“ঈশ্বরের মহিমার অন্ত নাই।..... একটি পতঙ্গের ক্ষুদ্র পালকে তাঁহার অনন্ত শিল্পকার্য্য বিভাসিত হইতেছে।” (বিষাদ সিন্ধু)- মীর মশাররফ হোসেন
“যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে”- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বাংলা সাহিত্যের তিন উজ্জ্বল নক্ষত্র। সাহিত্যের শাখা ও সময়ের বিচারে তাঁদের অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন হলেও একটি জায়গায় উনাদের অবস্থান অভিন্ন। জন্ম ও কর্ম সুত্রের কারণে বাংলা সাহিত্যের এই তিন দিগপালের অনেক স্মৃতি বাংলাদেশের একটি উপজেলায় বিদ্যমান। উপজেলার নাম কুমারখালী। গড়াই নদীর তীর ঘেষে গড়ে উঠা কুস্টিয়া জেলায় যার অবস্থান। রূপ-বৈচিত্র্য ও নদীর কারণে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাকেই এক একটি পর্যটন কেন্দ্র বলা যায়, সেই হিসেবে কুস্টিয়া জেলা পর্যটনের এক অপার সম্ভাবনা। ছেউড়িয়া লালনের আখড়া আর শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠি বাড়ির জন্য এই জেলা বিখ্যাত হলেও এখানে দেখার আছে আরো অনেক কিছু। সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা, গড়াই নদীর বালুচর, রেনউইকের বাঁধ, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, নব্য নির্মিত লালন শাহ ব্রীজ এবং তার পাশেই বিখ্যাত হার্ডিঞ্জ ব্রীজ আরো অনেক কিছু।]]
যাত্রা প্রস্তুতি....
বুয়েট বন্ধ। ভ্যাপসা গরম, দম বন্ধ আবহাওয়া আর ম্যাড়মেড়ে বিশ্বকাপ সব মিলিয়ে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। ঘামে ভেজা শরীরকে তালপাতার পাখা দিয়ে বাতাস করে ঠান্ডা করা ছাড়া কোনো কাজ নেই। দিনের অর্ধেক সময়ই ইলেক্ট্রেসিটি থাকেনা, বিশ্বকাপ নিয়েও হৈ-হুল্লোড় করতে পারছিনা আর এর মাঝখানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়ার একটা সুযোগও হাতছাড়া হয়ে গেল। মন-মেজাজের সাথে সাথে শরীরটাও মনে হয় খারাপ হওয়া শুরু করবে। কোথাও থেকে ঘুরে না আসা পর্যন্ত শান্তি পাচ্ছিনা। ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙ্গে আর আমি বর্তমানে বাসা নামক স্বর্গে আছি আর ধান ভাংছিনা ব্যাপারটা ঠিক যাচ্ছেনা। সময়ে-অসময়ে ঘুরাঘুরি করা যার স্বভাব সে কিনা অফুরন্ত সময় পেয়েও ঘরে বসে পঁচে মরছে। না, এভাবে পঁচে মরা নয়, হুট করেই সিদ্ধান্ত নিলাম ঘুরতে যাব যে ভাবেই হোক। আমার বন্ধু সাইফকে ফোন দিলাম, এই ছেলেটাও ঘুরাঘুরি করতে কিঞ্চিত ভালবাসে আর সবচেয়ে বড় কথা হল সারা বাংলাদেশে এই ছেলেটার কোনো না কোনো বন্ধু আছে, ফলে ওই বন্ধুকে ফোন করে হুট করেই ওই খানে চলে যাওয়া যায় আর খুব কম খরচে জায়গাটা ঘুরে দেখা যায়। দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম লালন সাঁইজীর জেলা কুস্টিয়া যাব। বন্ধু সাইফের বাড়ি মেহেরপুর জেলা, কুস্টিয়ার উপর দিয়ে তার যাতায়াত কিন্তু এই জেলাটি তার এখনো অদেখা আর আমার তো অদেখাই,যথারীতি সাইফের কুস্টিয়ার এক বন্ধু জহরুলকে ফোন; ওই ছেলে কুস্তিয়া ইসলামী ইউনিভার্সিটিতে পড়ে, থাকে জেলা শহরের মেসে, ওকে বলে দেয়া হলো আমরা আসছি......।
যাত্রা পথে....
