তবে প্রিন্টার মেশিনটির দাম কমলেও এর প্রান ভোমরা স্বরুপ কালির দাম কমেনি। আমরা যারা প্রিন্টার কিনে দু দিন পরেই কালি শেষ হয়ে গেল বলে হা হুতাশ করছি তাদের জন্য দারুন সুসংবাদ নিয়ে এসেছে নকল কালি। যেগুলো ইঞ্জেকশন দিয়ে ভরে দেয়া যায় কার্ট্রিজে। কিন্তু নকল কালি ব্যবহার করা আসলে ভাল নয়। কারণ এসব কালি প্রিন্টারের ক্ষতি করে। এ কারনে এই লেখায় কিছু আইডিয়া দেবার চেষ্টা করা হল, কিভাবে আপনি সাশ্রয়ীভাবে কালি খরচ করে আসণ কালিই ব্যবহার করতে পারবেন বহুদিন।
তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে, প্রিন্ট সেটিং এক প্রিন্টার থেকে অন্য প্রিন্টারে ভিন্ন হয়। কাজেই নিজের প্রিন্টারের সেটিং সম্বন্ধে আমাদের সবারই জানতে হবে, যাতে এসব টিপসকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়।
ড্রাফট মোড ব্যবহার করুন: আপনার প্রিন্টারের ড্রাফট বা ইকোনমি মোড ব্যবহার করলে কম কালি খরচ হবে। তবে নর্মাল মোডের চাইতে ড্রাফট বা ইকোনমি মোডে প্রিন্ট একটু হালকা আসবে। এ কারণে খসড়া বা নমুনা কপি প্রিন্ট করার সময়ই কেবল এটি ব্যবহার ক র া
উত্তম।
প্রিন্টারকে স্ট্যান্ডবাই মোডে রাখুন: আপনার যদি প্রায়ই প্রিন্টার ব্যবহার করতে হয় তাহলে প্রতিবার প্রিন্ট করার আগে প্রিন্টার অন এবং অফ করা থেকে বিরত থাকাই ভাল। এর কারণ হচ্ছে, প্রতিবারই আপনি যখন প্রিন্টার অন করছেন, তখন এটি কেবল ইনিশিয়ালাইজেশনের জন্য কিছু পরিমাণ কালিই খরচ করে ফেলছে না, বাড়তি বিদ্যুৎও নষ্ট করছে। এ সমস্যা এড়ানোর জন্য প্রিন্টারকে স্ট্যান্ডবাই মোডে রেখে দেয়াই ভাল
হবে।
মুদ্রণ চক্রকে বিঘিœত করবেন না: প্রিন্টিং-এর মাঝপথে কোনো কারণে অফ সুইচ টিপে দেবেন না। এটি করার ফলে ভেতরে কার্ট্রিজ নাড়াচাড়া করার সময় আপনি প্রিন্টার বন্ধ করে দেয়ার কারণে মাঝপথেই এটিকে জোর করে বন্ধ দেয়া হল। এটা কেবল প্রিন্টারের হেডের ক্ষতিই করবে না, প্রিন্টারের নজল-এর অগ্রভাগ শুকিয়েও যেতে পারে। এর ফলে নজল ব্লক হয়ে গিয়ে কালি লিকও করতে পারে।
সাদাকালো এবং গ্রেস্কেল মোড ব্যবহার করুন। আপনার প্রিন্টারে যদি সাদাকালো এবং রঙিন উভয় রঙের কার্ট্রিজই ব্যবহার করা হয় তাহলে
টেক্সট ডকুমেন্ট প্রিন্ট করার সময় এটিকে ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট / গ্রেস্কেল মোডে সেট করে রাখুন। কিছু কিছু কালার কার্ট্রিজ আছে যেগুলো কালো রঙে প্রিন্ট করার সময়ও বিভিন্ন রঙিন কালিকে একসঙ্গে মিশিয়ে কালো রঙ তৈরি করে। কাজেই প্রিন্টার সেটিংকে দরকার ছাড়া ব্ল্যাক এন্ড হোয়ইট মোডে রাখলে প্রিন্টার কারা কালিই ব্যবহার করবে, রঙ্গিন না।
ওয়েবপেজ প্রিন্ট করার অপশন: যখনই আপনি ওয়েব পেজ প্রিন্ট করবেন, আপনার প্রয়োজন না থাকলেও ওয়েব পেজের মূল টেক্সট ও ছবির
পাশাপাশি সেটির হেডার, ফুটার, ওয়েব অ্যাড্রেস, টাইটেল ইত্যাদি সব কিছুই প্রিন্ট হয়ে যাবে। এ কাজটি যেন না হয়, সে জন্য ব্রাউজারের প্রিন্ট সেটিংস এ গিয়ে সেটিংসগুলো সেট করুন আপনার সুবিধা মত।
শেষ বিন্দু পর্যন্ত কালি খরচ করুন: আপনার কার্ট্রিজের কালি শেষ হয়ে গেলে প্রিন্টার একটা মেসেজ দিয়ে কার্ট্রিজ পরিবর্তন করার জন্য বলবে। এ মেসেজ দেখেই কার্ট্রিজ কেনার জন্য দোকানে দৌড়ে যাওয়ার আগে ছোট একটা কৌশল প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। কার্ট্রিজটা প্রিন্টার থেকে বের করে নিন, এটিকে হালকা ভাবে এদিক সেদিক দোলান এবং আবার প্রিন্টারের মধ্যে প্রবেশ করান। এর ফলে কার্ট্রিজে সামান্য যে কালি থাকবে সেটি সমানভাবে ছড়িয়ে পড়বে এবং এর পরে এটি পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়ার আগে আপনি আরো কয়েক পৃষ্ঠা প্রিন্ট করতে পারবেন।
