somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি খুন, অথবা নিছক আত্মহত্যার গল্প।।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি একজন অসুস্থ মানুষ।

আমার প্রিয় কুকুরটাকে আজ আমি গুলি করে মেরেছি। বেচারা শেষ মুহূর্তেও ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলো। আমি যখন ট্রিগারটা টেনে ধরলাম, তখন সে কি মনে করে আমার দিকে একটা দৌড় দিলো।

সূচলো বুলেটটা তার মাথার একপাশ দিয়ে ঢুঁকে অন্যপাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে। সে কাতরাতে কাতরাতে ঠিক আমার পায়ের কাছে এসে একবার কেঁপে থেমে গেলো। চারিদিকে থিক থিকে রক্তের মাঝে অল্প কিছু হলদে হলদে মগজও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লো।

আমি চেয়ে চেয়ে দেখলাম, গাঢ় লাল ঘন কালচে স্রোতে ভেসে যাচ্ছে মায়া। কিটিকে আমি বড় বেশি ভালবাসতাম। অবশ্য সে আমাকে যতটুকু ভালোবাসতো, তার চেয়ে বেশি নয়। মানুষের ভালবাসায় খাদ থাকে, পশুর ভালবাসায় খাদ থাকে না। আমার বিশ্বাস, কিটি কে যদি আমি কানে কানে বলতাম- আমি তোকে মেরে ফেলতে যাচ্ছি, সে আমার গাল দুটো চেটে দিয়ে মহানন্দে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতো। আমি জানি। আমার প্রতি তার তীব্র মায়া।

তার এই তীব্র মায়ার কারনেই আমি তাকে হত্যা করতে বাধ্য হলাম। খুব সম্ভবত, এই বাড়িতে এতাই আমার শেষ দিন। আমি হারিয়ে গেলে আমার কিটি সেটা সহ্য করতে পারতো না। সে আরও অনেক বেশি কষ্ট পেতো। কিছু কিছু কষ্ট মৃত্যু এর চেয়ে বেশি হয়। মৃত্যুর কষ্ট সাময়িক কষ্ট। আর কারো ফিরে না আসার কষ্ট অনন্তকালের। আমি সত্যি তাকে ভালবাসতাম, তাই তাকে খুব অল্প কষ্ট দেওয়াটাই শ্রেয় হবে। মনে হলো আমার কাছে।

ও কে কি সমাহিত করা উচিৎ? পোষ্য প্রাণী হিসেবে অন্তত এতোটুকু মর্যাদা বোধহয় পাওয়া উচিৎ ওর। কোথায় কবর দেবো? নদীর ধারে? জায়গাটা পছন্দ করতো ও। আমরা একই সাথে সন্ধ্যায় সেখানে বসতাম। আমি, নিবা আর কিটি।

নিবা আজ আমাকে ওর বাসায় ডেকেছে। আরেকটু পরে আমি ওর বাসায় যাবো। ও নিশ্চয়ই আমাকে একা দেখে অবাক হবে। জিজ্ঞাসা করবে, কিটি কোথায়, কেন আনিনি। কি উত্তর দেওয়া যায় , চিন্তা করছি। আমি সাধারনত মিথ্যা বলিনা। মিথ্যা ছাড়া কোনভাবে এই প্রশ্ন পাশ কাটানো যায় কি? মনে হয় না। নিবা বুঝে ফেলবে। নিবা অসম্ভব বুদ্ধিমতী। ওর বুদ্ধির সাথে এঁটে ওঠা মুশকিল।

নিবার চেহারায় অদ্ভুত ধরনের এক সারল্য আছে। দেখে বোঝার উপায় নেই, এই মেয়ে এতো বুদ্ধি নিয়ে চলে। তাকে দেখে একটা সাধারন মেয়ে বলেই মনে হয়। তবে কোন এক বিচিত্র কারনে আমার কিটি নিবাকে খুব বেশি একটা পছন্দ করতো না। কেন করতো না, সেটা নিয়ে আমি অনেক ভেবেছি। শেষ পর্যন্ত আমি সমাধান পেয়েছি। সমাধানটা খুবই সহজ। আমার ভুল, আমি জটিল করে ভাবছিলাম।