দ্রুত ব্যাগ গুছিয়ে চলে গেলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। আমার বন্ধুবর সাইফ গতরাত ওইখানে ছিলেন। সকালের পত্রিকায় দেখি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়ানক মারামারি, তিন-চার তলা থেকে ছাত্রদের মেরে মেরে নিচে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। ভয় পেয়ে গেলাম, এই বেলা মনে হয় যাওয়া হচ্ছেনা কিন্তু না ওইখানে গিয়ে দেখি সবকিছু শান্ত, দেখে বুঝারও উপায় নেই গতদিন এখানে কি ভয়ানক কান্ডটাই না ঘটেছে। যাক বাবা বাঁচা গেল, ভালোয় ভালোয় নবীনগর বাস কাউন্টার থেকে ২৫০ টাকার টিকিটে কুস্টিয়ার শ্যামলী পরিবহনে বেলা ৩.৩০ মিনিটে বাসে উঠে বসলাম। ওইখান থেকে কুস্টিয়া চার ঘন্টার পথ, ফেরি পারাপার করেও যাওয়া যায় তবে আমাদের বাস যাবে যমুনা সেতু (বঙ্গবন্ধু সেতু) দিয়ে। ভালো লাগলো ব্যাপারটা, ফেরি পারাপারের দূর্ভোগটা কমবে আর তার সাথে যমুনা ব্রীজটাও দেখা হবে। এতদিন হয়ে গেল কিন্তু ওই পথে যাতায়াত না থাকার কারনে যমুনা ব্রীজটা এখনো দেখা হয়নি, যাত্রার সাথে ফাও ব্রীজটা দেখা হয়ে গেল আর সিরাজগঞ্জ, নাটোর, পাবনা জেলা অতিক্রম করে নব্য নির্মিত লালন শাহ ব্রীজ দিয়ে কুস্টিয়া প্রবেশের মুখে হাতের ডানে দেখে নিলাম ঐতিহ্যবাহী হার্ডিঞ্জ ব্রীজ। ঠিক চার ঘন্টা পর কুস্টিয়া সদরের মজমপুর গেট এলাকায় বাস থেকে নামলাম, তারপর ১০ টাকা রিক্সা ভাড়ায় চলে গেলাম শহরের কোর্টপাড়া এলাকায় সাইফের বন্ধু জহরুলের মেসে। জহরুল ছেলেটা বড় অমায়িক, সবসময় মুখে হাসি লেগে আছে। আমরা আসব জেনে মেসে খাবারের মীল অর্ডার দেওয়া ছিল, আহামরি হয়তো কিছু নয় তবে খাবারটা খেয়ে তৃপ্তি পেলাম। আর মেসটাও অন্য আট-দশটা মেসের মত ঘিঞ্জি নয় বরং যথেষ্ট খোলামেলা। রাতে আবার হল্যান্ড-উরুগুয়ের সেমিফাইনাল খেলা, কার্ড খেলে সময় পার করে খেলা দেখার ইচ্ছা, খেলা দেখলামও তবে প্রথম হাফ। ততক্ষণে চোখে ঘুম চলে এসেছে এবং অবশেষে আরামের ঘুম। শরীরটাকে তো বিশ্রাম দেওয়া দরকার, কালকে যে ঘুরাঘুরি করতে হবে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়....
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখব বলে ঠিক করলাম। শহর থেকে ২৬ কি.মি.দূরে। কুস্টিয়া-ঝিনাইদহ জেলার মাঝামাঝি অবস্থান। ভার্সিটির বাস ছাড়া যাওয়াটা বোকামি আর বন্ধু জহরুল যেহেতু ওইখানেই পড়ে তাই আর ভাবনা কি। চলে গেলাম ওর ক্যাম্পসটা দেখতে। প্রায় ঘন্টা খানেকের জার্নি, রাস্তার পাশের গাছ-গাছালি দেখতে দেখতেই পৌছে গেলাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। বিশাল ক্যাম্পাস, সব কিছু সাজানো গোছানো, হেটে হেটে পুরো ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখলাম। যদিও ব্যাপারটা কষ্টসাধ্য ছিল কারণ ক্যাম্পাসটা যথেষ্ট বড় তবে হাতে সময় ছিল আর যেহেতু ভার্সিটির বাসেই ফিরব তাই এভাবেই সময় পার করলাম।
লালনের মাজার....
