ইদানীং হাট বাজারের অনেক উন্নতি হয়েছে, দামের উঠানামার গতিরোধক মিটার যদিও দ্রুত গতিতে তার পরও সব জিনিষই পাওয়া যায় বলতে গেলে, কিন্তু সন্যাসীদের পৈতা যেখানে সেখানে পাওয়া যায় এটা জানা ছিলনা! নবযুগের হাইব্রিড সন্যাসীদের পৈতার বদলে জুতার ফিতা পরিয়ে যখন খাঁচায় পোষা হয় তখন আফসোস হয় এই ভেবে যে,শত হলেও মোদের জাতি, কর্ম দোষে আজ হিজড়া প্রজাতি।
সন্যাস ব্রত সীদ্ধ করতে তপস্যার জপমালা গায়ে জড়াতে হয়, সংসার বিরাগী হয়ে স্রস্টার সান্নিধ্য খোজা হয়। নিরামিষ ভোজী হয়ে যদি মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়, ক্ষতি কি! কিন্তু স্ত্রীর ছলনায় পড়ে যখন আপন মা বাবা ভুলে শশুড় বাড়ীতে বেয়ারা সেজে মুরগীর খাঁচায় লুকিয়ে থাকা হয়। তখন পৈতার বদলে জুতার ফিতা ঝুলিয়ে দিলে মন্দ কি!
তবে দু:খের কথা কি জানেন, এই প্রজাতির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে গাণিতিক হারে। তাই ভাবলাম এত পৈতা এল কোত্থেকে! কারা এই শিল্পের শ্রমিক, মুজুরীই বা কত, কেন এত ইর্ষা, সব খেয়ে সন্যাসীদের পেছনে লাগার হেতুই বা কি!
তাই গিয়েছিলাম বাজারে, সপিংমলে রাক্ষুসীদের আনাগোনা যেহেতু যুগের চাহিদা সন্যাসীদের পেছন পেছন হাটতে দেখে পৈতার বদলে জুতার ফিতা কেনার ভান করে জান বাচিয়ে বেরিয়ে পড়লাম না জানি রাক্ষুসীরা আবার ঝাপটিয়ে ধরে।
বুকে থু থু দিয়ে গেলাম মনোহারী দোকানে , জিজ্ঞেস করলাম ভাই পৈতা আছে।
দোকানী বলল জুতার ফিতা আছে। ভাবলাম শোনেননি বোধহয়। একটু বুঝিয়ে বলতেই ইসারায় একজনকে দেখিয়ে দিলেন।
চোঁখতো ছানাবড়া আস্ত জেন্ত এক মহিলা ,
অনুসরন করছেন, ভাইজান আমার দেখছেন স্ত্রীর ছলাকলা।
মহিলার কানে দুল, হাতে বালা,
ভাইজানের হাতে মালমসলার পুটলা।
সাহস করে , আদব দিয়ে বললাম ভাই পৈতা আছে , ধমক দিয়ে আমায়, আমি কি জুতার ফিতা বিক্রি করি নাকি!
তাইতো রাক্ষুসীদের অমন ধমক যদি দিত , তাহলে তো মা বাবা ছেড়ে অমন সন্যাসী হত না, পৈতা বিক্রেতার তকমাও লাগতো না। আমারও বাজারে পৈতা তালাসে হন্যি হতে হত না।
আবার আমায় ধমক দিয়ে বললেন পৈতা তালাসের হেতু জানতে পারি কি?
অবশ্যই, আমাদের এলাকায় স্বামীখেকো সন্যাস মেলা বসবে কিনা তাই কয়েক হালি পৈতা আবশ্যক।
আসবেন কিন্তু...................