আমি একজন অসুস্থ মানুষ।

অসুস্থ মানুষের নিঃসঙ্গতাও অসুস্থ ধরনের হয়। আমার নিঃসঙ্গতাও ভয়ংকর ধরনের অসুস্থ। কেমন অসুস্থ, তার উদাহরন দেই। আমি আমার দুই স্ত্রীকে খুন করেছি এই কারনে। প্রথমজনের মস্তিস্ক কেটে। দ্বিতীয়জনকে পুড়িয়ে। মানুষ হিসেবে তারা ছিল নির্বোধ এর কাছাকাছি। নির্বোধ মানুষের কাছে আসলে কিছু আশা করা ঠিক না। তারা থাকাতেও আমার নিঃসঙ্গতা বেড়ে গিয়েছিলো কয়েক হাজার গুন। আমার পক্ষে সেটা সহ্য করা সম্ভব হয়নি।

আমার নিঃসঙ্গতার কারন কি? আমি সঠিক জানিনা। সম্ভবত, আমি মানুষকে খুব দ্রুত পড়ে ফেলতে পারি। যেসব মানুষকে চোখ বন্ধ করলেই খোলা বই এর মতো পড়ে ফেলা যায় তাদের প্রতি আকর্ষণ না বোধ করাটা স্বাভাবিক। আমার মন আসলে তৃষিত এর মতো এমন একটা মস্তিস্ক খুঁজছিল যেটা অতল। গভীর এবং রহস্যময়। যাকে সহজেই অনুমান করা যায়না।

স্ত্রীদের মৃত্যুর পর আমি অনেক কাল একা একা ছিলাম। নিবার সাথে আমার পরিচয়টা সে সময়ে। আসলে ঠিক পরিচয় না, আমি যে বারে বসে মদ্যপান করতাম, সেও সেখানে আসতো আরকি। অনেকবার চোখাচোখি হয়েছে।

সে যখন আমার কাছে আসতে চাইলো, আমি তাকে বার বারই সরিয়ে দিচ্ছিলাম। এই ভেবে যে, সে আর বাকি ১০ টা মেয়ের মতোই সাধারন একজন। সাধারন মেয়েরা বোকাসোকা হয়। তারা রুপবান পুরুষদের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে পছন্দ করে। তবে রুপের প্রতি মুগ্ধতা বেশিদিন থাকেনা। একটা সময়ে তাদের সেই মুগ্ধতা কেটে যায়। তারা চেতনায় ফিরে আসে ঠিকই, কিন্তু পুরুষদের আসে পাশে ঘুরঘুর করতে যেয়ে অনেক কিছুই হারিয়ে ফেলে।

অবশ্য আমার কাছে আসতে চাইলে সে ধরনের ভয় নেই। আমি মেয়েদের শরীর নিয়ে খেলতে পছন্দ করিনা। আমি মস্তিস্ক নিয়ে খেলতে পছন্দ করি। তবে এই খেলার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীকেও হতে হয় অনেক শক্ত, দুর্বোধ্য। নিবাকে তমন মনে হয়নি। আমি তাই তাকে নিয়ে একদমই মাথা ঘামাতে চাইনি। মাথা ঘামালেই দেখা যাবে, তার পরিনতিও আমার স্ত্রীদের মতোই হবে।

তবুও বারবারই আমার ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করতে লাগলো সে। আমি প্রথমে বিরক্ত এবং শেষে একসময় অনেকটা রাগই হলাম। নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও চিন্তা করলাম, আমি তাকে কঠিন শাস্তি দেবো। আমি তাকে কাছে আসতে দিলাম।

"মেয়ে, তুমি ভুল দরজায় কড়া নেড়েছো।"
নিবা হাসলো।
"আমার তা মনে হয়না।"
"তুমি চাও কি? প্রেম?"
নিবা এবার অট্টহাসি দিয়ে বললো-
"সুপুরুষ কি নিজের সৌন্দর্য সম্পর্কে খুব বেশি উচ্চ ধারনা পোষণ করেন নাকি?"
"তাহলে কেন এসেছো?"
"কারনটা কি নিজে খুজে বের করাই ভালো না?"
"আমি তো তোমার ক্ষতিও করতে পারি।"
"তাই কি? আমার তো মনে হয়, আমি শারীরিকভাবে আপনার কাছে নিরাপদ।"