বিকালে লালনের আখড়ায় যাবার প্ল্যান, ইতিমধ্যে আমদের কুস্টিয়ার ছেলে; বন্ধু রানা এসে উপস্থিত। তার কিছু বন্ধু আর আমরা মিলে রওনা দিলাম লালনের আখড়ায়। শহর থেকে বেশ কাছেই, তিন জনের রিক্সা ভাড়া বিশ টাকা। তবে হ্যা, কুস্টিয়ায় দশ টাকা রিক্সা ভাড়াকে ঢাকার রিক্সা ভাড়ার সাথে তুলনা করাটা বোকামি হবে, দশ টাকার রিক্সা ভাড়ায় উঠে যদি আপনি বন্ধুকে কল দিয়ে বলেন দোস্ত ৫টা মিনিট ওয়েট কর, চলে আইছি; তাদের বলছি কুস্টিয়ার দশ টাকার রিক্সা ভাড়া মানে আপনাকে কমপক্ষে ৭ কি.মি. পথ যেতে হবে যা ঢাকার সাথে তুলনা করলে ৬০ টাকার কমে কখনো সম্ভব নয়। থাক সে কথা। লালনের আখড়ায় গেলাম।কালীনদীর তীর ঘেষেই লালনের মাজার,(কথিত আছে এই কালী নদী দিয়েই শিশু লালন ভেসে এসেছিলেন সেই কারনে মাজারে তার কবরে জন্মসাল অজ্ঞাত লিখা। তবে এখন সেটা আর নদী নেই, চর পড়ে পড়ে পুকুরে রূপ নিয়েছে) লালন ও তাঁর পালক মায়ের কবর ভেতরে, এখানে ছবি তোলা বারণ তবে বাইরের অন্য কবর গুলোর ছবি তোলা যায়। বিশাল খোলা একটা অডিটোরিয়াম আছে আর আছে ছোট একটা যাদুঘর যেখানে লালনের অনুসারীদের ব্যবহার্য কিছু জিনিসপাতি, কিছু হাতে আঁকা ছবি, লালনের বসার টুল আর ঘরের দরজাটা আছে। এত অল্প জিনিস দেখার পর দুই টাকার টিকিটটাকে একটু বেশিই বলে মনে হবে। উপরে লাইব্রেরী আছে একটা। গানের আসর বসে সন্ধ্যায় তবে এখন লোক সমাগম কম বলে সেটাও নিয়মিত নয়, অগ্যতা কি আর করা। ফিরে চললাম আমাদের ঘাটিতে। রাতে এদিক সেদিক ঘুরে ২৫ টাকার প্রথম শ্রেণীর টিকিটে আখি সিনেমা হলে ‘টাকার নেশা’ নামে একটা বাংলা ছিনেমা দেখলাম। রাতের ওই শোতে আমরা ছাড়া আর দর্শক ছিল মাত্র দশ জন। মশার কামড় আর কিছু ঝাকানাকা নৃত্য দেখে আধা ঘন্টা পরই শো দেখাতে ক্ষান্ত দিলাম। মানুষ যে কেন সিনেমা হলে যায় না তা ওই হলের অবস্থা দেখলেই বলে দেয়া যায়। সিনেমা হলের পরিবেশটা ভালো হলে হয়তো এই সব গাজাখুরি গল্প দিয়েও কিছু দর্শক টানা যেত। কি আর করা, আগামীকাল শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠি বাড়ি যাব এটা নিয়েই পরিকল্পনা ঠিক করতে বসে গেলাম।
মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা....
