ইসলাম ধর্মের অবশ্য পালনীয় কর্তব্যগুলোর মধ্যে নামাজ অন্যতম। কিন্তু নামাজ বুঝে না পড়ার কারনে নামাজের প্রকৃত শিক্ষা ব্যাক্তি ও সমাজ জীবনে প্রতিফলিত হয় না তাই এই বিষয়টি উপলব্ধি করেই একজন তরুণ লেখক জনাব এডভোকেট আবদুল কাইয়ুম ভূইয়া অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত কলেবরে রচনা করেছেন ছোট্র একখানী বই যা তরুণ বন্ধু লেখকের অনুরোধে ব্লগে প্রকাশ করার মাধ্যমে নামাজের প্রকৃত শিক্ষা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করে যদি কোন পাঠক উপকৃত হন তাতেই সার্থকতা লেখকের,
এটি সম্পাদনা করেছেন তারই সহধর্মিনী জনাবা ইসমত জাহান (সিমি)।
সাধারন পাঠকের সুবিদার্থে আরবীর পরিবর্তে আরবীর বাংলা উচ্চারন তুলে ধরা হল
(যদিও বিদেশী ভাষার বাংলা উচ্চারন সঠিক হয় না)
আযানে মুয়াজ্জিন কি বলে ডাকেন।
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।
অর্থ: আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লালাল্লাহ ।
অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই।
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ ।
অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ স, আল্লাহর প্রেরিত রাসুল।
হাইয়্যা আলাস সলাত।
অর্থ: এসো নামাজের জন্য এসো।
হাইয়্যা আলাল ফালাহ।
অর্থ: এসো কল্যাণের দিকে এসো।
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।
অর্থ: আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ।
আযান কি শিখায়।
আযানের শক্তিশালী আহ্বান প্রত্যেক দিন পাঁচবার আমাদেরকে একথাই স্মরণ করিয়ে দেয়, পৃথিবীতে যতবড় খোদায়ী দাবীদার দেখা যাচ্ছে তারা সকলেই মিথ্যাবাদী, আকাশ ও পৃথিবীতে মাত্র একজনই খোদায়ী ও প্রভুত্বের অধিকারী এবং কেবল তিনিই ইবাদাতের যোগ্য। আসুন আমরা সকলে মিলে তাঁরই ইবাদাত করি। তার ইবাদাত এর মাধ্যমেই আমাদের ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ নিহিত।
এ মর্মস্পর্শী আওয়ায শুনে কেউ কি চুপ হয়ে বসে থাকতে পারে! যার অন্তরে বিন্দুমাত্র ঈমান রয়েছে , এতবড় নির্ভীক সাক্ষ্য এবং এত স্পষ্ট আহ্বান শুনে চুপ হয়ে বসে থাকা তার পক্ষে কোন মতেই সম্ভব নয় এবং প্রকৃত প্রভু- মালিকের দরবারে হাজির হয়ে তাঁর সামনে মাথা নত না করে সে কিছুতেই থাকতে পারে না।
আযান পরবর্তী প্রস্তুতি।
আযান শুনার সাথে সাথে একজন নামাজি মানসিকভাবে নামাজের জন্য প্রস্তুত হয়। প্রথমেই চিন্তায় আসে আমি কি পাক পবিত্র আছি? আমার জামা কাপড় পবিত্র আছে তো? যেহেতু মহান প্রভুর সাক্ষাতে যাবো যেহেতু আমার দেহ মন, কাপড় চোপড়ের পবিত্রতার পাশাপাশী বিশেষ পবিত্রতা অর্জনের লক্ষ্যে অযু করতে হবে।
ওযু শুরুর দোয়া।
ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ। এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহর নামে শুরু করলাম। সাইদ ইবনে ইয়াজিদ রা: বলেন, রাসুল সা. বলেছেন: যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহ বলনে না তার ওযু হবে না।(আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ)
ওযু শেষের দোয়া।
উচ্চারন: আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদহু ওয়া রাসুলুহু।
অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মা’বুদ নেই। তিনি এক, তার কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্স্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সা. তাঁর বান্দা ও রাসুল।
এ দোয়ার সাথে তিরমিযী শরীফের বর্ননায় আরো একটি দোয়া পাওয়া যায় তা হল।
উচ্চারন: আল্লাহুম্মাজ আলনী মিনাত তাওয়াবীনা ওয়াজ আলনী মিনাল মুতাতাহহিরিন।
অর্থ: হে আল্লাহ, তুমি আমাকে অধিক তাওবাকারী এবং পাক পবিত্র লোকদের অন্তর্ভুক্ত করে দাও। (সহীহ তিরমিযী ১/৪৯
পৃ: হা: ৫৫)
মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার দোয়া।
আবু সাঈদ খুদরী রা: হতে বর্নিত: তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে তখন সে যেন বলে ..
উচ্চারন: আল্লাহুম্মাফ তাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা।
অর্থ: হে আল্লাহ তুমি আমার জন্য তোমার রহমতের দরজা খুলে দাও।
আর যখন বের হবে, তখন যেন বলে
উচ্চারন: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাযলিক।
অর্থ: হে আল্লাহ আমি তোমার অনুগ্রহ কামনা করি। (মুসলিম, মিশকাত)।
তাকবীরে তাহরীমা:
নামায শুরুর সময় আমরা দু হাত কাঁধ বরাবর অথবা কান বরাবর উঠিয়ে বলি আল্লাহু ”আকবার” ( আল্লাহ সবচেয়ে বড়)।
সানা
উচ্চারন: সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাচমুকা ওতা আলাজাদ্দুকা ওয়া লাইলাহা গাইরুকা।
অর্থ: হে আল্লাহ আমি তোমারই পবিত্রতা বর্ণনা করছি, তোমার প্রশংসা সহকারে তোমার নামের বরকত ও মাহাত্ম্য সত্যই অতুলনীয়। তুমি সর্বশ্রেষ্ঠ, তোমার সম্মান সকলের উচ্চে, তুমি ছাড়া কেউ মা’বুদ নেই।
আউযুবিল্লাহ’ ও বিসমিল্লাহ’ পড়া..
উচ্চারন: আউযুবিল্লাহ হি মিনাশ শায়তানির রাজীম।
অর্থ: আমি আল্লাহর নিকট বিতাড়িত শয়তান হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
উচ্চারন: বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
অর্থ: পরম করণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।