আমি মেয়েটির সপ্রিতভ উত্তরে কিছুটা চমৎকৃত হলাম। মেয়েটা স্পষ্টভাষী, যদিও বয়সে সে আমার চেয়ে অনেক ছোট। তবে তার কথা বার্তা, এবং চিন্তার ধরনে সেটা মনে হয়না।

সে নিয়মিত আমার বাসায় আসতো। আমার বুক সেলফ থেকে বই বের করে করে পড়তো। শিল্প, সাহিত্য, চিত্রকলা- কৃষ্টি, এসব সম্পর্কে তার জ্ঞান মোটামুটি বেশ ভালো। তার সাথে এগুলো নিয়ে টুকটাক কথা বলতে আমার ভালোই লাগতো। যদিও তার পেশার সাথে এসব শিল্প সাহিত্য একেবারেই যায় না। সে একটা সবজির দোকানে কাজ করে।

একদিন সে আমাকে জিজ্ঞাসা করলো-
"আপনার লাল রং খুব পছন্দ। না?"
"কিভাবে বুঝলে?"
"প্রক্রিয়াটা জটিল। অনেকটা ধারনা থেকে বলছি, বলতে পারেন।"
"তারপরেও ধারনা করার জন্য কিছু নির্ণায়ক তো থাকা লাগে।"
"আচ্ছা, ঠিক আছে। আপনার চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য তাই বলে।"
"যেমন?"

নিবা একটা শ্বাস নিয়ে বললো-
"একা থাকতে পছন্দ করেন। অবলম্বনের প্রয়োজন নেই আপনার। তার মানে আপনি মানসিকভাবে দৃঢ়। আপনার রক্ত অহংকার প্রবল। লাল হচ্ছে রক্ত রং। লাল আপনার শক্তি। আমি কি ভুল কিছু বলেছি?"
"না।"

তার সাথে আমার সম্পর্ক আরও সহজ হলো। তার প্রতি আমার এক ধরনের আগ্রহবোধের জন্ম হলো। আমি তার কথা, চিন্তাভাবনা, মতামত এর গুরুত্ব দেওয়া শুরু করলাম। "আপনি" সম্বোধন থেকে "তুমি" তে আসতে তার বেশি সময় লাগলো না। তবে হ্যা, তার মাঝে একদমই আহ্লাদী ভাবটা নেই। ভালোবাসা, আবেগের ছোঁয়া নেই। সাধারন মেয়েদের যেসব ভুল ত্রুটি থাকে, সেসব তার মাঝে দেখা যায়না। সে একজন "প্রায়" ত্রুটিহীন নারীর মতো। "প্রায়" বলছি এইকারনে কারন পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত হওয়া কারো পক্ষে সম্ভব না।

আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম-

"একজন মানুষকে চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় কি?"
সে উত্তর দিলো-"তার চিন্তাভাবনার সাথে যুক্ত হওয়া।"
"সেটা করার মাধ্যম কি?"
"কথোপকথন।"
" তোমাকে তো সেই মানুষটা একটা ভুল ধারনাও দিতে পারে। চিন্তাভাবনাকে লুকানোর উপায় তো একটা মস্তিস্ক জানে।"
" হ্যা, অবশ্যই। কিন্তু কোনটা সত্যি, কোনটা মিথ্যা, সেটা যাচাই করার ক্ষমতা তো তোমার থাকতে হবে। সেটা যদি না ই পারো, তবে সে ব্যর্থতা তো তোমার, যে লুকাবে তার তো না।"
"আমি মিথ্যা বললে তুমি ধরতে পারবে?"
"পারার কথা। তুমি কি জানো, আমি মোটামুটিভাবে তোমাকে বুঝতে পারি?"
"কি ভাবে?"
"পারি আরকি।"
"আমার সম্পর্কে বলো।"