যা প্রয়োজন কেবল তাই প্রিন্ট করুন: গোটা ডকুমেন্ট প্রিন্ট না করে কেবল যা প্রয়োজন সে অংশটাই প্রিন্ট করুন। ানেক সময় দরকার না থাকলেও পুরো ডকুমেন্ট প্রিন্ট করা হযে যায়। এতে বাড়তি কালি এবং কাগজ অপচয় হয়।
প্রিন্টিং কাজকে করুন আরো সংগঠিত: হুট করে প্রিন্ট বাটনটি চাপার আগে একটুখানি পরিকল্পনা করে নিন। অনেক সময়ই দেখা যায়, প্রিন্ট করে ফেলে দু’ চারটা বানান বা অন্য কোনো ভুল চোখে পড়ে গেলে আমরা হাহুতাশ করি। এজন্যই পরিকল্পনার কথা বলছি। আগে ভাল করে
প্রুফ দেখার মত করে পড়ে নিন, যদি ছবি ব্যবহৃত হয়, ছবিগুলো জায়গামত আছে কিনা দেখুন, পৃষ্ঠা সংখ্যা দেয়া আছে কিনা তা দেখুন।
ডকুমেন্টকে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার করুন: আমাদের কারো কারো অভ্যাস আছে কাউকে কোনো ডকুমেন্ট পাঠাতে হলেই প্রিন্ট করে পাঠানোর। কিন্তু আজকের এই নেটওয়ার্কের যুগে সবকিছুরই যে প্রিন্ট কপি শেয়ার করতে হবে এমন কথা নেই। কাজেই আপনার অফিসে সহকর্মীদের সঙ্গে কিছু শেয়ার করতে হলে ইমেইল-এর সাহায্য নিন। আবার ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ বা পেন ড্রাইভের মাধ্যমেও শেয়ার করতে পারেন। পারেন ল্যান-এর সাহায্য নিয়ে সরাসরি তাদের কম্পিউটারে ডকুমেন্টটি কপি করে দিতেও।
‘কালি কম’ সিগনালকে বেশি গুরুত্ব দেবেন না: গবেষণায় দেখা গেছে, প্রিন্টার, বিশেষ করে লেজার প্রিন্টারে ‘আউট অব টোনার’ বা ‘লো টোনার’ সিগনাল দিলেও শতকরা ৪০ ভাগ ক্ষেত্রেই মোটামুটি ভালই কালি থেকে যায়। কাজেই ‘লো টোনার’ বা ‘আউট অব টোনার’ বাতি জ্বললেও ব্যতিব্যস্ত হবার প্রয়োজন নেই। ঐ টোনারটি দিয়েই প্রিন্ট করতে থাকুন, যতক্ষণ না মুদ্রিত ডকুমেন্টেই কালি কমার ব্যাপারটা বোঝা
যায়। পেজ হালকা প্রিন্ট হতে থাকে।
টোনার কার্ট্রজিকে শুকিয়ে যেতে দেবেন না: আপনি যদি প্রায়ই টুকটাক প্রিন্ট না করেন তাহলে টোনার বা কার্ট্রজি শুকিয়ে যেতে পারে। কাজেই কার্ট্রজিকে ফ্রেশ রাখার জন্য সপ্তাহে অন্তত একবার অবশ্যই প্রিন্ট করবেন। প্রিন্ট কোয়ালিটি খারাপ হয়ে গেলে তবেই টোনার পরিবর্তন করবেন।
প্রিন্টারকে সঠিকভাবে বন্ধ করুন: কম্পিউটারকে নিয়ম মেনে, সঠিকভাবে শাটডাউন করা যেমন জরুরী, প্রিন্টারকেও তেমনি নিয়ম মেনে বন্ধ করা জরুরী। প্রিন্টারের পাওয়ার বাটন চেপে এটিকে বন্ধ করলে প্রিন্টার হেড-কে পরবর্তী প্রিন্টিং-এর জন্য সঠিক জায়গামত রেখে তারপর প্রিন্টারটি বন্ধ হয়। কিন্তু আপনি যদি পাওয়ার বাটন না চেপে সরাসরি প্রিন্টার কেবল খুলে ফেলেন বা পাওয়ার সুইচ অফ করে দেন তাহলে সঠিক শাট ডাউন প্রক্রিয়া এড়িয়ে যাওয়া হয়, যা নিশ্চিতভাবেই প্রিন্টারের ক্ষতি করে। তাই সাবধান।
আশা করি এই তথ্যগুলো কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার প্রিন্টারের কালির আয়ু বাড়াতে পারবেন। এর পাশাপাশি সচেতন হোন কাগজ বাচাতেও। একুট খেয়াল কররেই আপনি নিজেই অনেক উপায় পেয়ে যাবেন, আবিস্কার করে ফেলবেন অনকে বুদ্ধি।
আমি একটা ব্লগ টাইপ সাইট ডেভলপ করছি। পাবলিক ব্লগ না, ব্যক্তিগত ব্লগ। সেখানে নিয়মিত মুভি রিভিউ, ই রিভিউ, পিসি গেম রিভিউ সহ টুকটাক লেখারিখি পাবলিশ করি আমি। একবার দেখবেন নাকি?
আমার সাইটটার একটা ফেবু পেজও আছে। সাইটটি ভাল লাগলে, এবং প্রতিদিন নিয়মিত পোস্ট আপডেট পেতে আগ্রহ বোধ করলে একটা লাইক দিন প্লিজ