গান হবে: যেমন ধরুন আপনার স্ত্রীর মাজা ব্যাথা, শাশুড়ী দেখতে পারে না, ননদ ঝগড়া করে, দেবররা বেশী, উনি ঠিক মত খেতে পান না, আপনি ঠিক মত টাকা পাঠান না, তাই বাচ্চাকে বাপের বাড়ী রেখে পড়াশুনা করাতে হবে।
বাদ্য হবে: যেমন ধরুন আপনি ডুগডুগী বাজাবেন, আপনার স্ত্রী নাচবেন, আপনার স্ত্রীর উপর আপনার মাবাবা অত্যাচার করেন, আপনার এলাকায় ভাল স্কুল নেই, থাকার তেমন পরিবেশ নেই, আশেপাশে হাট বাজার নেই, শালাশালীরা শিক্ষিত,
আপনার শশুড় নামীদামী লোক , আপনার বাবা কামলা তাই আপনার ভবিষ্যত নস্ট হওয়ার সম্ভাবনা।
পুরষ্কার হিসেবে কিসের জানি একটা মালা দেয়া হবে সেটা মেলায় গেলেই দেখতে পাবেন।
মেলা বসলো বিকেল বেলা,
উনি এলেন সন্ধ্যে বেলা।
কি ভাই, কি ঝামেলা,
শুরু হল নতুন খেলা।
রাক্ষুসী স্ত্রী নাকি অগ্নীশর্মা মূর্তি ধারন করে উনাকে পৈতা পরিয়ে খাঁচায় আটকিয়ে রেখেছেন।
কি ভাই,আপনি পুরুষ না আপনার স্ত্রীকে ভয় পান কেন? (ভাই ইজ্জতের ভয়ে)!!!
ইজ্জতের এত ভয়! আপনার মা বাবার কি কোন ইজ্জত নেই! সবই বুঝি আপনার শশুর বাড়ীর।
ভাই কবেই মরে গেছি, এখন মমি বানিয়ে ব্যাটারী ঢুকিয়ে চার্জ দেয়, রিমোট উনার হাতে।
এক কাজ করুন চায়না ছবি দেখুন আর হারবাল ঔষধ খান।
কুম্ফু কারাতী শিখুন, হার বাল খেয়ে নতুন চুল গজান।
দুটো লাভ আগের মূল্যায়ন ফিরে যাবেন, নতুন যৌবন ফিরে পাবেন।
রক্ত যখন টগবগ করবে আপনি ব্রুশলি সেজে ঝেড়ে উঠবেন।
তাতো বুঝলাম রাক্ষুসীর ছলনায় যে কর্তব্য আমি হেয়ালী করেছি পরিত্রান কিভাবে পাব।
জীবন শায়ান্যে প্রশান্তির ঠিকানায় আমি কোথায় যাব।
ওরা কি আমায় স্থান দিবে।
আমি প্রস্রাব করে বিছানা ভিজিয়েছি, ঠান্ডা লাগবে বিধায় মা আমায় শুকনো চাদরে রেখেছে।
আমার প্রস্রাবের ভিজে বিছানায় মা আমার আধ ঘুমো কেটেছে।
আমায় পেটে রেখে এপাশ ওপাশ করেছে। আধো আধো খেয়ে জীবন কেটেছে।
কামলা বাবার কস্টের টাকায় টিফিন খেয়েছি,
মায়ের জমানো খুচরা টাকায় কলেজ গিয়েছি।
যে পরিবেশের ধুয়া তুলে অট্রালিকায় বাসা বাধার আশায় শশুর বাড়ীতে আস্তানা গড়লাম সেতো আজ জন্তু জানোয়ারের খোয়াড়, সেতো আজ জালিমের জুলুমখানা নরপিচাশদের কারাগার।
স্ত্রীর ছলনা আর মন ভুলানো কথায় আমার আপনজন ছেড়ে পরকে আপন করার যে টেবলেট আমি খেয়েছি রিএকশান আজ অনুভব করলেও একশান ছেড়ে আসার পথ যেন হারিয়ে ফেলেছি।
আমি খাঁচায় আবদ্ধ হলেও দুয়ার আমার খোলা কিন্তু আমি বেরুতে পারছিনা।
আপনিতো ফিউস, আপনিতো প্যারালাইসড, শশুরবাড়ী মধুরহাড়ী, আপন বাড়ীর গীবতকারীর যে প্যাথেডিন আপনাকে পুশ করা হয়েছে তার ক্রিয়াপ্রতিক্রিয়ার প্রতিষেধক এই দুনিয়ায় আজো আবিষ্কার হয় নাই। অতএব আপনাকে নব যৌবণে গর্জে উঠতে হবে। আগামী দিনের সন্যাস যারা
সন্যাস ব্রত ভাল জিনিষ স্রস্টার সান্নিধ্য পাওয়া যায়, কিন্তুস্ত্রী তপস্যায় সিদ্ধির সন্ধান তো দুরে থাক বরং ভবলীলা সাংগ হবে কোনই সন্দেহ নাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:০১