"আমি জানি তুমি কিছুটা অস্বাভাবিক। তুমি অপরাধ করতে সক্ষম। তবে তোমার কাছে অপরাধের সংজ্ঞাটা একটু ভিন্ন। সবার কাছে যেটাকে অপরাধ মনে হয়, তুমি হয়তো সেটা ক্ষমা করে দাও, আবার মানুষের খুব স্বাভাবিক ছোট ভুলগুলোও তোমার কাছে হয়তো অনেকসময় অনেক বড় অপরাধ। তোমার একটা জিনিস আমার খুব ভালো লাগে, সেটা হচ্ছে তোমার আদর্শ। তুমি নিজের আদর্শ থেকে কখনো সরে যাও না। অনেকটা নিজের নীতির উপর মটকা মেরে পড়ে থাকার মতো।"
"হম।"
"তোমার সাথে পৃথিবীর এক প্রজাতির প্রাণীর অনেক মিল। সেটা কি, জানো?"
"কি?"
"সরীসৃপ। এদের রক্ত ঠাণ্ডা হয়। তুমিও ঠাণ্ডা প্রকৃতির মানুষ। কিন্তু বিষধর। সরীসৃপদের সহজে পোষ মানানো যায়না। কিন্তু একবার পোষ মানলে তারা কোথাও যেতে চায়না। তোমার মধ্যেও এই বৈশিষ্ট্য আছে।"

তার কথার মাঝে কিছু একটা ছিলো, যেটা আমি চেষ্টা করে অগ্রাহ্য করতে পারলাম না। এবং একসময় আমি তাকে তীব্র ভাবে বিশ্বাস করা শুরু করলাম।

নিবা অতিদ্রুত আমার খাপছাড়া জীবনটাকে অনেকটাই গুছানো একটা জীবনে বদলে দিলো। এটা সে কিভাবে করলো, ভেবে মাঝে মাঝে আমি অবাক হই। সে তো আমাকে সম্মোহন করেনি। তবু আমি ওর কাছে একটা শিশুর মতো হয়ে গিয়েছিলাম। আমি তাকে সব বলতাম। সব। আমার অতীত জীবনের কথা, অপরাধের কথা, নিঃসঙ্গতার কথা। আমি তাকে বলেছি আমি কিভাবে আমার স্ত্রীদের হত্যা করেছি। আমি তার কাছ থেকে কিছুই লুকাইনি। সম্ভবত তার সাথে আমি যত কথা বলেছি, সারাজীবনে আমি ততো কথা বলিনি।

একদিন বিকেলে নিবা গাড়ি করে আমার বাসায় এলো।
"উঠে পড়ো।" বললো ও।
"আমরা কোথায় যাচ্ছি?"
"দোকানে।"
"ও। কিছু কিনবে?"
"হ্যা, তোমার জন্য।"
"কি সেটা?"
"গেলেই দেখবে।"

আমি ভেবেছিলাম, নিবা আমাকে কোন পোশাকের দোকানে নিয়ে যাবে। অথবা কোন বড় বইয়ের দোকানে। তার বদলে নিবা আমাকে নিয়ে এলো একটা পেট হাউসে।
"পেট হিসেবে তোমার কি পছন্দ, রুখ?"
"কোন সরীসৃপ।"

নিবা আমার দিকে বিকট একটা দৃষ্টি দিলো।

"সরীসৃপ পাওয়া যাবে না। অন্য কিছু নাও।"
"তাহলে কুকুর নেই একটা। কুকুর খুব বিশ্বস্ত একটা প্রাণী।"
"ঠিক আছে। কি ধরনের কুকুর চিতে চাও?"
"ছোটখাটো। এডোরেবল।"
"হম।"

আমরা কিটিকে পছন্দ করলাম। ছোটখাটো, সাদা। কোলে নেওয়ার পরেই সে আমার গালটা একটু চেটে দিলো।