শিলাইদহ কুঠিবাড়ি যাবার অনেক পথ আছে তবে শহর থেকে যাবার সহজ পথ হল রিক্সা করে বাজার ঘাট গিয়ে দুই টাকার ভাড়ায় ট্রলার দিয়ে গড়াই নদী পার তারপর ১৫ টাকায় রিক্সা বা ভ্যানে সোজা কুঠিবাড়ি। আর এই ১৫ টাকার পথ ৯ কি.মি. এর কম নয়। তবে সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা দেখতে চাইলে আপনাকে একটু কষ্ট করে রিক্সায় করে চৌড়হাস বাসস্ট্যান্ড এসে বাসে করে লাহিনীপাড়া মীর মশাররফ হোসেন ব্রীজের কাছে থামতে হবে তারপর পায়ে হেটে চলে যেতে পারবেন তাঁর বাস্তুভিটায়। বাংলার মুসলিম সাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম; “বিষাদ সিন্ধু”, “জমিদার দর্পণ” এর লেখকের বাসস্থান যেভাবে সংরক্ষণ করার কথা তার ছিটেফোঁটাও নেই সেখানে। বর্তমানে অন্যের আবাসস্থল এই জায়গায় শুধুমাত্র তাঁর সময়ে ব্যবহৃত পাতকুয়াটাই এখনো টিকে আছে আর স্থানীয় শিক্ষানুরাগী কিছু মানুষের সহায়তায় তার স্মৃতি রক্ষার্থে একটি প্রাইমারী ও মাধ্যমিক স্কুল নির্মাণ করা হয়েছে। স্কুল দুটিতে প্রবেশের মুখে ইটের নির্মিত কিছু কলামে তাঁর সাহিত্যের কিছু বিখ্যাত উক্তি লেখা আছে আর টিকে আছে উনার নিজ হাতে লাগানো আম গাছের কান্ডটা। সম্প্রতি সরকার অবশ্য স্কুলের কাছে মীর মশাররফ হোসেনের নামে একটি লাইব্রেরী নির্মাণ করে দিয়েছে। উনার স্মৃতির আর কোনো চিহ্নই সেখানে নেই। মীর মশাররফ হোসেন ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কবর রাজবাড়ি জেলায় অবস্থিত।
শিলাইদহ কুঠিবাড়ি....
মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা দেখা শেষ এবার যে পথে এসেছিলাম সেই পথ ধরেই বাসে করে আলাউদ্দিন মোড় নেমে ভ্যানে করে ১০ টাকা রিক্সা ভাড়ায় সোজা শিলাইদহ কুঠিবাড়ি। দেখার মত একটা জায়গা। সরকারী তত্ত্বাবধানে এখানকার কার্যক্রম পরিচালিত বলে জায়গাটা এখনো দেখার অবস্থায় টিকে আছে। ১০ টাকার টিকিটে যাদুঘর দেখা যায় তবে বাইরের এলাকাটা ঘুরতে কোনো টাকা খরচ করতে হয়না। বিশাল এলাকা জুড়ে দোতালা কুঠিবাড়িটি আসলেই দেখার মত। রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন সময়কালের কিছু ছবি, আর এখানে জমিদারি কার্যক্রম চালানোর সময়কার কিছু আসবাবপত্র দিয়ে পুরো দোতলা বাড়িটি সাজানো। আসবাব বলতে আছে কিছু আলমারি, বুকশেলফ, খাজনা আদায়ের টেবিল, শোয়ার খাট, পালকি আর নৌকার গুলুই। তবে যে জিনিসটা দেখে একটু অবাক হলাম তা হল উনার ব্যবহৃত টয়লেট দেখে, ওই সময়ে বাংলাদেশের এই জায়গায় তিনি আধুনিক কমোড ব্যবহার করতেন। তাঁর অনেক বিখ্যাত রচনা এই কুঠিবাড়ি এলাকায় বসে লেখা, কি জানি ওই কমোডে বসেও হয়তো তিনি অনেক বিখ্যাত পংতি রচনা করেছেন। শান বাধাঁনো পুকুর ঘাট, সাজানো বাগান, সবুজ গাছ-গাছালির ভিড়ে সময়টা ভালোই কেটে যায়; তবে আশেপাশে কোনো খাবারের দোকান নেই,সরকারী একটা ডাক-বাংলো আছে, বুকিং দিয়ে এলে ওখানে থাকার ব্যবস্থা আছে। জায়গাটা জনপ্রিয়, সেদিন অনেকেই এসেছিলেন এই কুঠিবাড়ি দেখতে। কুঠিবাড়ি দেখা শেষ এবার যাবার পালা। সহজ রাস্তা ধরে আমাদের আস্তানা যাবার পথ ধরলাম। ভ্যানে করে গ্রামের পথ দিয়ে যেতে ভ্রমণটাকে আরো উপভোগ্য মনে হয়।
রেনউইকের বাঁধ....
