ভালোই ফাকাঁ রাস্তা দিয়ে রাপাপ্লাজা পর্যন্ত গিয়ে ২৭ নং রোডের অর্ধেক যাবার পরই জমজমাট জ্যামে পড়লাম, পড়ে আছিতো আছিই। ভাবছি স্কুলগুলো বন্ধ, শপিংও বেশিরভাগ শেষের দিকে তবে অন্যসব রাস্তা বাদে এখানেই কেন অহেতুক ভিড়! মনের ভাবনাটা বললাম রিক্সাওলাকে।
- আচ্ছা, এতো ক্যান ভিড় এখানে?
- আরে আফা, ভিড়তো হইবোই, জানেন না সামনেই তো আছে "আফাগো মার্কেট"। ঈদের আগ পর্যন্ত চলবো এইহানে জ্যাম, থামাথামি নাই।
অবাক হয়ে ভাবি কই এখানে অতোবড় মার্কেট, আর "আফাগো মার্কেট" কি জিনিষ!! ..... কিছু পরে সামনে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম ওনার কথার মানে, হাসতে হাসতে বললাম মামু আমিও তো যাচ্ছি ওই "আফাগো মার্কেট"-এ।
ইদানিং টিভিতে একটা বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে মেহেদী'র মনে হয়, যেখানে বউয়ের পারলারে যাওয়াকে বর বলছেন "ঘষামাজা করন"। ঈদ উপলক্ষে সেই "ঘষামাজা করন" কাজে যাবো যাবো করে নানান কারনে যাওয়া হয়ে উঠছে না। আজ সকালে দুই বান্ধবীর ডাকল, ভেবে দেখলাম ভালোই তো লাভে লাভ, "ঘষামাজা করন" ও হবে আবার দোস্তদের সাথে মেলাদিন বাদে আড্ডা দেয়াও হবে।
সেই দ্বিগুন উদ্দেশ্যসাধনে দুপুরে যখন গিয়ে পৌছালাম, দাড়াঁবার জায়গা নাই, পুরো লোকালবাস - এ ঠেলা দেয়তো, ও ধাক্কায়। সেই মাছের বাজারে থুক্কু মৎসকণ্যাদের ভিড়ে বহু কষ্টে বন্ধুদের খুজেঁ বের করলাম, ভুলেই গেলাম বাকি কারনটা। কতো কতো আড্ডার বিষয়বস্তু বার করতে লাগলাম আমরা। আসলে নিশ্চিন্তে ছিলাম, কারন আমাদের অসুবিধা হবে না, কারন প্রতিষ্ঠানটার এ্যাডমিনে আছে আমাদের আরেক দোস্ত, ওকে সারপ্রাইজও দেয়া যাবে। সো নো টেনশন ডু আড্ডা।
আড্ডা আর চিত্র কি বিচিত্র পাবলিক দেখা, মেয়েরা, মেয়েদের সাথে আসা ওয়েটিং রুমে বসা গোবেচারা ছেলেরা। এর মাঝেই একটা মেয়ে হাজির ক্যামেরা নিয়ে, এপাশ ওপাশ, টেবিলের উপর উঠে কিবা ফ্লোরে বসে পড়ে ধমাধম শাটার টিপছে!!! আর আশপাশের সব এলেবেলেরাই নানান কিছিমের পোজ দেয়া শুরু!! খানিকক্ষন বাদে দোস্ত আসতেই কাহিনী কি জিজ্ঞেস করে জানলাম, ওদের ম্যাগাজিনে ছাপা হবে ঈদের ভিড়ের ছবি। ও আরো জানালো ওকে না জানিয়ে আসলাম কেন, আর এখন "ঘষামাজা করন" শুরু করা ঠিক হবে না, কারন এই সুবিশাল লাইনে দাড়াঁলে দৌড়াদৌড়ি করে ইফতারি ধরতে হবে। যেদিন করতে আসতে চাই যেন সকাল ৯টায় হাজির হই!!! কারন বেলা ১০টা থেকেই পিলপিল করে মৎসকণ্যাদের বিপুল আনাগোনা চলে।
সুতরাং ব্যর্থ মনোরথে "ঘষামাজা করন" বাদেই বাড়ি ফিরে আসলাম "আফাগো মার্কেট" থেকে .......