"তোমাকে পছন্দ হয়েছে" বললো নিবা।

আমরা কিটিকে বাসায় নিয়ে আসলাম।

কিটিকে নিয়ে আমরা প্রায়ই বিকেলে নদীর ধারে ঘুরতে যেতাম। সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে থাকতাম। গল্প করতাম। আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর স্মৃতি কোনগুলো, প্রশ্ন করলে ওই বিকেলগুলোই উঠে আসে। আমি নিবার সাথে থেকে কেমন যেন ওর প্রতি অনেক বেশি আকৃষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম। তবে আমার দুর্বলতা আমি নিবার কাছে ঠিক প্রকাশ করতে চাইনি। নিবা আমাকে বলতো, প্রেম- ভালোবাসা একটা অসুখ। এটা অবশ্য আমিও একসময় ভাবতাম। নিবার মাঝে পুরনো আমার চিন্তা চেতনার এক ধরনের ছায়া ছিল।

মাঝে মাঝে নিবা আসতে পারতো না। তাকে একা হাতে অনেক কিছুই সামলাতে হয়। আমি তখন কিটিকে নিয়ে ওর বাসায় যেতাম। তবে কিটি এটা খুব বেশি একটা পছন্দ করতো না। সে সারাদিন আমার পাশে ঘুরঘুর করতো। আমার বাসাতেও নিবা এলে কিটি সেটা ভালভাবে নেয়না। আমি প্রথমে খুব একটা গা না করলেও শেষ পর্যন্ত অবাক হলাম।

নিবাকে বললাম- "কিটি তোমাকে বেশি একটা পছন্দ করেনা। খেয়াল করেছো?"
নিবা বললো- "হ্যা।"
"কারনটা কি?"
নিবা হাসতে হাসতে বললো- "কিটি তোমাকে খুব বেশি পছন্দ করে।" দুইজনকে তো একই রকম ভাবে ভালবাসা যায় না। তাই হয়তো।"
"কম পছন্দ করা এক জিনিস, আর পছন্দ না করা আরেক জিনিস।"
"জানি।"
"ওকে নিয়ে আসার সময় আমরা দুজনেই তো আনলাম। একজনকে সহ্য করতে পারবে , আরেকজনকে পারবে না, এটা কেমন কথা?"
"ও তো তোমার সাথে থাকে, আমার সাথে তো না। আর কুকুরদের প্রভু একটাই হয়। দুইটা না। আর স্পিটজ রা একটু বেশিই ন্যাওটা হয়।"
"তাই হবে হয়তো।" আমি মাথা চুলকে বললাম।

আমি বিষয়টা নিয়ে অতো বেশি মাথা ঘামালাম ও না আবার একেবারে ভুলেও গেলাম না। ব্যাপারটা আমার মনে সূক্ষ্ম একটা খটকা এর জন্ম দিলো। যদিও সেটা মনের ভেতরের অন্ধকারচ্ছন্ন গোপন একটা প্রকোষ্ঠে অনেকদিনই তালাবদ্ধ ছিল। হয়তো সেই তালা কখনো খোলাও হতো না যদি না আমি সেই দুঃস্বপ্নটা দেখতাম।

নিবা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে!!!

আমি ধড়মড় করে উঠে বসে দেখি, আমার সমস্ত শরীর ঘামে ভিজে গেছে। ঘর অন্ধকার। আমি বাতি জ্বালালাম। আমার বুঝতে সময় লাগলো যে এটা শুধুমাত্র একটা নিছক স্বপ্ন।

কিন্তু এটা আমি কি দেখলাম? কেন দেখলাম?

হ্যা, হতে পারে আমার অবচেতন মন অনেক গভীরভাবেই নিবার উপর আশ্রিত হয়ে পড়েছে। মানুষের যা নেই, মানুষ তা হারানোর চিন্তা করেনা। কিন্তু মানুষ যা পায়, তাকে আগলে রাখতে চায়। নিবা অসম্ভব চমৎকার একজন। সে তার মাঝে কিছু রহস্য ধরে রাখতে পারে। তার সাথে কোন একটা বিষয়ে আমার খুব মিল। কি মিল, সেটা ধরতে পারছি না। তবে নিবা সেই একজন, যাকে আমি বিশ্বাস করি। কোন কিছুর উপর কেউ খুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়লেই একসময় সেটাকে হারানোর ভয় আসে। মাথার মধ্যে চিন্তা ঘুরপাক খায়। এটা যে কারো জন্য সবচেয়ে বড় আতংক।