বিকালে গেলাম রেনউইকের বাঁধ। কুস্টিয়া শহরের কাছেই একটি চিনিকল আছে রেনউইক নামে, চিনিকলটা গড়াই নদীর তীরেই আর বাঁধটাও সেখানে তাই সেই নামেই বাঁধের নামকরণ। সুন্দর জায়গা। বিকালে ঘোরার জন্য এর চেয়ে ভালো জায়গা আর হতে পারেনা। বাঁধের উপর বসে নদীর বুকে সূর্য ডোবা, হিমেল বাতাস আর কপোত-কপোতীর আনাগোনা দেখে সময়টা ভালোই কেটে যায়।
ফেরা....
অনেক তো দেখা হলো, এবার ঢাকা ফেরার পালা। বন্ধুবর রানা জানালো বাংলাদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার তিন মাধ্যম ব্যবহার করে ঢাকা যাওয়া যায়, খরচ হবে অর্ধেক। হাতে যেহেতু সময় আছে হোক না আরেক অভিজ্ঞতা। কুস্টিয়া শহরেই রেলস্টেশন, সেখান থেকে ৪১ টাকার টিকিটে ট্রেনে করে গোয়ালন্দ ঘাট, তারপর পায়ে হাটা দূরুত্বে লঞ্চঘাট গিয়ে ১০ টাকা ভাড়ায় লঞ্চ দিয়ে নদী পার হয়ে পাটুরিয়া ঘাট এবং সবশেষে বাসে করে ঢাকা; ভাড়া সর্বোচ্চ ৮০ টাকা একদম ঢাকার গুলিস্তান পর্যন্ত। মাঝখানে রিক্সাটা যোগ করে নিলে আকাশপথটা ছাড়া বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার সবগুলো মাধ্যমে আপনার উঠা হয়ে যাবে।
ভ্রমনের সময়কাল-৬ জুলাই থেকে ৯ জুলাই, ২০১০
ভ্রমন সঙ্গী- সাইফ, রানা, জহরুল
(নিঝুম দ্বীপে এক লোকের সাথে পরিচয় হয়েছিল যিনি বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো জায়গা ঘুরে দেখেছেন। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এই যে আপনার বিশাল অভিজ্ঞতা তা কি কখনো লিখে রেখেছেন বা ছবির ফ্রেমে বন্দী করেছেন। উনি না সূচক জবাব দিয়েছিলেন। উনাকে উপদেশ দিয়েছিলাম এইসব ভ্রমনের অভিজ্ঞতা ক্যামেরায় যেমন ধরে রাখবেন তেমনি লিখেও রাখবেন, বই আকারে না হোক ব্লগে তো দিতে পারবেন। ইদানীং ব্যপারটা লক্ষ্য করলাম, আমি নিজে ছবি তুললেও ভ্রমনের কথাটা কোথাও লিখে রাখিনা। একসময় হয়তো ভ্রমনের স্মৃতিটা ঝাপসা মনে থাকবে কিন্তু লিখে রাখলেই তো সেটা সারাজীবন থেকে যাবে তাহলে আমি নিজেই আমার ভ্রমনের স্মৃতি গুলো লিখে রাখি না কেন? সেই ভাবনা থেকেই ভ্রমন বিষয়ক এটা আমার প্রথম লিখা।সামনে হয়তো আরো লিখব ইনশাল্লাহ। আজ এইটুকুই থাক।)
**আমি আশা করব লেখাটা আপনা্রা পড়বেন, প্রথম লেখা তো আপনাদের অনুপ্রেরণা ও তিরস্কার দুটোই দরকার আছে।**
ইমরানুল হক রিতুল
৩ আগস্ট, ২০১০