরও কোথায় যেন একটা গোলমাল আছে। আসলে ছবিটার শেষে বেশ বড়সড় একটা টুইস্ট আছে যেটা হয়তো সবাইকে একদকম তাক লাগিয়ে দেয়... ঘটনা হলো ঐ ‘তাক’টাই বোধহয় আমার সেভাবে লাগেনি। তাই বলে আমি কাউকে দেখার জন্য ডিসকারেজ করছি না। অবশ্যই দেখুন, যেহেতু অনেকেরই খুব ভালো লেগেছে--- আর তাছাড়া আইএমডিবি রেটিংও খুব কম নয়, পাক্কা ৭.৬!
এই ছবিতে এডওয়ার্ড নর্টনএর Cool & Intelligent & Loving Young man মার্কা ইমেজটা ব্যাপক ভালো লাগসে আমার। :#>
Before Sunrise & Before Sunset
এই রে, এই ছবি দু’টোও খানিকটা নেকু-পেকু কিন্তু তবু আমার অনেক ভালো লেগে গেছে। তুলনামূলকভাবে স্টোরিটেলিংটা অনেক ম্যাচিওরড। দুই সহযাত্রীর গল্প, পাশাপাশি তারা পথ চলতে চলতে বন্ধু হয়ে যায়, অনেক কিছু শেয়ার করতে শুরু করে, ভালোও বেসে ফেলে কিন্তু তাদেরকে আলাদা হয়ে যেতে হয়, তখন তারা প্রতিজ্ঞা করে যে ৫ বছর পর তারা ঐ একই জায়গায় এসে আবার দেখা করবে। ১ম যেবার তাদের দেখা হয় সেটা নিয়ে হলো Before Sunrise এর কাহিনী আর পরে যেবার দেখা হয় সেটা নিয়ে হলো Before Sunset এর কাহিনী। ভালো, বেশ ভালো। নায়িকা তো ভালো, নায়ক আরও ভালো। ছবিটার একেবারে শেষে এসে কেমন একটা অপূর্ণতা রয়ে যায়, তবু ভালোলাগাটা পিছু ছাড়ে না।
Original Sin
এই ছবিটাকে ইরোটিক থ্রিলার/মিস্ট্রি গোত্রের বলা যায়। কাহিনীটা কিউবার এক দম্পতিকে নিয়ে (অ্যান্টোনিও ব্যাণ্ডেরাস আর অ্যাঞ্জেলিনা জোলি)। ব্যাপক প্যাঁচালো কাহিনী, এতই প্যাঁচালো যে লাস্টে এসে কনফু খেয়ে যেতে হয়--- মনে হয় কিরে বাবা কি হচ্ছে এসব! ছবির লোকেশন বা কস্টিউম ভালো, নায়ক নায়িকাও ভালো কিন্তু আসলে ছবিটা নিজেই খুব একটা সুবিধার না। তবে কারও যদি নেহাতই জোলির রূপ-সৌন্দর্য উপভোগের আগ্রহ থেকে থাকে তাহলে দেখতেই পারেন।
এই মুভিটায় জোলির অভিনয় সম্পর্কে একটা মজার তথ্য হলো---
Jolie was nominated for a Golden Raspberry Award in 2001 for Worst Actress for her work in Original Sin.

Serendipity
চরম মেজাজ খারাপ হৈসে মুভিটা দেখে। কাহিনী খানিকটা ঐ বিফোর সানরাইজ/সানসেটের মত (পুরোপুরি না অবশ্য) কিন্তু মোটেও ওরকম ভালো লাগার মত কিছু না। পুরো ছবিটার মধ্যেই এমন একটা ছেলেমানুষি আছে যে পরিচালকের দোষ না দিয়ে কিছুতেই পারা যায় না। আগে যাদের মুখে এই ছবিটা সম্পর্কে প্রশংসা শুনেছিলাম, দেখার পর তাদের রুচি সম্পর্কে আমার কঠিন দ্বিধা অনুভূত হতে লাগলো!

A Walk in the Clouds
হিন্দি মুভি দেখার অনেকগুলো কুফলের মধ্যে একটা হলো এই যে, অরিজিনাল হলিউডি ভার্শনটা দেখার সময় আর অতটা মজা পাওয়া যায় না। এই ছবিটারও একটা অতি দূর্বল হিন্দি রিমেক আছে, বহু বছর আগে যে সেটা একবার দেখেছিলাম সে কথা এই ছবিটা দেখতে বসেই মনে পড়ে গেলো। মুভি হিসেবে মোটামুটি। নায়ক কিয়ানু রিভসকে আমার খুব একটা ভালো লাগে না কখনোই। কাহিনীটা ২য় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক পরবর্তী কোনও একটা সময়ের, দৃশ্যগুলোও সেভাবে ধারণ করা। অনেক পুরনো আমলের ছোঁয়া যেসব মুভিতে পাওয়া যায় সেগুলোর প্রতি খুব মৃদু এক ধরণের ভালোলাগা তৈরী হয়, এই ছবিতেও সেটা খুব সামান্য পরিমাণে বিদ্যমান বটে।
[একটি আগাপাশতলা ফরমায়েশি পোস্ট। ছোট ভাই কাউসার রুশো ও শেখ আমিনুল ইসলাম খুব করে বলেছে চলচ্চিত্র বিষয়ক ই-বুকের জন্য কিছু একটা লেখা দিতে তাই লিখলাম, নইলে পোস্টটা আমার বোধহয় লেখা হতো না। অবশ্য এই দুর্বল লেখাও যে শেষ পর্যন্ত ওরা মনোনয়ন দিতে পারবে তাই বা কি করে বলি? না পারলেও তো ওদের দোষ দেয়া যায় না…………..]