আমি নিবার নাম্বারে ডায়াল করলাম। দুই বার রিং হতেই ধরলো সে।
ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বললো- "কি হয়েছে?"
"কিছু না। এমনিই। ফোন করতে ইচ্ছা হলো আরকি।"
"দুঃস্বপ্ন দেখেছো?"
"হু।"
"কি দেখেছো?"
"কিছুনা।"
"বলো।"
"তুমি কি একদিন চলে যাবে?"
"সবাই তো চলে যাবে। কে থাকবে?"
"সেটা না। মানে বুঝো নি? আচ্ছা থাক, বাদ দাও।"
নিবা ক্লান্ত গলায় বললো- মৃত্যু পর্যন্ত আমি তোমার সাথে থাকবো।

আমি চুপ করে রইলাম। কি আশ্চর্য, আমি ঠিক এই বাক্যটাই শুনতে চাইছিলাম !

আমার মন থেকে তবু খুঁতখুঁত ভাবটা দূর হলো না। ধরে নিলাম, নিবা আমার সাথে থাকবে। কিন্তু কেন থাকবে? কি সেই কারক, যেটা নিবাকে ধরে রাখবে? আমার ব্যক্তিত্ব? মনে হয়না। আমি যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ। আমি একজন খুনি। আমি অপরাধ করতে সক্ষম। তাহলে কি? চেহারা? হতে পারে। আমার খোলসটা সুদর্শন। প্রেম ভালোবাসা ছাড়াও অন্য এক জৈবিক কারনে নারীদের সুপুরুষদের প্রতি আগ্রহ থাকে। নিবার আগ্রহ জন্মানোর সেটাই কি কারন? যদি তাই হয়ে থাকে, আমি অনেক বেশি কষ্ট পাবো।

নিবা কেন এসেছিলো, এটা পুরনো প্রশ্ন। এবং আমি অবাক হয়ে খেয়াল করলাম, নিবা এই প্রশ্নের উত্তর দেয়নি কখনো। সযত্নে এড়িয়ে গেছে।

আমি ঠিক করলাম, একটা ছোট্ট পরীক্ষা করবো। যদিও সেটা একটু যন্ত্রণা দিলো। আমি আমার শরীরের একপাশটা ঝলসে ফেললাম। আমার সুন্দর মুখটাও নষ্ট হয়ে বিশ্রী, কদাকার একটা রুপ নিলো।

নিবা এসে আমার অবস্থা দেখলো। সরু চোখে বললো- কিভাবে হয়েছে?
"স্টোভ বার্স্ট করেছে।"
"আমার সাথে মিথ্যা বলবে না।"
"আচ্ছা।"
"কিভাবে হয়েছে?"
"নিজে করেছি।"
"কেন?"

আমি জবাব দিলাম না।

নিবা বিড়বিড় করে বললো- রুখ, ইউ আর এ সিক গাই, ইউ আর এ সিক গাই।

আমার সুন্দর চেহারা নষ্ট হয়ে গেছে। আমার সৌন্দর্য, চলে গেছে। আমি কি এখন কিটির কাছে একজন অপরিচিত মানুষ? মনে হয়না। কিটির চোখে আমার জন্য গভীর মায়া আছে। আমি দেখতে পাচ্ছি। নিবার চোখ মুখ এখনও আগের মতোই ভাবলেশহিন। তার চোখে মায়া দেখছিনা। আমার খারাপ লাগছে।

"কেন এটা করলে?"
"এমনিই। বেঁচে থাকার জন্য কি সৌন্দর্যের প্রয়োজন?"
"না অবশ্যই না। তবে জীবনে বেঁচে থাকার মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে সুখ। এটা করে কি তুমি কোন সুখ পেয়েছো? শুধু তো যন্ত্রণাই পেয়েছো।"
"আমি যদি বলি, সুখ খুঁজতে যেয়েই আমাকে এমনটা করতে হলো, তাহলে?"
"সুখ তো এভাবে খোঁজা যায়না, রুখ। সুখ খুঁজতে গেলেই সুখ পালিয়ে যায়।"
"সুখ পালিয়ে গেলে সুখের পর কি থাকে?"
"সুখের পর অসুখ।"
"সুখকে কোনভাবে ধরে রাখা যায় না?"
"আমি জানিনা।"
"তুমি কি সুখী? এই মুহূর্তে?"
"হ্যা।"
"চলো, দুজনে মিলে এখন ঘুমিয়ে পড়ি অনন্তকালের জন্য।"
"মানে কি?"
"অসুখ আসতে পারবে না তাহলে।"
"রুখ, তুমি দিন দিন আরও বেশি অপ্রকৃতস্থ হয়ে যাচ্ছ।"

