বিয়ে হল , ন মাস হল । নতুন অতিথির আগমন এল,
পুরনো বরের নাকি চুলকানি এল। (উনি এবার নতুন করে বর সাজবেন)
চুলকানি রোগের চিকিৎসা বেশ ভাল, হাটবাজারে গেলেই হল।
নতুন করে বর সাজার রীতিনীতি, ঘোড়া রোগের ভীমরুতি।
এন্ট্রি হিস্টামিন এখন সকল মেডিসিনের দোকানেই পাওয়া যায়, আবার এন্টিফাংগাল ড্রাগ্স মোটামুটি রাস্তার মোড়ে ক্যানভাসার সাহেবরা নিয়ে বসেই আছেন। শুধু একটু খানি হৃদয় দিয়ে হাত বাড়ালেই হল।
দাম ও অনেক কম। কথায় বলে না চুলকানি রোগের সস্তা মলম!!!
আচ্ছা বলুন তো সন্তানের আগমনি বার্তাকে খোদার নেয়ামতের শোকর না ভেবে বরং নিজেকে নতুন করে সার্কাসের সং সাজাবার কি আছে!
মনে হয় পুরনো বিখাউজ নতুন করে চুলকিয়ে নিজের মালদারি ভাব জাহির করা , তাই নয় কি.....
বাঙালী নারীর সুন্দরী ভাব ফুটিয়ে তুলতে , কুঁশি করা শাড়ীর তুলনা হয়না।
বেনারশের বেনারশীর কি যে আকর্ষণ তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
আমার মা চাচীর বেনারশী শাড়ী খানা সবসময় সুটকেসেই থাকত, মাঝে মাঝে বলতাম এগুলো তোমরা পর না কেন।
শুধু শুধু আলমারীতে রাখ!
বলত বাবা: এক বারই তো পড়েছি, বারবার এগুলো পরে লোক দেখিয়ে লাভ কি। লজ্জা বলতেও একটা কথা আছে।
বিয়ের দিনে বরের আকর্ষণ, শীতের দিনে খেজুরের গুড়ের আকর্ষণ,
এখন আপনি যদি চৈত্র মাসে কম্বলমুড়ী দিয়ে মৃগী রোগীর ভান করেন , ডাক্তার আপনাকে কি ইনজেকশন দিবেন !!!
এরকম এক সং দেখতে গিয়েছিলাম ঢাকা শহর কম্উিনিটি সেন্টারে। গিয়ে দেখি এটি গীবত বিদ্যার মহান পাঠশালা।
কার বউ সুন্দর, কার কেমন অন্তর , কার কেমন জীবন যাপন, কার বউয়ের কত ওজন।
এই রচনা প্রতিযোগীতার সারাংশ তৈরীতে কেমন যেন সেমিনার চলছে।
আমার মনে পড়ল রাগঅনুরাগ ছবির হৈমুন্তী শুক্লার কণ্ঠের একটি গান।
কি গান শুনাব বল, ওগো সুচরিতা,
আমি যে তোমার , কত আপনার।
কত প্রিয়জন আমি , কি করে জানাই তা।
কত পথ পার হয়ে , সুরের পিয়াসা লয়ে ............
আজকে আমার কাছে এসেছ।
কে শুনবে কার গান, কার কবিতা, সবই ভণিতা, পুরনো রোগের নববারতা।
ন মাস আগে বিয়ে করা বউকে এই সিল্কি নামক বস্তায় ঢুকিয়ে স্টেইজে সাজিয়ে রেখেছে।
পুরনো বর শেরোয়ানী পরে ঘুরে ঘুরে অতিথি আলীঙ্গন করছে।
কিছুক্ষণ পর পর রুমাল মুখে ঢুকিয়ে লজ্জা লজ্জা ভান ধরছে।
বড়লোককে আগ্রহ ভরে আলীঙ্গন , গরীব আত্বীয়স্বজন তো ইশারায় মৌণ সমর্থন।
আমি কি আর করব,
আমার আধপড়া গেও ম্যাডামের দিকে ইশারা করে জানতে চাইলাম পুরনো নববধূকে কেমন যেন অস্বাসাভাবিক লাগছে।
উনি লাজুক লাজুক ভাব নিয়ে , তুমি এসব বুঝবে না, এসব মহিলা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের খবর।
তোমার এত কি দরকার। আমি ভাবলাম ঠিকই তো পুরুষ বিষয়ক মন্ত্রনালয় তো নেই।
তাহলে তো আমি পুরনো বিয়ের নতুন খবর শুনতাম। নতুন অতিথি আগমনের বার্তা পেতাম। একটু দোয়া করতাম।
পুরনোবধু বাচ্চা পেটে নিয়ে পেটব্যাথায় কাতরাচ্ছেন , উনি বউকে শ্যাম সাজিয়ে. নিজে নবরাধা সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
কেউ হয়ত বিয়ের সময় অনুষ্ঠান করতে পারেননি, সময় সুযোগমত একটা অনুষ্ঠান করবে, আত্বীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবদের নিমন্ত্রন করবে, ভালমন্দ খাওয়াবে, হতেই পারে।
কিন্তু মাথায় নবরাধা মুকুট, গায়ে নিত্যনতুন শেরোয়ানী, পায়ে নাগরা জুতার বাহারী, এগুলো পরে ঘুরে বেড়াবার হেতু কি!
কেন, বাঙ্গালী মুসলমানের উত্তম ভূষণ পাজামা পাঞ্জাবীর কি কোন দরদ নেই , না কোন কদর নেই।
রাজা বাদশার মুকুট সাদৃশ্য এটি পাগড়ীর আওতায় পড়ে না, রাসূল (সাঃ) পাগড়ী পরেছেন তাই মুসলমান হিসেবে উনার সম্মানার্থে জীবনে একবার হলেও এটি পরা উচিৎ, তাই বিয়ে হচ্ছে উপযুক্ত সময়।
তার মানে এই নয় আপনি রাজা বাদশার মুকুট পরে নবরাধা সেজে থাকবেন,
বউকে মন্দিরের প্রতিমা সাদৃশ্য শ্যাম সাজিয়ে ঘুরে বেড়াবেন।
হায়রে বাংগাল , তুমি এখন চুলকানি বিখাউজের মুসলিম নামের কাংগাল।
মানুষ ভাত পায় না, একটা টেবলেটের হাহাকার,
তোমার বাড়ী খোদাকে ভেংচি মারার অপচয়ের বাজার।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪১