হাতী যখন খাদে পড়ে তখন চামচিকাও তাকে লাথি পড়ে।
আজকের বিএনপির অবস্থা যেন তার থেকে কিছু আলাদা নয়। পরাজিত এই দলটিকে এখন প্রতি পদে পদে পরাজয়ের মাশুল গুনতে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিএনপি করার অপরাধে দুই জন নিহত হয়েছেন প্রতিপক্ষের হাতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উৎখাত করা হয়েছে ছাত্রদলের সমর্থকদের। সামনে ক্ষমতা দখলের পরে কি হবে, কে জানে।
পরাজিত প্রতিপক্ষের সাথে এসব খুব স্বাভাবিক আচরন। এরকমটা দেখেই আমরা অভ্যস্ত। ক্ষমতার পালা বদলের লড়াই এ বিএনপি আজ পরাজিত। যে পরাজয়ের সূচনা হয়েছিল ২০০৭ এর ১১ই জানুয়ারী। আর ২৯ শে ডিসেম্বরে শেষ হল তার সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা।
বিএনপি হেরেছে নির্বাচনে। গনরায়ে। যে জনতা আজ বিচারকের আসনে বসে আছে, তারা রায় দিয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে। মেনেই তো নিতে হবে সে রায়। কারন এ তো জনতার রায়। বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা, আজ জেগেছে সেই জনতা।
তবুও একটা কিন্তু থেকে যায়। বিচারক তার বিচার কার্য পরিচালনার জন্য নির্ভর করেন তথ্য প্রমানের উপর। যা সম্পূর্ন নির্ভর করে তদন্তকারী কর্মকর্তার সততা আর বিশ্বস্ততার উপর। ২০০১ এ জনতা প্রেসিডেন্ট বুশকে যে তথ্যের ভিত্তিতে ইরাক আক্রমনের ম্যান্ডেট দেয়, সেই তথ্যের মিথ্যাচার কালের আবর্তনে প্রমানিত হয়েছে। সময়ই বলে দিয়েছে জনতার সে বিচার ছিল কতটা নিখুত। ইতিহাস তার মূর্ত সাক্ষী হয়ে রয়েছে।
আজকের নির্বাচনের এই গনরায় অবাধ কিংবা স্বতঃস্ফূর্ত হতে পারে। কিন্তু সে রায় কি প্রকৃত তথ্যের উপর প্রতিষ্ঠিত? সে রায়কে কি প্রভাবিত করার কোন চেষ্টা করা হয় নি? নির্বাচন কমিশনের বি এন পির সাথে সংলাপে অনীহা, শুধুমাত্র বি এন পির পক্ষে লেখার জন্য শফিক রেহমানের চাকুরী হারানো, টি আই বির রিপোর্টে আওয়ামী আমলের দুর্নীতির পরিমান বেশী হওয়া সত্ত্বেও গ্রেফতার তালিকায় বি এন পির লোকজনের মাত্রাতিরিক্ত সংখ্যাধিক্য - এরকম শত সহস্র আচরন কি তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এই অন্তবর্তী কালীন সরকার আর নির্বাচন কমিশন করেন নি?
এই সংসদে বি এন পির যাওয়া আর না যাওয়া সমান কথা। সংসদে যাবার মত এমন কোন আসন সংখ্যা তাদের নেই। বরং সংসদে যাওয়া মানে সরকারের এবং নির্বাচন কমিশনের এইসব শত সহস্র পক্ষপাতমূলক কাজকে বৈধ বলে মেনে নেওয়া।
বি এন পির পরাজয় হয়েছে। কিন্তু পতন হয় নি। তাই বি এন পির উচিত হবে না নবম সংসদে শপথ নিয়ে মিশন বাস্তবায়নের এই সেনা সমর্থিত সরকারের এবং নির্বাচন কমিশনের স্বপ্নের চূড়ান্ত তৃপ্তি দেয়া।
থাক না এ সংসদটা বি এন পি বিহীন। কি দরকার, শপথ নেবার।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১১:১১