আমার ঘা শুকাতে অনেকদিন লাগলো। এর মাঝে নিবা আসেনি আর আমার কাছে। শুধু ফোন করেছে। কেন আসেনি, জিজ্ঞাসা করেছিলাম। সে বলেছে, আমার কিছুদিন একা থাকা দরকার। দুজন মিলে ঘুমিয়ে পড়ার কথা শুনে সে নিশ্চয়ই খুব দ্রুত কিছু পরিকল্পনা করেছে। হা হা হা। অবশ্য একা থেকে ভালোই হয়েছে। দীর্ঘদিনের অব্যবহৃত শীতল চিন্তাশীল মস্তিষ্কটা আবারো জেগে উঠেছে। অনেক প্রশ্নের উত্তর খোঁজার প্রয়োজন ছিল।

অনেক দিন পরে আজ নিবা আমাকে ওর বাসায় ডেকেছে। আমি যাচ্ছি। এই ঘরে সম্ভবত এটাই আমার শেষ দিন। আজকের পর আমি হয়তো এখানে আর ফিরে আসবো না। আমার অনুমানশক্তি তাই বলে।

নিবার সাথে আমার একটা অদ্ভুত মিল ছিলো। আমি অনেকদিন খুজেছি। খুব সম্ভবত আমি আজ জানি, মিলটা কোথায়। আমি এখন জানি, নিবা কেন আমার কাছে এসেছিলো। এটা একটা খেলা। অসাধারন, এবং বিপদজনক।

নিবাও আমার মতোই একজন ভয়ংকর মানুষ। ঠিক আমারই মতো। সেও আমার মতোই মস্তিস্ক নিয়ে খেলতে পছন্দ করে। এই খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বী হতে হয় শক্ত। না হলে খেলায় কোন আনন্দ নেই। তাই হয়তো সে খুঁজে খুঁজে আমাকেই বের করেছিলো। নিবার আলাদা একটা জীবন আছে। তার আলাদা আবেগ আছে, আলাদা অনুভুতি আছে। সে অনেক বুদ্ধিমান, তার একান্ত ব্যক্তিগত অনুভুতি পর্যন্ত আমি পৌছাতে পারিনি। বুদ্ধির খেলায় সে আমাকে হারিয়ে দিয়েছে। আমি নিবার কাছে হেরে গেছি। আমি তাকে বই এর মতো পড়তে পারিনি, সে আমাকে পড়ে ফেলেছে। বই এর মতো যাকে পড়া যায়, তার প্রতি একসময় আগ্রহ হারিয়ে যায়। নিবা এটা জানে।

আমি তার চোখে নির্বোধ একজন। নির্বোধের মতো আমি তার প্রেমে পড়ে গেছি। আমার মাঝে আর কোন রহস্য নেই, আমি তাকে আমার পুরোটাই বলে ফেলেছি। সে কেন আমার সাথে থাকবে? সে আমাকে ভালবাসলেও এক সময় তার ভালবাসা শেষ হয়ে যাবে। সে তখন মুক্ত হতে চাইলেও আমি তখন তাকে জোর করে আটকাতে চাইবো। সমস্যা হচ্ছে নিবা জানে, আমি ভয়ংকর। আমার পক্ষে যে কোন কিছুই করা সম্ভব। এই খেলা বেশিদিন খেলা তার পক্ষে বিপদজনক। সে এখন কিছু একটা করবে। খুব সম্ভবত সে আমাকে হত্যা করবে। নির্বোধ সঙ্গীকে হত্যা করাই শ্রেয়। যেমনটা আমি আমার নির্বোধ সঙ্গিনীদের করেছিলাম। নিবাও তাই করবে।

