somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্মৃতির জানালায়: সপ্নের শহর ঢাকা থেকে গ্রামের প্রশান্তি

১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ঢাকা — এক সময়ের স্বপ্নের শহর। এই শহরকে আমি একসময় ভেবেছি এক অলৌকিক জায়গা, যেখানে আছে অগণিত নাগরিক সুবিধা। তিতাস গ্যাস, বিদ্যুতের লাইন, ইন্টারনেট কানেকশন, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, নিয়মিত ময়লা অপসারণ—সবকিছুই যেন এক পরিপূর্ণ নাগরিক জীবনের প্রতিচ্ছবি।

জয়পুরহাটে ছিলাম আমি ক্লাস সিক্স থেকে এইট পর্যন্ত, বাবার চাকরির সুবাদে। তখন মাঝে মাঝে ঢাকায় মামার বাসায় বেড়াতে আসতাম। মামা থাকতেন বাড্ডায়। সেই সময় ঢাকায় পা রাখলেই মনে হতো—আমি যেন কোনো বিজয়ী যোদ্ধা, মহান কিছু জয় করে ফেলেছি। রাস্তায় লম্বা বিল্ডিং, গার্ডার ব্রিজ, ঝকঝকে শপিং মল—সব কিছুই আমাকে মুগ্ধ করতো।

এরপর আমি চলে যাই মুন্সীগঞ্জ, নানার বাড়ি। তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। নিজের টাকায় একটা মোবাইল কিনেছিলাম—নকিয়া ১৬৬১। সেই ফোনে ছিল এফএম রেডিও। মুন্সীগঞ্জে রেডিওর সিগন্যাল যেমন ভালো পাওয়া যেত না, তেমনি ঢাকায় এলেই একদম পরিষ্কার ধরা দিত। তাই ঢাকায় যাওয়ার জন্য থাকতাম উগ্রীব। ঢাকায় গেলেই কানে হেডফোন, আর রেডিও-ই ছিল আমার সঙ্গী।

একবার মামাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম—“মামা, ঢাকায় বড়লোকরা কোথায় থাকে?” হয়তো মামা বুঝে গিয়েছিলেন, উত্তর দিলে আমি বায়না ধরে বসব ধানমন্ডি বা বনানীতে যাওয়ার। তাই চুপ ছিলেন।

কিন্তু সময় বদলায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে দৃষ্টিভঙ্গিও বদলায়। এখন ঢাকায় থাকলে বরং ক্লান্তি লাগে, একরকম অসহ্য লাগে। কোলাহল, জ্যাম, দূষণ—সব মিলে যেন হাঁপিয়ে ওঠা এক জীবন। এখন বরং গ্রামের জীবনটাই ভালো লাগে।

আমাদের গ্রামের বাড়িতে আছে তিতাস গ্যাসের সংযোগ। হাতের কাছে মুদির দোকান, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট—সবই তো আছে। শান্তির একটা পরিপূর্ণ চিত্র যেন আঁকা থাকে প্রতিদিনের জীবনে। এখানে নেই ভিড়, নেই কোলাহল। আছে প্রকৃতি, প্রশান্তি আর এক টুকরো নির্ভেজাল জীবন।

ঢাকার প্রতি ভালোবাসা এখনও আছে, স্মৃতির পাতায়। কিন্তু এখন আমার মন পড়ে থাকে গ্রামের উঠোনে, কুয়াশাভেজা সকালের চা-এ, আর সন্ধ্যায় পাখির ডাকে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প- ৯৩

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:২৮




দুই ভাইবোন। আপন দুই ভাইবোন।
ভাই-বোন দু'জন আলাদা হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই। কথাবার্তা নেই। একজন যেন আরেকজনের শত্রু। বাপের সম্পত্তির কারণে আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াই=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:১২


এই উষ্ণতায় ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াই নদীতে সমুদ্দুরে
বালুচরে হেঁটে বেড়াই,
ঢেউয়ে থাকি বসে, জল এসে ছুঁয়ে দিক আমায়,
হিম হাওয়া এসে ভাসিয়ে নিয়ে যাক সুখের সপ্ত আসমানে।

এই বৈশাখে ইচ্ছে করে পুকুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি শেষ কবে একটি বই পড়েছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২২


আজ ২৩ এপ্রিল, বিশ্ব বই দিবস। অনেকেই একে বলেন ‘বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস’। ইউনেসকোর উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে দিনটি পালিত হয়ে আসছে বই, লেখক এবং কপিরাইট রক্ষার বার্তা নিয়ে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেমিট্যান্সযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১৫

টাকা পাচারকারীদের ধরা খুব মুশকিল বলে উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেছেন, টাকা পাচারকারীদের যদি কোনোভাবে ধরতে পারেন, তাহলে ছাড় দেবেন না। আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিশুদের গুড টাচ ব্যাড টাচ শেখানো আপনার দায়িত্ব

লিখেছেন অপলক , ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৩৪

বর্তমানে বাংলাদেশে একক পরিবার বেশি। আগের যুগে যৌথ পরিবারে শিশুরা বয়োজৈষ্ঠ্যদের কাছে অনেক কিছু শিখত, নিরাপত্তা পেত। এখন সে সুযোগ অনেকটাই কম। কিন্তু পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, ৫ বছরের শিশুও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×