কিটি নিবাকে ঠিক পছন্দ করতো না। যে জিনিস বুঝতে আমার এতো সময় লাগলো, আমার প্রিয় কুকুর সেটা প্রথমেই বুঝেছিলো। পশু পাখিদের চেতনাবোধ প্রবল। অনেক জিনিস তারা আগে ভাগেই বুঝতে পারে। প্রকৃতির সাথে বেড়ে ওঠে তো, হয়তোবা তাই।

নিবা আমাকে বলেছিলো- মৃত্যু পর্যন্ত সে আমার সাথে থাকবে। নিবা মিথ্যা বলেনি। আমার মৃত্যু পর্যন্ত সে আমার সাথেই আছে। নিবা আমাকে আজ হত্যা করবে। আমি জানি। এটা আমার প্রাপ্য, কারন আমি খেলায় হেরে গেছি। আমি তাকে ভালোবেসে ফেলেছি। ভালোবেসে ফেললেই, খেলা শেষ। আমি অবশ্য চাইলে খেলা আরও প্রলম্বিত করতে পারি, কিন্তু করবো না। আমি নিবাকে জিতাতে চাই। নিবা আমাকে হত্যা করলে আমার কোন আক্ষেপ নেই। বরং আমার ভালোই লাগবে। প্রিয় মানুষের হাতে মৃত্যুবরণ করতেও আনন্দ। যেমনটা কিটি আমার হাতে করেছে। নিজেকে হঠাৎ কিটির মতো মনে হচ্ছে।

আমি গায়ে ওভারকোটটা চড়িয়ে রাস্তায় নামলাম। ডিসেম্বর মাস। চারিদিকে বরফ পড়ছে। ইটস এ কোল্ড কোল্ড ডিসেম্বর।

আরেকটু পরেই আমি নিবার বাসায় পৌছাবো। মেয়েটা কিভাবে আমাকে হত্যা করে, সেটা আমার দেখার খুব আগ্রহ। তবে কি দিয়ে হত্যা করবে, তা ধারনা করতে পারি। সে সবজির দোকানে কাজ করে। ছুরি কিভাবে চালাতে তা সে সবচেয়ে ভালো জানে। হিসাব মতো তার ছুরিই ব্যবহার করার কথা। দেখা যাক। সে যখন ছুরি চালাবে, তখন কি তার চোখে কোন মায়া আসবে? আমি তার চোখে একটুখানি মায়া দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।

বাইরে ঝিরিঝিরি তুষার পড়ছে। চারপাশ ঠাণ্ডা। তবে ভেতরটা উষ্ণ। সেখানে আছে নিবার জন্য ভালোবাসা।




----------------------------------------------------------------------------------


( মার্চ মাসে ছোট ছোট আলাদা দুইটি গল্প লিখেছিলাম। একটির নাম "বিহাইন্ড দ্যা মাস্ক।" অন্যটি- "অন্ধকারে জমাট বাধা পাপ এবং কিছু অপরাধবোধ।" দুটোই আলাদা গল্প, কোনভাবে দুটোর কাহিনী এক করা যায়না আরকি। তবে এই গল্পটি লিখতে যেয়ে খেয়াল করে দেখি, এই গল্পটি বাকি দুটি গল্পের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। যদিও তিনটি গল্পই আলাদা আলাদা তিনটি একক, তবুও এই গল্পটিকে "বিহাইন্ড দ্যা মাস্ক" গল্পটির সিকুয়েল হিসেবে ধরা যায়, আবার "অন্ধকারে জমাট বাধা পাপ এবং কিছু অপরাধবোধ" লেখাটির প্রিকুয়েল হিসেবেও ধরা যায়।

অনেকটা কাকতালীয় ভাবেই তৈরি হয়ে গেলো- বিহাইন্ড দ্যা
মাস্ক (ট্রিলোজি)

প্রথম পর্ব- বিহাইন্ড দ্যা মাস্ক।

দ্বিতীয় পর্ব- একটি খুন, অথবা নিছক আত্মহত্যার গল্প।

তৃতীয় এবং শেষ পর্ব- অন্ধকারে জমাট বাধা কিছু পাপ এবং অপরাধবোধ
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৪৪
৪৭টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×